অবৈধ ইটভাটার জ্বালানিতে গাছ উজাড়


কলিট তালুকদার, পাবনা :
পাবনায় লাইসেন্স ছাড়াই অবাধে চলছে ইটভাটা। জেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা ৯২টি ইটভাটার মধ্যে ৭৬টিই চলছে অবৈধভাবে। কোন প্রকার লাইসেন্স ছাড়াই চলা এসব ইটভাটায় জ্বালানী হিসাবে কাঠখড়ি এবং ইট তৈরীতে ব্যবহার করা হচ্ছে ফসলী জমির মাটি। এতে একদিকে অবাধে নিধন হচ্ছে বৃক্ষ আর ধ্বংস হচ্ছে প্রকৃতিক পরিবেশ।

ইটভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে ফসলী জমি

পাবনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে জানা গেছে, জেলায় মোট ৯২টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ৭৬টির লাইসেন্স নাই। সুত্র জানায়, পাবনা সদর, সুজানগর ও চাটমোহর সহ বিভিন্ন উপজেলার গ্রামাঞ্চলের আবাসিক এলাকায় এবং ফসলি জমিতে প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে অবাধে গড়ে উঠছে ইটভাটা। এসব ইটভাটার অধিকাংশই স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্মিত গ্রামীণ সড়কের আশপাশে। এছাড়া বেশ কয়েকটি ইটভাটার আশপাশে রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র, ফসলী ক্ষেত, বসত বাড়ী, বাগান এবং জলাভূমি।

সরজমিন পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের বাঙ্গাবাড়িয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, জনাকীর্ন আবাসিক এলাকায় গ্রামের প্রধান সড়কের পাশেই আবাদি কৃষি জমির উপর স্থাপিত হয়েছে ইট ভাটা। ওই ভাটার পাশেই ব্যক্তি মালিকানাধীন বেশ কয়েকটি বাগান রয়েছে।

ইটভাটায় জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ

ভাটার এক কিলোমিটারের কম দূরত্বের মধ্যে রয়েছে পাবনা মেডিকেল কলেজ, পাবনা মানসিক হাসপাতাল ও শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দের আশ্রম। এছাড়াও রয়েছে একটি উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভাটা সংলগ্ন এলাকাবাসী জনসাধারণের শ্বাসকষ্ট, এ্যাজমা, হাপানী ও চোখের বিভিন্ন রোগ দেখা দিচ্ছে।

ইটভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোয়ায় ইতিমধ্যেই ফসলের উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। এছাড়া ফলজ বৃক্ষের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে। পাবনার সচেতন মহল পরিবেশ বিপর্যয় এর হাত থেকে রক্ষার জন্য অবিলম্বে অবৈধ ইটভাটাগুলি জরুরী ভিত্তিতে বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবী জানিয়েছেন।

এদিকে সুজানগর উপজেলার তাঁতীবন্দ ইউনিয়নের কামারদুলিয়া গ্রামের একই স্থানে ৩টি ইট ভাটার একটি উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুজিৎ দেবনাথ জানান প্রয়োজনীয় লাইসেন্স না থাকায় কেএসবি ব্রিকস্রে কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

পাবনা জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন জানান, লাইসেন্স ছাড়া ইটভাটা চলতে পারে না, অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে ভাটার মালিকদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান শুরু হয়েছে।


শর্টলিংকঃ