‘আবু ভাই’ র শেষ স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল


‘আবু ভাই’ পুরো নাম আবু আহমেদ, মৃত্যুর আগে তার শেষ ইচ্ছা ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও ‘আবুর ক্যান্টিন’ চালু করা। ‘আবুর ক্যান্টিন’র ইতিহাসটুকু ভবিষ্যতের জন্য রেখে যেতে চেয়েছিলেন। আশঙ্কা করেছিলেন, হয়তো তা আর সম্ভব হবে না। তার সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। অধরাই থেকে গেল তার শেষ ইচ্ছা-স্বপ্ন। না ফেরার দেশে চলে গেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রিয় মুখ ‘আবু ভাই’।

 ‘আবু ভাই’ র শেষ স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে নগরীর মতিহার থানার হনুফার মোড় এলাকায় নিজ বাড়িতে তিনি মৃত্যুবরণ করেনআবু ভাই । বাদ আছর তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। তার মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

৭৬ বছর পেরোনো আবু আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। ডায়াবেটিস, অ্যাজমা, হাইপ্রেসার, কিডনিসহ নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় সর্বশেষ ১১ দিন ধরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বাড়িতে নিয়ে আসা হয় তাকে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে আবু আহমেদের ছেলে মো. সেলিম বলেন, শুক্রবার সকালে হঠাৎ করে বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তার পাশে গেলে আমাকে তার পা-টিপে দিতে বলেন। তখন তিনি জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছিলেন। এর কিছুক্ষণ পরেই আমার চোখের সামনে বাবা মারা যান।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে একটি পরিচিত নাম ছিলেন আবু আহমেদ। সবাই ভালোবেসে ডাকেন ‘আবু ভাই’। বিশ্ববিদ্যালয়ের থাকাকালীন তিনি সত্তর, আশি, নব্বই দশকের আন্দোলনের সাক্ষী হয়ে আছেন। চোখের সামনে দেখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা আন্দোলনের উত্থান ও পতন। শুধু আড্ডাই নয়, শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক আলাপ-আলোচনা ও পরিকল্পনার অন্যতম কেন্দ্র ছিল তার পরিচালিত ‘আবুর ক্যান্টিন’। ২০১৫ সালে ক্যান্টিন বন্ধ হয়ে যায়।

তিনি শুধু ক্যান্টিন বা খাবারের জন্য পরিচিত ছিলেন না। একজন উদার মানুষও ছিলেন। আবু ভাই শিক্ষার্থীদের সহায়তা করেছেন নানাভাবে। আর্থিক সংকট থাকলে শিক্ষার্থীদের বিনা পয়সায় খাইয়েছেন। ছাত্র রাজনীতিতে জড়িত শিক্ষার্থীদের প্রিয় পাত্র ছিলেন এ মানুষটি। তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সাহায্য করতেন নানাভাবে।

আরও পড়ুন  মহানায়িকা চলে যাওয়ার অর্ধযুগ


শর্টলিংকঃ