ইবি ছাত্রলীগের অডিও ফাঁস, ১০ কোটি টাকার গাঁজা!


ইবি সংবাদদাতা:

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সাথে সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপসম্পাদক জুবায়ের রহমানের কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ৪ মিনিট ৯ সেকেন্ডের অডিওটিতে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য। সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের অর্থ উপার্জনের নানা তথ্য উঠে আসে তাদের কথায়। এসেছে আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুল আলম হানিফসহ অন্য নেতা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রসঙ্গও।

ছবি: প্রতীকী

বিভিন্ন ফেসবুক একাউন্ট থেকে প্রকাশ করার পরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় অডিওটি।

অডিওতে ইবি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা হালিম ১০ কোটি টাকা আয় করেছেন বলে রাকিবকে জানায় জুবায়ের। এই টাকা থেকে দুই কোটি টাকা ভাগ পেয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের একান্ত সচিব রাজু- এমন কথাও বলতে শোনা যায় জুবায়েরকে। অডিওতে রাকিবকে তার পদ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দিতেও বলেন জুবায়ের।

জুবায়ের: আরাফাতের (ইবির সাবেক ছাত্রলীগ নেতা) কোন ছেলে-পেলের গায়ে হাত দেব না। আরাফাতের যে কটা কাজের ছেলে-পেলে আছে, যারা গাঁজা খায় তাদের গাঁজা খাওয়ার টাকা দিতে হবে। যারা একটু মাল খায়, তাদের মাল খাওয়ার টাকা দিতে হবে। যারা হলের সুবিধা চায় তাদের হলে সুবিধা দিতে হবে। কিন্তু সেই কাজটা

রাকিব: তাইলে আমি এখন কী করব? আমি এখন রাজু ভাইয়ের কাছে যাব?

জুবায়ের: রাজু ভাই তোরে মেনে নিবে না।

রাকিব: কেন?

জুবায়ের: এই হলো মূল কথা। তোর একটাই কাজ পদত্যাগ করা।

রাকিব: রাজু (সাবেক ছাত্রলীগ নেতা) ভাই কী চায়?

জুবায়ের: ‎আমি ঐডা জানি না। কমিটি ভাইঙা দিতে কইছে। হালিম ও শাহীনের (সাবেক ছাত্রলীগ নেতা) কাছ থেকে টাকা খেয়েছে না রাজু। এই ক্যাম্পাস থেকে আট, দশ কোটি কামিয়েছে হালিম। ঐখান থেকে দুই কোটি খাইছে না রাজু। তুমি বুঝো না রাজনীতি? তুমি যদি আমারে দুই কোটি টাকা দাও, তুমি আমারে মাইরা মাডার করলেও আমি তোমার কথা শোনব। আমি শিবির মারতাম। মেলা আগেত্তে আইজকের না সাইফুলের থে। মনে কর তোরে চাকরি দিলাম। বিশ লাখ পেলাম, চলে গেল পাঁচ লাখ। মনে করো গিভ এন্ড টেক কোন প্রমাণ নাই। দিছিস বিশ লাখ তুই আমারে? কোন প্রমাণ নাই রেকর্ডিংও নাই বাল ছিড়তে পারবি তুই আমার? করার কিছু আছে? তুই পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে চইলা যা। তোরে ভালো কিছু পদ দেবনে। আমার ভালো লাগে না ওগুলো। তোরে নিয়ে ভাবতে আর ওগো নিয়ে ভাবতে আর ভালো লাগে না। আমি যে তোর রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করে দিলাম, তুই আমার কথা কখনো শোনিসনি, গুরুত্ব দিসনি। তোর রুমত্তে আমার সরাই দিছিস, আমার খারাপ লাগছে।

তুই তুহিনের কথা শোনলি।……… আমারে তো কোনদিন আরাফাতেরা ভালোবাসেনি। আজগে ভালোবাসে আমি রাজনীতি করি তাই। আমারে ইউজ করে। এখনো ইউজ করতেছে অস্বীকার করার কিছু নেই।

রাকিব: আমি কী তোর সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করছি?

জুবায়ের: ‎খারাপ ব্যবহার করিসনি। তোরে খারাপ বানানো হয়েছে মেইনলি। আব্দুস সোবহান গোলাপ ফোন দেয় হানিফ ভাইরে। কার জন্য ফোন দেয়? আমি মাডার হয়ে যাই… কালুর ছেলে-পেলের হাতে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমার জন্য ফোন দেয় এসপি তানভীরকে……. এই কাহিনী জানিস? তোরে কোনদিন কইছি আমি বোকা ? তুই কী মনি করিস আরাফাত, খসরুর ভরসায় আমি ঢাকায় চোষে বেড়াই? তোর মনে হয় তাই? খসরু, আরাফাত আমার টাকা….? টাকা দেয় আমার কাকা আবু বকর হোসেন জামাল। কালকেও পাঁচ হাজার টাকা লাগিছে। আমি জানি আমি থাকলে তুই ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারবি। এই বিশ্বাস আমার আছে বন্ধু কিন্তু আমি মাডার হয়ে যাব বন্ধু। আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাব-বউ, বাচ্চা আছে বুঝছিস। নাইলে মনে কর হানিফ আবার মামলা টামলা দিয়ে…..বুঝছিস?। তুই কী চাস আমি মাডার অইয়া যাই? আমি তোরে কথা কইলে, বাস্তব কথা কইলে তুই বিশ্বাস করবি? মনেত্তে কতা কইলে, আমি কতা কইলে তোর চোখে পানি চইলা আইব। আবার বোকের ভেতর অনেক যন্ত্রণা আছে। আমার যন্ত্রণার চেয়ে আমার বোকে অনেক অভিমান। আমার দুঃখ কষ্ট দেখার, আল্লাহ ছাড়া কেউ দেখে না সত্যি কথা বললাম। লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা আরাফাতের কাছ থেকে নিয়ে একটা টাকাও দেয় নাই। আমি জানি যে কোন জায়গা থেকে টাকা নেচ্ছে, আইসতেছে।

এ বিষয়ে ইবি ছাত্রলীগের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপসম্পাদক জুবায়ের রহমান বলেন, আমাকে রাকিব প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে এসব কথা বলিয়েছে এবং একটি খাতায় লিখে নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের দোকানের পেছনে বসে আমাকে দিয়ে এসব কথা বলিয়ে নেন রাকিব। আমি প্রথমে এসব কথা বলতে অস্বীকৃতি জানালে আমাকে গুম করার হুমকিও দেন। পরে বাধ্য হয়ে আমি এসব কথা বলি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘আমাদের দুজনের মধ্যে কথা হয়েছে। কিভাবে বাইরে আসলো আমার জানা নেই। প্রতিনিয়তই আমাকে চাপের মুখে থাকতে হচ্ছে। বিদ্রোহী নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে আমাকে নিয়ে একের পর এক সমস্যা করেই চলেছে


শর্টলিংকঃ