উপনির্বাচন : আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ


ইউএনভি ডেস্ক:

শূন্য হওয়া পাঁচটি সংসদীয় আসনে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। দলের মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রের নজর কাড়ার চেষ্টায় আছেন তারা।

উপনির্বাচন : আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ
উপনির্বাচন : আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ

আলোচনায় আগের মনোনয়ন পাওয়া নেতাদের পরিবারের এক বা একাধিক ব্যক্তির নাম রয়েছে।এছাড়া গত নির্বাচনে মনোনয়নবঞ্চিত ত্যাগী কয়েকজন নেতার পাশাপাশি বিভিন্ন খাতে বিশেষ অবদান রাখা কয়েকজন তারকা ব্যক্তির নামও রয়েছে আলোচনায়।

আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে দলের মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে মনোনয়ন প্রত্যশীদের সাক্ষাৎকার নিয়ে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। জানা গেছে, কারা পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন, তা নিয়ে নানা হিসাব করছেন আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। এক্ষেত্রে জনমত জরিপে এগিয়ে থাকা নেতারা প্রাধান্য পাবেন।

সম্প্রতি চার জন সংসদ সদস্য মারা যাওয়ায় চার সংসদীয় আসন শূন্য হয়। সেগুলো হলো বগুড়া-১, যশোর-৬, গাইবান্ধা-৩ এবং বাগেরহাট-৪। এছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য ঢাকা-১০ আসন থেকে পদত্যাগ করেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

এদিকে জাতীয় সংসদের পাঁচটি আসনের উপনির্বাচন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দলীয় মনোনয়নের জন্য আবেদনপত্র বিতরণ সোমবার থেকে শুরু হয়েছে। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে দলীয় মনোনয়নের জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ এবং জমা নেওয়া হচ্ছে।

আবেদনপত্র বিতরণ ও জমা নেওয়া চলবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে মনোনয়নের জন্য দলীয় আবেদনপত্র সংগ্রহ করেছেন দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন।

গতকাল মঙ্গলবার বিকালে শফিউল ইসলামের পক্ষে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ করেন তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। সিদ্দিকুর রহমান সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, নেত্রী মনোনয়ন দিলে আমরা জয় লাভ করে মুজিববর্ষের প্রথম উপহার দিতে চাই।

তিনি আরো বলেন, শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ছাত্রজীবন থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন। কিন্তু কোনো পদপদবি নেননি।গাইবান্ধা-৩ আসনে সবচেয়ে বেশি আট জন মনোনয়নের জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ করেছেন। তারা হলেন—উম্মে কুলসুম স্মৃতি, ইয়াকুবুল আজাদ, মাহমুদুল হক, এ কে এম মোকছেদ চৌধুরী, মফিজুল হক সরকার, ফজলুল করিম, ওমর ফারুক ও আজিজার রহমান।

বাগেরহাট-৪ আসনে আবেদনপত্র সংগ্রহ করেছেন চার জন। তারা হলেন—এইচ এম মিজানুর রহমান জনি, আব্দুর রহিম খান, প্রবীর রঞ্জন হালদার ও মো. আমিরুল আলম মিলন। যশোর-৬ আসনে শেখ আব্দুর রফিক ও বগুড়া-১ আসনে মুজাহিদুল ইসলাম বিপ্লব।

স্বামীর পক্ষে গণসংযোগে চিত্রনায়িকা শাবানা : ২০ জানুয়ারি ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যুর পর যশোর-৬ আসনটি শূন্য হয়। এই আসনে এক সময়ের পর্দা কাঁপানো চিত্রনায়িকা শাবানা তার স্বামী ওয়াহিদ সাদিকের পক্ষে গণসংযোগে আসায় কেশবপুরে রাজনৈতিক মহলে নানা সমীকরণের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া প্রয়াত সংসদ সদস্য ইসমাত আরা সাদেকের মেয়ে নওরীন সাদেকও গণসংযোগ করছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন চাকলাদারের পক্ষেও প্রতিদিন সমর্থকরা মিছিল ও পথসভা করছে। পাশাপাশি সাবেক কেশবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এইচ এম আমির হোসেন, কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও জীবন বীমা করপোরেশনের পরিচালক শেখ রফিক মনোনয়ন প্রত্যাশী।

চিত্রনায়িকা শাবানা মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মভূমি কেশবপুরের সাগরদাঁড়ি থেকে স্বামী চিত্র প্রযোজক এ কে এস ওয়াহিদ সাদিকের পক্ষে নির্বাচনী গণসংযোগ শুরু করেছেন। সোমবার সকালে সাগরদাঁড়ির মধুমঞ্চের পাশে আয়োজিত জনসমাবেশে আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন মনোনয়ন প্রত্যাশী এ কে এস ওয়াহিদ সাদিক। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন চিত্র নায়িকা শাবানা, সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল হালিম, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা পার্থ সারথি রায় লেবু প্রমুখ।

চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী যারা: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদে কে পাচ্ছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন তা নিয়ে জোর আলোচনা ও গুঞ্জন শুরু হয়েছে। মেয়র ও কাউন্সিলর পদে সম্ভাব্য প্রার্থীরা গণসংযোগে নেমেছেন। তবে রাজনৈতিক অঙ্গনে মূল আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে কে পাচ্ছেন মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন।

বর্তমান মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির পুনরায় দলীয় মনোনয়ন পাবেন—এমনটি মনে করছেন তার সমর্থকরা। অপরদিকে শিক্ষা উপমন্ত্রী ও চট্টগ্রাম কোতোয়ালি আসনের এমপি ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে পেতে চাচ্ছেন দলের উল্লেযোগ্য একটি অংশ। নওফেল এরই মধ্যে বলেছেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা যদি নির্দেশ দেন তবে তিনি মেয়র পদে নির্বাচন করবেন।

নওফেল সাবেক মেয়র প্রয়াত এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ করেছেন আ জ ম নাছির উদ্দীন। চসিক মেয়র আ জ ম নাছির সাংবাদিকদের বলেন, মনোনয়নের বিষয়টি দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর নির্ভর করছে।

তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এবং শিরোধার্য। এছাড়া মেয়র পদে তিন জন আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ করেছেন। তারা হলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস. রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক খোরশেদ আলম সুজন প্রমুখ। আর দলের সমর্থনের জন্য ৯৪ জন কাউন্সিলর প্রার্থী আবেদনপত্র ক্রয় করেছেন।


শর্টলিংকঃ