এনআরসি ভুলে বাংলাদেশ থেকে শিক্ষা নিন: টাইমস অব ইন্ডিয়া


জাতীয় নাগরিক তালিকার (এনআরসি) মাধ্যমে ভারতে বসবাসকারী অনেককেই বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে বাংলাদেশে পাঠানোর ইচ্ছা থেকে দেশটির সরকারকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।


ভারতের প্রভাবশালী এই দৈনিকটির সোমবারের সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দারুণ উন্নতি করছে, প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে।

এ অবস্থায় এনআরসির মতো বিতর্কিত সিদ্ধান্ত থেকে মোদি সরকারের ফিরে আসা উচিত। কীভাবে অর্থনৈতিক উন্নতি করতে হয় ঢাকার কাছ থেকে নয়াদিল্লির তা শিক্ষা নেয়া উচিত।

সম্পাদকীয়তে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদ্যসমাপ্ত ভারত সফরে দ্বিপক্ষীয় তিনটি প্রকল্প ও সাতটি সমঝোতা স্বাক্ষর করেছে উভয়পক্ষ। প্রকল্পগুলো হল- বাংলাদেশ থেকে এলপিজি আমদানি, ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে একটি বিবেকানন্দ ভবন ও খুলনায় ইন্সটিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্সে বাংলাদেশ-ভারত প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট স্থাপন।

সমঝোতাগুলোর মধ্যে রয়েছে- চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারত থেকে পণ্য আনা-নেয়া, সাংস্কৃতিক বিনিময় সংক্রান্ত কর্মসূচি নবায়ন ও বাংলাদেশের উপকূলে নজরদারি বৃদ্ধি সংক্রান্ত স্মারক।

স্পষ্টত, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক বহু বিস্তৃত। এটা সম্ভব হয়েছে দুই দেশের নেতৃত্বের মধ্যে সমন্বয়ের কারণে। উপরন্তু দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্রুত উত্থান ঘটছে বাংলাদেশের। দেশটিতে এ বছর এবং পরবর্তী বছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শতকরা ৮ ভাগের উপরে অর্জিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইতিমধ্যে মাথাপিছু আয় প্রায় ২ হাজার ডলারে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যিক যুদ্ধের কারণে সুবিধা পেয়েছে বাংলাদেশ। দেশটির রফতানি বৃদ্ধি পেয়ে এ বছর ১০ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

ঐতিহাসিক কারণে ভারতের পররাষ্ট্রনীতিতে বেশি দৃষ্টি রাখা হয় পাকিস্তানের দিকে। কিন্তু অর্থনৈতিক দিক থেকে পাকিস্তানকে নীরবে উতরে গেছে বাংলাদেশ। তাই এখন সময় এসেছে বাংলাদেশের বিষয়ে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর। বাংলাদেশ এখন আর দরিদ্র দেশ নয়, দুর্ভিক্ষকবলিত দেশ নয়।

যথার্থই দক্ষিণ এশিয়ার একটি ‘গ্রোথ ইঞ্জিন’ বাংলাদেশ। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে অব্যাহত রাখতে ভারতীয় নেতৃত্বকে অবশ্যই এনআরসির মতো প্রকল্প ঠেলে দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এনআরসির বিষয়ে শেখ হাসিনাকে নিশ্চয়তা দেয়া সত্ত্বেও, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে চিড় ধরাচ্ছে এই ইস্যু। অর্থনীতিতে ভালো করছে বাংলাদেশ। তাই অবৈধ অভিবাসীদের ঠেলে দেয়ার মূল ফ্যাক্টরটি আর বিদ্যমান নেই। প্রকৃতপক্ষে ঢাকার সফলতা থেকে নয়াদিল্লির শিক্ষা নেয়া উচিত এবং নিজের অর্থনীতিকে উন্নত করতে সংস্কারের দিকে দৃষ্টি দেয়া উচিত।


শর্টলিংকঃ