Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

অশিক্ষিত চালক ও মেকানিকরাই ট্রেনিং স্কুলের অধ্যক্ষ


বিশেষ প্রতিবেদক :

সরকারের বেঁধে দেয়া কোনো শর্ত না মেনেই রাজশাহীতে চলছে ড্রাইভিং ট্রেনিং স্কুল। এগুলোর মালিকদের কেউ ছিলেন ড্রাইভার কেউ বা মেকানিক। কারোরই নেই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সনদ কিংবা বিআরটিএ’র নিবন্ধন। এসব স্কুল থেকেই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন বিভিন্ন পেশাজীবী থেকে শুরু করে সরকারী বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরাও।

                                      সেবামূলক মোটর ড্রাইভিং ও মেকানিক স্কুলের ফিটনেসবিহীন প্রশিক্ষণ কার

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই বিনোদপুর বাজারের একটি ছাত্রাবাসের নিচতলায় ছোট এই কক্ষটিই হলো ফ্রেন্ডস মোটর ড্রাইভিং স্কুল। প্রায় ৪০ বছর আগে চালু করা এই স্কুলের মালিক আবুল কাশেমের শিক্ষাগতযোগ্যতার কোনো সার্টিফিকেট না থাকলেও তিনিই অধ্যক্ষ ও প্রশিক্ষক। দুটি ট্রেনিং কারেরই নেই ফিটনেস ও রুট পারমিট। রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ কত বছর আগে শেষ হয়েছে- সে খবর নিজেও রাখেন না তিনি। ফ্রেন্ডস মোটর ড্রাইভিং স্কুলের অধ্যক্ষ আবুল কাশেম বলছেন, এতো বছর ধরে তিনি স্কুলটি পরিচালনা করছেন, কিন্তু কেউ কোনো কাগজপত্রের খোঁজ নেয় নি। বিআরটিএ কখনো তলব করে নি। তাই এভাবেই চলছে।

একই অবস্থা নগরীর ফায়ার সার্ভিস মোড়ের সেবামূলক মোটর ড্রাইভিং ও মেকানিক স্কুলেরও। ছোট্ট এক কক্ষের দোকানের মধ্যেই চলে কার‌যক্রম। মালিক আবদুর রশিদ মেকানিকের অভিজ্ঞতা দিয়েই সেজেছেন স্কুলের অধ্যক্ষ। কয়েক যুগ ধরে চলছে এই ড্রাইভিং স্কুলটি। এখান থেকেই নাকি দক্ষ চালক হয়ে বেরিয়ে গেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত অধ্যাপক, চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল কিংবা বিদেশগামী থেকে শুরু করে সরকারী বাহিনী বহু সদস্য-এমন দাবি সেবামূলক মোটর ড্রাইভিং ও মেকানিক স্কুলের অধ্যক্ষ আবদুর রশিদ

             রাজশাহী মোটর ড্রাইভিং ও মোটর মেকানিক ট্রেনিং স্কুলের ফিটনেসবিহীন লক্কর-ঝক্কর প্রশিক্ষণ কার

এদিকে, ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠা হলেও রাজশাহী মোটর ড্রাইভিং ও মোটর মেকানিক ট্রেনিং স্কুলটি সরকারের অনুমোদন পেয়েছে ২০১১ সালে। খাতা-কলমে সরকারী বৈধতা থাকলেও কোনো শর্তই মানে নি তারা। নগরীল বর্ণালী মোড় এলাকায় অবস্থিত রাজশাহী মোটর ড্রাইভিং ও মোটর মেকানিক ট্রেনিং স্কুলের প্রশিক্ষক মো. আবু বকর বলেন, সরকারী শর্তাবলী এত কঠিন তা মেনে ড্রাইভিং স্কুল করা সম্ভব নয়। তবে তারা চেষ্টা করছেন।

নিয়ম অনুযায়ী ড্রাইভিং ট্রেনিং স্কুল চালু করতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি বা বিআরটিএ’র অনুমোদন নেয়া বাধ্যতামূলক। এজন্য থাকতে হবে- প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব জায়গা, কমপক্ষে মাধ্যমিক পাস করা নিবন্ধনধারী প্রশিক্ষক ও ইন্সট্রাক্টর, প্রশিক্ষণ উপযোগী গাড়ী এবং যথাযথ উপকরণ । কিন্তু এসবের কোনোটিই না থাকলেও দিব্যি চলছে ট্রেনিং স্কুলগুলো। এসব ট্রেনিং স্কুলের ভর্তি ফি হিসেবে নেয়া হয় তিন হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা। তবে গত ৩/৪ দশক ধরে চলা অবৈধ এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেয় নি বিআরটিএ।

তবে বিআরটিএর রাজশাহী সার্কেলের সহকারী পরিচালক এএমএম কামরুল হাসান বলছেন, অবৈধভাবে চলা ট্রেনিং স্কুলগুলোর খবর জানা নেই। তবে অবৈধ ট্রেনিং স্কুলগুলোর  বিরুদ্ধে শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

 

 


Exit mobile version