Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

আমতলীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে ৩ গ্রাম প্লাবিত


ইউএনভি ডেস্ক :

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর তৎসংলগ্ন পায়রা নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি তিন ফুট বেড়েছে। উপকূলীয় অঞ্চল আমতলী-তালতলীর নিম্নাঞ্চল এবং আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের পশুরবুনিয়া এলাকার নতুন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে তিন গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। তলিয়ে গেছে ঘর-বাড়ি ও পুকুর।

আজ রোববার দুপুরে বাঁধ ভেঙে যায়। তৎক্ষণাৎ খবর পেয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারেক হাসান ও সিপিপির টিম লিডার মো. রিপন মুন্সিসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় উপজেলা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। কিন্তু সর্বশেষ বেলা চারটা পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রে তেমন মানুষ যায়নি বলে জানান, সিপিপির টিম লিটার মো. রিপন মুন্সি।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমাল পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। রোববার সন্ধ্যা নাগাদ উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে। পায়রা সমুদ্র বন্দর এলাকায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে বলে জানান সিপিপির সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান।

স্থানীয় বাসিন্দা ইসাহক মুসুল্লি বলেন, উপকূলীয় অঞ্চল আমতলী-তালতলীতে ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। সমুদ্র বেশ উত্তাল রয়েছে। বঙ্গোপসাগর তৎসংলগ্ন পায়রা নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে তিন ফুল পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের পশুরবুনিয়া এলাকার ৪০ মিটার নতুন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করে ঘোপখালী, উত্তর ঘোপখালী ও পশুরবুনিয়া গ্রাম তলিয়ে গেছে। ওই তিন গ্রামের মানুষের ঘর-বাড়ি ও পুকুর পানিয়ে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিন শতাধিক পরিবারের ঘর-বাড়ি পানির নিচে রয়েছে। তাঁরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাঁদের মধ্যে আজ দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য বশির হাওলাদার খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী (পাউবো) প্রকৌশলী মো. রাকিব মিয়া জানান ভাঙা বাঁধ সংস্করণে পাউবো কাজ শুরু করেছে। তিনি বলেন, পায়রা নদীতে তিন ফুট পানি বেড়ে বাঁধ ভেঙে গেছে।ব্যবসায়ী ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. কালাম হাওলাদার বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ না থাকায় গাজীপুর বন্দর পানিতে তলিয়ে গেছে। এত ব্যবসায়ীদের বেশ ক্ষতি হয়েছে।

পশুরবুনিয়া গ্রামের আব্দুর রশিদ তালুকদার, মন্নান ফকির ও শাহিনুর বেগম জানান, নতুন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে পানিতে সব তলিয়ে গেছে। রান্না করতে পারেননি তাঁরা। ইউপি সদস্য খাবার দিয়েছেন। ওই খাবার খেয়েছেন। রাতে কি হয় বলতে পারেন না তাঁরা। দায়সারাভাবে বাঁধ নির্মাণ করায় অল্প দিনের মধ্যেই ভেঙে গেছে বলেও অভিযোগ তাঁদের।

তালতলীর গাবতলী আবাসনের ছত্তার আকন বলেন, ‘জোয়ারের পানিতে ঘর-বাড়ি তলিয়ে গেছে। ছেলে মেয়ে নিয়ে রাস্তায় আছি। দুপুরে খাবার খেতে পারি নাই। রাতে পানিতে কি হয় আল্লাই যানে।’

তালতলী ইউএনও সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, ‘উপজেলা অধিকাংশ আশ্রয়ণ কেন্দ্র অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ওই সকল আশ্রয়ণ কেন্দ্র থেকে অন্তত ৫০০ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে এনেছি। আরও আনতে মাঠে কাজ করছি।’

আমতলী ইউএনও মুহাম্মদ আফরাফুল আলম বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় যথেষ্ট প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ১০১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পানি বৃদ্ধি পেয়ে আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভাঙা এলাকা পরিদর্শন করেছি। মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসতে কাজ করছি।’


Exit mobile version