ওয়াসার দুর্নীতি: কাজ শেষ না করেই টাকা উত্তোলন


প্রকল্পের কাজ শেষ না করেই শতকোটি টাকার বিল তুলে নেয়া, অযৌক্তিক কারণে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে সময় ও ব্যয় বৃদ্ধি করাসহ নানা অজুহাতে ওয়াসার একাধিক প্রকল্পে ভয়াবহ দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেছে। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, প্রকল্প পরিচালক, সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী ও ঠিকাদারসহ একটি সিন্ডিকেট জড়িত।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। এতে ওয়াসার বিভিন্ন প্রকল্পসহ ১১ খাতে দুর্নীতি চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি এসব দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে ১২ দফা সুপারিশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের হাতে তুলে দেন দুদকের কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান।

ওয়াসার দুর্নীতি ঠেকাতে ১২ দফা সুপারিশের বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ  বলেন, ওয়াসায় দুর্নীতির যে চিত্র আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক টিমের সুপারিশে বেরিয়ে এসেছে, আমরা তা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। আশা করি তারা আমাদের সুপারিশ বাস্তবায়ন করবে। পাশাপাশি দুদক থেকেও অনুসন্ধান করা হবে।

প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ওয়াসা নিয়ে সমীক্ষা করে দেখেছি, এখানে প্রায় ১১টি জায়গায় দুর্নীতির ফাঁক রয়েছে।এর বিপরীতে দুর্নীতি দমনে আমরা ১২ দফা সুপারিশ করেছি। এ সময় তিনি এলজিআরডিমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, দুর্নীতির উৎসের কথাগুলো আপনার জ্ঞাতার্থে বলতে চাই এজন্যই যে, ওয়াসা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা যাতে একটু সংবেদনশীল হতে পারেন।

এ জায়গাগুলোতে যদি নজর দেন, তাহলে ভবিষ্যতে কোনো প্রকল্পে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দুদক টিম ওয়াসায় দুর্নীতির যে ১১টি উৎস চিহ্নিত করেছে, সেগুলোর মধ্যে প্রকল্প কাজ ও অন্তর্র্বতীকালীন পানি সরবরাহ প্রকল্পে দুর্নীতিসহ ঢাকা পানি সরবরাহ নেটওয়ার্ক উন্নয়ন সিস্টেমে দুর্নীতি সবচেয়ে বেশি।

দুদকের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঢাকাসহ বৃহত্তর মিরপুর এলাকার পানির চাহিদা পূরণকল্পে মিরপুরের ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরতা হ্রাসকরণ প্রকল্পটি ২০১২ সালের ২২ নভেম্বর অনুমোদিত হয়।অনুমোদিত ডিপিপি (প্রকল্প বিবরণ) অনুযায়ী জিওবি ১৪২ কোটি টাকা, ওয়াসার ১০ কোটি টাকা, প্রকল্প সাহায্য ৩৬৯ কোটি টাকাসহ ৫২১ কোটি টাকার প্রকল্প ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু ২০১৬ সালের ২৯ মার্চ সংশোধিত ডিপিপি অনুযায়ী প্রকল্পের ব্যয় ৫৭৩ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়। যার মধ্যে জিওবি ২০০ কোটি ৫ লাখ টাকা, ওয়াসার ১০ কোটি, প্রকল্প সাহায্য ৩৬২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা অন্তর্ভুক্ত।সংশোধিত ডিপিপি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ না করে অযৌক্তিকভাবে প্রকল্পের ব্যয় ৫২ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে।

প্রকল্পের কাজের অঙ্গগুলোর মধ্যে ৪৬টি উৎপাদনযোগ্য কূপ, ২টি আয়রন অপসারণ প্ল্যান্ট, ১টি ভূ-উপরিস্থ জলাধার, ৭ দশমিক ৮১ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ, ৪৮ দশমিক ৭৮ কিমি. পানি সরবরাহ লাইন নির্মাণ কাজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী দেখা যায়, ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদিত হলেও ২০১৬ সালের ডিসেম্বর র্পর্যন্ত বাস্তব কাজের অগ্রগতি মাত্র ৪৬ দশমিক ৭২ ভাগ। এ কাজে ঠিকাদারকে ৩১৩ কোটি ৭১ লাখ টাকা পরিশোধও করা হয়েছে।

যা সংশোধিত ডিপিপি মূল্যের ৫৪ দশমিক ৭৫ ভাগ। এক্ষেত্রে কাজের অগ্রগতির সঙ্গে ঠিকাদারের পরিশোধিত বিলের অনেক পার্থক্য রয়েছে বলে মন্তব্য করা হয়েছে প্রতিবেদনে।আরেক প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরীতে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা অটুট রাখার স্বার্থে প্রতিদিন ৪০ কোটি লিটার অতিরিক্ত পানি সরবরাহ করার জন্য গভীর নলকূপ স্থাপন, প্রতিস্থাপন ও পানির লাইন নির্মাণ বা পুনর্বাসনের কাজ হাতে নেয়া হয়।

এর জন্য ২০১৫ সালের মার্চ থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত ৩ বছর মেয়াদি জিওবি (সরকারি অর্থ) ২৪২ কোটি ও ওয়াসার ১০ কোটি টাকাসহ ২৫২ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটি গৃহীত হয়।ওই প্রকল্পে ১৬২টি গভীর নলকূপ স্থাপন বা প্রতিস্থাপন, ৩০টি গভীর নলকূপ রিজেনারেশন বা রিহেবিলিটেশন ও ৭০ কিলোমিটার পানির লাইন নির্মাণ বা পুনর্বাসনসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

প্রকল্পে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৮০ কোটি ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫০ কোটিসহ মোট ১৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ ও ব্যয় হয়েছে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৬২টি গভীর নলকূপের কাজ শেষ হয়েছে মর্মে খাতাপত্রে দেখানো হয়। এ প্রকল্পের ক্ষেত্রে ডিজাইন ও স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন হয়নি।

রিভাইজড ডিপিপিতে ৩৭৫টি গভীর নলকূপ স্থাপন বা প্রতিস্থাপন, ১২০টি গভীর নলকূপ রিজেনারেশন বা রিহেবিলিটেশন ও ১০০ কিলোমিটার পানির লাইন নির্মাণ বা পুনর্বাসনসহ আনুষঙ্গিক কাজ অনর্ভুক্ত করে ৬১২ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটির রিভাইজড ডিপিপি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়।

২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত প্রকল্পের ব্যয় প্রথম অনুমোদিত ডিপিপির মাত্র ৫১ ভাগ হলেও পুনরায় ৩৬০ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়। প্রকল্পটি ২০১৫ সালের মার্চ থেকে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে সমাপ্ত করার কথা থাকলেও প্রায় ৫০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

এতে বলা হয়, কয়েকটি গভীর নলকূপ স্থাপন ও কিছু পানির লাইন স্থাপন করা হলেও অধিকাংশ কাজ এখনও অসমাপ্ত রয়েছে। যে কাজ হয়েছে সেই কাজের অগ্রগতির সঙ্গে ঠিকাদারের পরিশোধিত বিলের অনেক পার্থক্য রয়েছে।

দেখা যায়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ না করে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা ও প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রকল্প পরিচালকসহ প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী ও ওয়াসার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট থাকে। এ প্রকল্পের ক্ষেত্রেও ডিজাইন ও স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন হয়নি।

প্রতিবেদনে ‘সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার (ফেজ-৩) প্রকল্পে’ দুর্নীতির বিষয়ে বলা হয়, ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনের মাধ্যমে ঢাকা মহানগরীর পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ৪৫৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা। অথচ প্রকল্পের কাজের তেমন কোনো অগ্রগতি নেই।

একইভাবে ‘পদ্মা (যশলদিয়া) পানি শোধনাগার নির্মাণ (ফেজ-১) প্রকল্প’-এও দুর্নীতি চিহ্নিত করেছে দুদক। প্রতিবেদনে বলা হয়, মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার পদ্মার তীরে যশলদিয়া নামক স্থানে পানি শোধনাগার নির্মাণের মাধ্যমে পুরান ঢাকার মিটফোর্ড, নবাবপুর, লালবাগ, হাজারীবাগ, ধানমণ্ডি, মোহাম্মদপুর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় পানির চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ৪৫০ এমএলডি সুপেয় পানি সরবরাহের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। ৩৫০৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৩ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে কাজ সমাপ্ত করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি।

‘ঢাকা এনভায়রনমেন্টালি সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্প’র ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনের মাধ্যমে ঢাকা মহানগরীর পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ৫২৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৩ সালের অক্টোবরে প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়। ২০১৯-এর ডিসেম্বর মেয়াদে প্রকল্প বাস্তবায়ন করার কথা। এ প্রকল্পে ২৩৮ কোটি টাকা ইতিমধ্যে পরিশোধ করা হলেও কাজের অগ্রগতি মাত্র ৮ ভাগ।

‘দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্প’-এ দুর্নীতির বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর গুলশান, বনানীসহ অন্যান্য এলাকায় পয়ঃবর্জ্য পরিশোধ প্রকল্পের জন্য ৩৩১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ সমাপ্ত করার কথা। এখন পর্যন্ত ১০১ কোটি টাকা জিওবি (সরকারি অংশ) থেকে বিল পরিশোধ করা হলেও কাজের অগ্রগতি বলার মতো নয়।

দুদকের প্রতিবেদনে ‘ঢাকা মহানগরীর আগারগাঁও এলাকায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প’র বিষয়ে বলা হয়, জিওবি (সরকারি অর্থ) থেকে প্রায় ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা। অথচ প্রকল্পের অগ্রগতি খুবই নগণ্য।

একইভাবে ২০১৬ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকা পানি সরবরাহ নেটওয়ার্ক উন্নয়ন প্রকল্প ৩১৮২ কোটি টাকার প্রকল্প নবায়ন করার কথা। কিন্তু অদ্যাবধি প্রকল্পের কোনো অগ্রগতি নেই। এ প্রকল্পের কাজের কাক্সিক্ষত অগ্রগতি না থাকলেও কার্যাদেশপ্রাপ্ত ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।

পরামর্শক ও ঠিকাদার নির্বাচন : পরামর্শক ও ঠিকাদার নির্বাচনের ক্ষেত্রে দুর্নীতির বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পরামর্শক ও ঠিকাদার নির্বাচনের বিষয়ে দাতা সংস্থার গাইড লাইন ও ঋণ চুক্তির শর্তাবলী মেনে চলার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

এক্ষেত্রে পরামর্শক ও ঠিকাদার নির্বাচনের বিষয়ে এমন কিছু শর্তারোপ করা হয়, যাতে নির্দিষ্ট সংখ্যক ঠিকাদার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া ঠিকাদার নির্বাচনের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট পদ্ধতি ও রাজনৈতিক পরিচয় এবং কাজ পাওয়ার বিনিময়ে ঘুষ লেনদেন বর্তমানে একটি প্রচলিত প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে স্পেশিফিকেশন ও ডিজাইন অনুযায়ী প্রকল্প কাজ যথাসময়ে শেষ হয় না এবং প্রকল্পের ব্যয়ভার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পায়।

গভীর নলকূপ স্থাপন, মিটার রিডিং ও রাজস্ব আদায় : ব্যক্তি মালিকানাধীন গভীর নলকূপ স্থাপন, মিটার রিডিং ও রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে দুর্নীতির বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে এ কাজ চলে গেছে। এক্ষেত্রে ওয়াসা এখনও ম্যানুয়াল পদ্ধতি ব্যবহার করায় প্রকৌশল ও রাজস্ব শাখার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মিলে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। যারা সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিতে নানা কৌশলে কাজ করছে।

কাজ না করেও ওভারটাইম : দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা ওয়াসায় পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় ওয়াসার বিভিন্ন শ্রেণির কর্মচারীদের নির্ধারিত কার্য সময়ের বাইরে অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। এক্ষেত্রে তাদের ওভারটাইম বিল প্রদান করা হয়।যা তাদের মূল বেতনের চেয়েও প্রায় দ্বিগুণ। অনেক ক্ষেত্রে কিছু প্রভাবশালী কর্মচারী ওভারটাইম না করেও ওয়াসার কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ওভারটাইম বিল উত্তোলন করেন। এক্ষেত্রে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ঢাকা ওয়াসার কর্মচারীদের ওভারটাইম বিল অনেক বেশি।

সুপারিশমালা : দুর্নীতি রোধে দুদকের প্রতিবেদনে যে ১২ দফা সুপারিশ করা হযেছে, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ঢাকা ওয়াসার চলমান প্রকল্পগুলোর বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং অর্থ অপচয় রোধে বিভিন্ন প্রকৌশল সংস্থা কর্তৃক অভিজ্ঞ প্রকৌশলীর সমন্বয়ে যৌথ পরিমাপ টিম ও মনিটরিং টিম গঠন করা যেতে পারে।

এসব টিম গঠন করা হলে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদাররা প্রকল্প কাজ যথাসময়ে যথাযথভাবে সম্পাদন করতে মনোযোগী হবেন। এতে সময়, অর্থ অপচয় ও দুর্নীতি অনেকাংশে হ্রাস পাবে।

এছাড়া প্রকল্পের প্রাক্কলন তৈরির সময় কাজের যথার্থতা ও উপযোগিতা আছে কিনা- তা ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত হতে হবে। বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় যাতে অহেতুক বাড়ানো না হয়, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।

প্রকল্পের কাজে দরপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রে মূল্যায়ন কমিটিতে দাতা সংস্থার প্রতিনিধিসহ টেন্ডার ও ক্রয়কার্য যথাযথ হচ্ছে কিনা- তা মনিটরিং করার জন্য মন্ত্রণালয়ভিত্তিক শক্তিশালী টিম গঠন করা যেতে পারে।

এছাড়া প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের সময় ওয়াসার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার প্রকল্প পরিদর্শনসহ রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে।

দরপত্রের শর্তানুযায়ী ঠিকাদার প্রকল্প কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করেছে কিনা- তা ভালোভাবে দেখে বিল ছাড় করতে হবে। ঠিকাদার যতটুকু কাজ করছে তার গুণগত মান যাচাইয়ের ওপরই বিল পরিশোধ করা যেতে পারে। কৃতজ্ঞতা: যুগান্তর


শর্টলিংকঃ