আইনজীবীকে পাল্টা লিগ্যাল নোটিশ অধ্যাপক সারওয়ারের


নিজস্ব প্রতিবেদক :

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহানের বিরুদ্ধে নতুন করে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করছে একটি মহল। তার ইমেজ নষ্ট করার চেষ্টা মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে তারা।  কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ না পেয়েও তারা অপপ্রচার শুরু করেছে। তবে  অসত্য তথ্য দিয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর অভিযোগে পাল্টা আইনজীবীকে সতর্ক করে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন  অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান।

অধ্যাপক চৌধুরী সাওয়ার জাহান

ঢাকায় জমি  কেনায় অনিয়মে ব্যবস্থা নিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) উপাচার্যকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান হাইকোর্টের আইনজীবী গোলাম রব্বানী।  তবে সোমবার  অধ্যাপক জাহানের পক্ষে এই নোটিশ পাঠান রাজশাহী জজকোর্টের আইনজীবী নুর-এ-কামরুজ্জামান।

নোটিশে বলা হয়, উক্ত বিষয়ে সংশ্লিষ্ট না হয়েও ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল এবং একটি অসৎ মহলের ইশারায় অধ্যাপক সারওয়ার জাহানকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে মিথ্যা ও বেআইনি তথ্য পরিবেশন করে আইনজীবী গোলাম রব্বানী নোটিশ পাঠিয়েছেন। এর আগে করা এক পিটিশনে আদালতের আদেশে বিষয়টি দুদকের তদন্তাধীন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের করা তথ্যানুসন্ধান কমিটিও বাড়ি কেনায় আর্থিক অনিয়ম খুঁজে পায় নি।

নোটিশে বলা হয়, আদালতে বিচারাধীন বিষয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য ছড়ানো প্রচলিত আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সদ্য সাবেক উপাচার্য এম আব্দুস সোবহানের দুর্নীতি, অনিয়ম ও বিদায় কালে ১৩৭ জনের গণনিয়োগ দিয়ে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের তদন্তের মুখোমুখি হওয়ার বিষয়টি আড়াল করতেই এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গত ৭ মে রাবি উপাচার্যকে পাঠানো নোটিশে বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি ভবনের জমি ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় অধ্যাপক সারওয়ার জাহানসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ও ‘আত্মসাৎকৃত’ সাড়ে ৭ কোটি টাকা ফেরত নিতে বলা হয়। তবে নথিপত্র ও তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বাড়ি কেনায় অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ নেই। নোটিশটি এমন সময় পাঠানো হয় যখন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য শূন্য এবং খুব শীঘ্রই নতুন উপাচার্য নিয়োগ হবে। ক্যাম্পাসের একাধিক সূত্র বলছে , গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে  অধ্যাপক সারওয়ার জাহানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়ানোর জন্য অসত্য তথ্যে এই নোটিশ পাঠানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, তৎকালীন উপাচার্য মুহম্মদ মিজানউদ্দীন প্রশাসনের মেয়াদ শেষের দিকে অতিথি ভবন ক্রয়ে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।  আসাদুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি রিট পিটিশন এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে দুদক একটি তদন্ত করে যা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। সে বছরই এম আব্দুস সোবহান উপাচার্য হয়ে “তথ্য অনুসন্ধান কমিটি” গঠন করেন। সেই কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক গোলাম কবীর জানান, বাড়ি কেনায় আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।

অধ্যাপক গোলাম কবির বলেন, অতিথি ভবনের জমিটিতে অংশীদারিত্ব নিয়ে সমস্যা ছিল। প্রচলিত বিধি মেনে ক্রয় করা হয় নি। ফলত জটিলতার সৃষ্টি হয়। তবে আর্থিক অনিয়ম বা অর্থ আত্মসাতের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নি। আমরা সেভাবেই রিপোর্ট জমা দিয়েছি।

নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, ২০১৫ সালে তৎকালীন উপ-উপাচার্য সারওয়ার জাহানের নেতৃত্বে অতিথি ভবন ক্রয়ের কমিটি করা হয়। পত্রিকায় উন্মুক্ত দরপত্র প্রকাশের মাধ্যমে নির্বাচিত সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ কিছু শর্ত পূরণ করতে পারেনি। ফলে কমিটি দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করা হয়। কয়েক ধাপে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ করে ক্রয় কমিটি।


শর্টলিংকঃ