ঋণ না নিয়েও ‘খেলাপি’ ৩০ কৃষক!


 কলিট তালুকদার,পাবনা:

পাবনার চাটমোহর উপজেলার ঝাঁকড়া গ্রামে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ (বর্তমান নাম-আমার বাড়ি আমার খামার) সমিতি থেকে ঋণ না নিয়েও ৩০ জন কৃষক ‘ঋণ খেলাপি’ হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীদের দাবি তাদের নামে ঋণ তুলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তছরুপ করেছেন ।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগে জানা গেছে, ২০১২ সালে চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের ঝাঁকড়া গ্রামে আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের সমিতি গঠন করে ৬০ জন সদস্যের মাঝে ১০ হাজার টাকা করে ঋণ বিতরণ করা হয়। ঋণগ্রহীতাদের অভিযোগ, তারা কিস্তির টাকা নিয়মিত পরিশোধ করলেও মাঠ সহকারী আলিফ হোসাইন এবং ম্যানেজার মোজাহার হোসেন পাশ বইয়ে টাকার পরিমাণ তোলেননি।

কিস্তির টাকা দেওয়ার পরেও সদস্যদের দেননি কোনো রশিদ। এছাড়া সমিতির সদস্য না হয়েও হাসানুর সরকার নামে এক ব্যক্তির নামে ভুয়া ঋণ বিতরণ দেখিয়ে অপর এক ব্যক্তিকে টাকা প্রদান করা হয়।

২০১৩ এবং ২০১৬ সালে এসে পুনরায় ওই সদস্যদের না জানিয়ে আবারও তাদের নামে অতিরিক্ত ঋণ বিতরণ দেখানো হয়। দীর্ঘ কয়েক বছর পর ঋণ খেলাপি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন ওই গ্রামের প্রায় ৩০ জন। মাস খানেক আগে অনাদায়ী ঋণ আদায়ে খেলাপি সদস্যদের কাছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্বাক্ষরিত নোটিশ গেলে বিষয়টি বুঝতে পারেন ভুক্তভোগীরা।

পরে তারা পৌর সদরে ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ প্রকল্প অফিসে গিয়ে প্রতিবাদ জানান এবং বিক্ষোভ করেন। জাহিদুল প্রামানিক, জাহাঙ্গীর হোসেনসহ বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, সময়মতো তারা কিস্তি পরিশোধ করার পরেও পাশ বইয়ে তোলেননি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বইগুলো তারা (মাঠ সহকারী ও ম্যানেজার) নিজেদের কাছে জমা রাখেন। দীর্ঘদিন তাদের গ্রামে সমিতির কোনো কার্যক্রমও নেই।

দ্বিতীয়বার ঋণের টাকা না নিয়েও খেলাপি তালিকায় নাম আসলো কীভাবে, তা ভেবে পাচ্ছেন না তারা। তাদের দাবি ‘সদস্যদের নামে টাকা তুলে তছরুপ করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রকল্পের ম্যানেজার মোজাহার হোসেন ও মাঠ সহকারী আসিফ হোসাইন বলেন, প্রথম দফায় অনেকেই ঋণ নিয়ে কিস্তির টাকা ঠিকমতো দেননি। যাদের বাকি ছিল তারা সমন্বয় করে আবারও ঋণ নিয়েছে। কিন্তু কিস্তির টাকা বারবার চাওয়ার পরেও দেয়নি।

বাড়ি পর্যন্ত গিয়েও কেউ কিস্তির টাকা পরিশোধ করেনি। এখন নোটিশ পেয়ে অস্বীকার করছে। এ ব্যাপারে আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের চাটমোহর উপজেলা সমন্বয়কারী খলিলুর রহমান বলেন, ঋণ তারা অবশ্যই নিয়েছেন। অনেক সদস্য কিস্তি দেননি। তবে যেহেতু সমস্যা তৈরি হয়েছে তাই বসে বিষয়টি সমাধান করা হবে।


শর্টলিংকঃ