Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

আন্দোলনের নামে সহিংসতা হলে কঠোর জবাব: ওবায়দুল কাদের


ইউএনভি ডেস্ক:

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের অজুহাতে কোনো রকম সহিংসতার চেষ্টা করা হলে কঠোর জবাব দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, শান্তিপূর্ণ কোনো সমাবেশে সরকার বাধা দেবে না। কিন্তু আন্দোলন, সমাবেশ ও বিক্ষোভের মাধ্যমে সহিংসতার উপাদান যুক্ত হলে এর দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। তবে রাজনৈতিকভাবে আন্দোলন হলে সেটি রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করা হবে।

শনিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভা শেষে প্রেসব্রিফিংয়ে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ঢাকা মহানগরের অন্তর্গত দলীয় সংসদ সদস্য এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী মেয়রদের এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি আহ্বান প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলন তারা করে করুক। নীতিগত প্রশ্ন করছি, যাদের বিবেক আছে তাদের কাছে বিষয়টা আপিল করছি, আন্দোলনটা তারা কার বিরুদ্ধে করছে? খালেদা জিয়াকে তো সরকার কারান্তরীণ করেনি, এই সরকার তার বিরুদ্ধে মামলাও দেয়নি।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে এ মামলা হয়েছে, বিচারও হচ্ছে উচ্চ আদালতে। এটা রাজনৈতিক মামলাও নয়, এটা দুর্নীতির মামলা। সরকার রাজনৈতিক কারণে তাকে জেলে দেয়নি।তিনি বলেন, কাজেই তার মুক্তির বিষয়ে সরকারের রাজনৈতিক বিবেচনা করার এখানে কোনো সুযোগও নেই।

তারা যদি মনে করেন, আন্দোলন করে সরকারকে বাধ্য করবেন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে, তাহলে তারা বাধ্য করতে পারে আদালতকে। আদালতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, আন্দোলন ঘোষণা- তারা কেন করছে? এটা কোন গণতন্ত্র?

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা আন্দোলনের ডাক দিতে পারেন। কিন্তু সরকার হিসেবে আমাদের জনগণের জানমাল রক্ষার দায়দায়িত্ব আছে।

ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট জালিয়াতির কোনো সুযোগ ছিল না। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে।

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দাবি প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, সিটি নির্বাচনের দিন তাদের ভোটার কোথায় ছিলেন? নির্বাচনের আগে দুই সিটির বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের সঙ্গে তারা জমায়েত ও মিছিল করেছেন। নির্বাচনের দিন তাদের এজেন্ট পর্যন্ত কেন্দ্রে আসেননি। তাহলে ভোটকেন্দ্র পাহারা দিলেন কীভাবে? তাদের যে ভোট, সেটি কেন পড়ল না? সেই ভোট কেন তারা দিল না, বাধা কোথায় পেয়েছে?

ঢাকা সিটি নির্বাচনে ভোটার কম আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে একটি বিষয় হলো ছুটির কারণে অনেকে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন। পরিবহনের একটি বিষয় আছে। আর আমাদের সংগঠনেও দুর্বলতা আছে, যার কারণে ভোটার নিয়ে আসার বিষয়টা যতটা গুরুত্ব দেওয়ার দরকার ছিল তা দেওয়া হয়নি। সবাই ভাবছে ভোটাররা তো আসবেই, তাদের যে নিয়ে আসতে হবে সেখানে কিছুটা কম গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

মতবিনিময় সভার সিদ্ধান্ত তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা মহানগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা জমা দেওয়ার পর দলের পরবর্তী কাজ হবে, তৃণমূলের মূল পর্যায় থেকে সংগঠন গড়ে তোলা হবে। বৈঠকে এমনটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিপক্ষের আন্দোলন ঠেকানোর জন্য দলকে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী করা দরকার। এ ব্যাপারে বৈঠকে সবাই একমত হয়েছেন। বৈঠকের কিছু সিদ্ধান্ত দলের কার্যনির্বাহী সভায় রিকমেন্ডেশন আকারে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।

সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য মুলংল বোস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন, শাহাবুদ্দিন ফরাজী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণ সিটির নবনির্বাচিত মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসসহ দলীয় সংসদ সদস্যরা। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরাও সভায় যোগ দেন।

আরো পড়তে পারেন:করোনা ঠেকাতে রোবট নামালো চীন


Exit mobile version