- ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ - https://universal24news.com -

অবশেষে জেনেছি মানুষ একা

অবশেষে জেনেছি মানুষ একা

ইউএনভি ডেস্ক:

পৃথিবীর সবচেয়ে সঙ্কটময় সময়ে প্রায় প্রত্যেক শিল্পীই নিজেদের শিডিউল সবই বাদ দিয়ে ঘরে বসে সময় কাটাচ্ছেন। সঙ্গনিরোধই যখন সময়ের জন্য সবচেয়ে জরুরি তখন শিল্পীরাও সবাইকে সেই সচেতনতার বার্তাই দিচ্ছেন।

সময়ের ব্যস্ত তারকারাও ভাবতে পারেননি এমন এক অখণ্ড অবসর তাদের জীবনে কোনোদিন আসবে। আর সেই তারকার নাম যদি হয় জেমস তবে তো কথাই নেই। এ বছর এপ্রিল থেকে ইউরোপ আমেরিকাসহ সারাবিশ্বের প্রায় ২২টি দেশে টানা ৭ মাসের একটা কনসার্ট ট্যুর ছিল তার। সে কারণে নিজের ঘর, স্টুডিও ফটোগ্রাফি মিস করবেন এমনটাই ভাবছিলেন জেমস। কিন্তু করোনা ভাইরাসের এই শঙ্কিত সময়ে সবার মতো এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রকস্টারেরও শিডিউল বাতিল করতে হয়েছে। পৃথিবী তার নিষ্ঠুর সময়কে অতিক্রম করছে।

সবার মনেই প্রশ্ন ঘরে বসে কী করছেন জেমস?

এ প্রসঙ্গে জেমস বলেন, ‘এখন সবচেয়ে বড় দায়িত্বই তো ঘরে থাকা। তাই ঘরে থাকছি। আর এমনিতেও সবাই জানে আমি কনসার্টের বাইরে অন্য সময় একেবারেই বের হই না। নিজের ফটোগ্রাফি, এডিটিংয়ের কাজ আর গিটার। এই নিয়েই স্বাচ্ছন্দ্য জীবন আমার। তবে প্রতিটি মানুষের সহজাত একটা প্রবৃত্তি থাকে। যখন থেকে মানুষ জানতে পারে, বুঝতে পারে যে তার নিষেধ আছে বাইরে যাওয়ার বা অন্যকিছুর। তখনই সেই নিষেধাজ্ঞার প্রতি তীব্র আকুলতা জন্মে! তখনই বন্দি মনে হয় নিজেকে। অথচ শো না থাকলে আমি এমনিতেই ঘরবন্দি মানুষ।’

ঠিক এ সময়ে অনেকেই আপনার গাওয়া ‘অবশেষে জেনেছি মানুষ একা’ গানটি শেয়ার দিচ্ছেন ফেসবুকে। এ প্রসঙ্গে কিছু শুনতে চাই।’

নগরবাউল বলেন, ‘এটা তো কবি আবুল হাসান বিখ্যাত কবিতার লাইন। আমার প্রিয় কবিদের একজন। আমি সেখান থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে সুর করেছি মাত্র। তবে এখন যে সময়টার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে মানুষ, সেই পরিস্থিতি তো কোনোদিন কল্পনাও করতে পারিনি আমরা কেউই। তাই কোনো কবিতাই হয়তো ঠিক এখনকার সময়ের দহনকে বুঝতে পারবে না। আমার মনে হয় সময়টা নিশ্চয়ই নিয়তির পরীক্ষার। হয়তো স্রষ্টা এ থেকেও ভালো কিছুরই জানান দিচ্ছেন।’

সোশ্যাল মিডিয়ায় সবার সঙ্গে যোগাযোগ কেমন হয় আপনার?

‘একেবারেই কম। মাঝে মাঝে ইচ্ছে হলে ছবি পোস্ট দিই। আমার খুব কাছের কজন বন্ধু রয়েছে তাদের সঙ্গে ফোনেই যোগাযোগ হয়। কথা হয়। তাই মেসেঞ্জারে খুব একটা অভ্যস্ত নই আমি। আর নিজের জন্য যা করি তা হলো গিটার প্লেইং। কোথায় যেন নিজের এক ধ্যান তৈরি হয় গিটারটা ধরলেই। এখন তো জ্যামিংও সম্ভব না যে অন্য সব মিউজিশিয়ানদের ডাক দেবো নিজের প্র্যাকটিস প্যাডে। তবে নিজের দুনিয়ায় গিটার থাকলে যেন আর কিছু লাগে না।’

এদেশের অগণিত মানুষের জীবনের কথা বলেছেন নগর বাউল জেমস তার অনবদ্য সুর আর গায়কীতে। সেটা লতিফুল ইসলাম শিবলীর লেখা ‘দিন রাত এখানে থমকে গেছে’ থেকে শুরু করে ‘সেলাই দিদিমনি’সহ একাধিক গান এদেশের গণমানুষের জীবনের কথা যেমন বলেছে। তেমনি ঝড় তুলেছে অবাধ তারুণ্যের। এ কারণেই গত কয়েক দশক ধরেই শীর্ষ জনপ্রিয়তায় তার ধারে কাছে ভিড়তে পারেনি অন্য কোনো শিল্পী।

গতবছর রকলিজেন্ড আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুর পর থেকেই যেন আরও খানিকটা নীরব-নিশ্চুপ হয়ে গেছেন আমাদের এই রক লিজেন্ড নগরবাউল জেমস। নিজের মতোই গড়ে নিয়েছেন সুর আর ফ্রেমের পৃথিবী। ছবি তুলছেন। সেটার সম্পাদনার কাজ করছেন। সেটা পোর্ট্রেট হোক বা ন্যাচার ফটোগ্রাফি। প্রতিটি কাজ যত্নের সঙ্গে নিজের ফোল্ডারে জমা হচ্ছে।শেষে বলেন,‘আবার দেখা হবে আমাদের। আবার হাসবো গাইবো একসঙ্গে।’