আগেও ধর্ষণ করেছিলেন ফাদার প্রদীপ গ্যাগরী


নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর মন্ডুমালার সাধু জন মেরী ভিয়ান্নী গির্জায় কিশোরীকে তিনদিন আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন প্রদীপ গ্যাগরী নামের এক  ধর্মযাজক। ধামইহাটের বেনিদুয়ারে দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় এই ধর্মযাজকের বিরুদ্ধে ষষ্ঠ শ্রেণির আরেক কিশোরীকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। ফাদার প্রদীপ গ্যাগরীর বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার ভবানীপুর গ্রামে। তার বাবার নাম প্যাট্রিক গ্যাগরী।

সাধু জন মেরী ভিয়ান্নী গির্জা

ধর্ষণের শিকার হওয়া ওই কিশোরীর এক আত্মীয় ইলুয়াস মরমু ইউনিভার্সাল নিউজ-কে জানিয়েছেন, ‘  নওগাঁর ধামইহাটের বেনিদুয়াররে স্যাক্রেড হার্ট অফ জিজাস চার্চ পরিচালিত হোস্টেলে থাকা অবস্থায় ২০১০ সালে আমার আত্মিয়াকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন ফাদার প্রদীপ। আমরা এমন অপকর্মের প্রতিবাদ জানিয়ে বিচার চাইলে চার্চ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি মীমাংসা করে দফারফা করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। পরে তারা বিভিন্নজনকে ম্যানেজ করে অত্যান্ত গোপনে বিষয়টি ধামচাপা দেয়।  হোস্টেলে থাকা অনান্য ছাত্রীরাও বিষয়টি জানত কিন্তু ভয়ে তারাও পরে আর মুখ খোলেনি।  তিনি আরও জানান,  এমন অপকর্মের যদি সেই সময়ে বিচার করা হত তাহলে আর এমন ঘটনা ঘটত না’।

অভিযুক্ত ফাদার প্রদীপ গ্যাগরী ২০০৯ সালে ফাদার হিসেবে নিয়োগ পেয়ে নওগাঁর স্যাক্রেড হার্ট চার্চে যোগদান করেন। চার্চের হোস্টেলে ধর্ষণের অভিযোগ আসার পরে তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে পবিত্রকরণের জন্য বিশপ হাউজে সংযুক্ত করা হয়।

 

ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ফাদার প্রদীপেরর ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজশাহী অঞ্চলের খ্রিস্টীয় ধর্মাধ্যক্ষ গ্রাভাস রোজারিও বলেন, আসলে আমরা বুঝতে পারছিনা কার কথা বিশ্বাস করব। অনিত অভিযোগের ব্যপারে ফাদার নিজেকে নির্দোষ দাবী করেছে। বিষয়টি নিয়ে যেহেতু আইন – শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে সুতারাং অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হলে দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিচার হবে। তবে ২০১০ সালের ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন তিনি।

গির্জায় কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় ফাদার গ্রেপ্তার

এর আগে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে মন্ডুমালার সাধু জন মেরী ভিয়ান্নী গির্জার পাশে ঘাস কাটতে গিয়ে নিখোঁজ হয় এক তরুণী। পরে এ নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়রি করেন নিখোঁজের বড়ভাই। পরে গির্জায় ফাদারের কক্ষ থেকে ভুক্তভোগী ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে পুলিশ।

এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে প্রভাবশালীদের নিয়ে গির্জায় সালিশ বৈঠক করেন ধর্মীয় নেতারা। সেখানে ওই কিশোরীকেই ঘটনার জন্য দোষারোপ করেন। পরে তার পরিবারকে সমাজচ্যুত করার হুমকি দেন প্রভাবশালীরা। সেখানে ফাদার প্রদীপকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন ধর্মীয় নেতারা।  গ্রেফতার এড়াতে প্রদীপ গ্যাগরী বিশপ হাউসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। খবর পেয়ে সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব -৫। এরপর তাকে তানোর থানায় সোপর্দ করা হলে পরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।

আরও পড়তে পারেন গির্জায় কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় ফাদার গ্রেপ্তার


শর্টলিংকঃ