- ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ - https://universal24news.com -

বন্দে আলীর জন্মদিন কাল


কলিট তালুকদার, পাবনা:

১৭ জানুয়ারী শিশু সাহিত্যের নান্দনিক কবি, বিখ্যাত ময়নামতি চরের কবি; কবি বন্দে আলী মিয়ার জন্ম বার্ষিকী। ১৯০৬ সালের ১৭ জানুয়ারী পাবনা শহরের রাধানগর মহল্লায় জন্ম গ্রহন করেন কবি বন্দে আলী মিয়া। যথাযথ সংরক্ষনের অভাবে বিলীন হতে বসেছে কবি বন্দে আলী মিয়ার রেখে যাওয়া কর্ম।

কবি বন্দে আলী মিয়া

১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে কবি বন্দে আলী মিয়া পাবনা শহরের রাধানগর মজুমদার একাডেমী থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার বৌ-বাজারস্থ ইন্ডিয়ান আর্ট একাডেমী থেকে চিত্রবিদ্যায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে কর্মের সন্ধানে ঘুরতে ঘুরতে কলকাতা কর্পোরেশন স্কুলে সহকারি শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং দীর্ঘ ২০ বছর চাকুরী করে অবশেষে তিনি ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে অবসর গ্রহন করেন।

পরবর্তীতে তিনি দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী বেতারে চাকরি করেছেন। এ সময় তিনি গল্পের দাদু নামের একটি শিশুদের অনুষ্ঠান করতেন। ১৯৭৯ সালের ২৭ জুন ৭৩ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহীর কাজিরহাট অঞ্চলের বাসভবনে ইন্তেকাল করেন কবি। পরে তাকে কবরস্থ করা হয় নিজগ্রাম পাবনার রাধানগরে। সরকারী ভাবে কবির জন্ম বার্ষিকী স্মরণ না করলেও দিনটি স্মরণ করে পাবনার কবি ভক্ত ও অনুরাগীরা। কবির মৃত্যুর পর যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে ধ্বংস হতে বসেছে কবির পাবনা শহরের রাধানগর মহল্লার বসতবাড়ি কবিকুঞ্জ ও রেখে যাওয়া কর্মগুলো।

কবি বন্দে আলী মিয়া ছিলেন একাধারে গীতিকার, উপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, চিত্রশিল্পী কবির অনেক লেখা এখনও তার পরিবারের সদস্যদের কাছে পরে আছে যে গুলো সরকারী উদ্যোগে ছাপার দাবী জানান পরিবারের সদস্যরা।

কবির স্বজনেরা বলেন, পারিবারিক উদ্যোগে যতটুকু সম্ভব হয় তারা কবির বাড়ি ও তার রেখে যাওয়া কর্মগুলো সংরক্ষণের চেষ্ঠা করে যাচ্ছে। তবে তাদের দাবী সরকারী উদ্যোগে কবির কর্মগুলো সংরক্ষন করা হোক।

এদিকে সরকারী উদ্যোগে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে কবির জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিক পালনের দাবী জানিয়েছেন কবি বন্দে আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা আমিরুল ইসলাম রাঙা।
পাবনাবাসীর দাবির মুখে পাবনা পৌরসভার উদ্যোগে কবি বন্দে আলীর নামে পাবনা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের এবং রাধানগর এলাকার একপি মার্কেটের নামকরণ করা হয়। এছাড়াও কবি বন্দে আলী মিয়া শিশু শিক্ষা নিলয় এবং জেলার আটঘরিয়া উপজেলায় কবি বন্দে আলী মিয়া নামে একটি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

কবি বন্দে আলী মিয়া শিশুদের জন্য ১০৫টি শিশুতোষ গ্রন্থসহ ১৩৬ টি বই রেখে গেছেন। শিশু সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য কবি বন্দে আলী মিয়া ১৯৬২ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন। সাহিত্যকর্মে তার অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৯০ সালে মরনোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করা হয় কবি বন্দে আলীকে।