- ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ - https://universal24news.com -

ঈদ উপলক্ষে গবাদি পশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত যশোরের খামারিরা


আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে গবাদি পশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত যশোরের খামারিরা। এবার জেলায় প্রায় সত্তর হাজার গরু, ছাগল ও ভেড়া প্রস্তুত করা হচ্ছে- যা চাহিদার তুলনায় দশ হাজার বেশি।

ক্ষতিকর হরমোন কিংবা ইনজেকশনের ব্যবহার ছাড়াই দেশীয় পদ্ধতিতে গবাদি পশু পালন করছেন খামারিরা। এবার পশুর ভালো দাম পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছেন খামারিরা। ন্যায্য দাম নিশ্চিতে ভারতীয় গরু আমদানি বন্ধের দাবি তাদের। ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ হলে খামারিরা ভালো দাম পাবেন, পালনে উদ্বুদ্ধ হবেন বলে তারা জানান।

জেলা প্রাণিসম্পদ দফতর সূত্র জানায়, কোরবানি উপলক্ষে যশোরে ১০ হাজার ৮২৭টি খামারে ৭০ হাজার ৬২৪টি গরু ও ছাগল মোটাতাজা করা হচ্ছে। এরমধ্যে গরু ৩১ হাজার ৬২২টি ও ছাগল-ভেড়া রয়েছে ৩৯ হাজার দুটি। এবার জেলায় চাহিদা রয়েছে ৬০ হাজার গরু, ছাগল ও ভেড়া। সে হিসাবে জেলায় প্রায় ১০ হাজার পশু বেশি মজুদ রয়েছে। জেলার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলায় এই পশু বিক্রি সম্ভব হবে। ভালো দামের আশায় বুক বেঁধেছেন খামারিরা।

মণিরামপুরে ইত্যা গ্রামের বাসিন্দা ইয়াহিয়া মোল্যা জানান, ৪৫ হাজার টাকায় তিন বছর আগে হলেস্টিয়ান জাতের একটি গরু কিনেছিলাম। গত বছর এর দাম সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা উঠেছে, কিন্তু বিক্রি করিনি। ঢাকার একটা পার্টি (গরু ব্যবসায়ী) সাড়ে আট লাখ টাকা দাম বলেছে। এবার গরুটির দাম চাচ্ছি ১২ লাখ টাকা। ওই দামে বিক্রি করতে পারলে ক্রেতাকে খুশি হয়ে পালসার মোটরসাইকেল উপহার দেব।

তিনি আরও জানান, গরুটির বয়স তিন বছর ১১ মাস। শরীরের দৈর্ঘ্য ১০ ফুট, প্রস্থ ৬ ফুট। এর ওজন প্রায় ২০ মণ। ষাঁড়টির কাঁচা ঘাস, খৈল, গমের ভুসি এবং চালের পালিশ (ধান ভাঙানোর সময় চালের গায়ে থাকা ভিটামিনসসৃদ্ধ গুঁড়ো) নিয়মিত খাওয়ানো হয়।

নিয়মিত গোসল করানো হয়। প্রতিদিন প্রায় ২০০ টাকা খরচ হয়। যশোর সদর উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের শরিফুল ইসলাম জানান, একটি গরুর জন্য দিনে ১৩৫ টাকা খরচ হয়। প্রতিদিন খাবার হিসেবে খৈল, ভুসি, কুড়া, ফিড ও কাঁচা ঘাস দিতে হয়।

তিনি আরও বলেন, এ বছর ১২টি গরু মোটাতাজা করছেন। মানভেদে প্রতিটি গরুর দাম ৫০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত হবে। গরু বিক্রি করে এবার লাভের আশা করছি।

একই গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভারতীয় গরুর আমদানি না থাকলে খামারের গরুর দাম বেশি পাওয়া যাবে। ভালো দাম পেলে দেশি খামারিরা আগ্রহী হবেন। ভারতের ওপর নির্ভর করতে হবে না।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ভবতোষ কান্তি সরকার জানান, জেলায় এবার কোরবানির উদ্বৃত্ত পশু রয়েছে। জেলার চাহিদা পূরণ করে অন্যান্য এলাকায় জোগান দেয়া সম্ভব হবে। পশুর শরীরে যাতে ক্ষতিকর ইনজেকশন পুশ না করতে পারে সেদিকে আমরা নজর রাখছি। একই সঙ্গে খামারিদেরও উদ্বুদ্ধ করছি। ভারতীয় গরু আসা বন্ধ হলে দেশীয় খামারিরা লাভবান হবেন।