করোনামুক্তির রিপোর্ট পেয়েই মোটর শোভাযাত্রায় ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট


ইউএনভি ডেস্ক:

দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় কোভিড ১৯-এ ভোগে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জইর বোলসোনারো। ৬৫ বছর বয়সী লাতিন আমেরিকার দেশটির এ রাষ্ট্রপ্রধান জানিয়েছেন, সবশেষ নমুনা পরীক্ষায় রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। পরে তিনি একটি মোটর শোভাযাত্রাও অংশ নেন।


শনিবার বোলসোনারো নিজেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ কথা জানান। ওই পোস্টের সঙ্গে তিনি ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে ব্যবহৃত ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের একটি বক্সের ছবি দেন। পোস্টে তিনি নিজের করোনামুক্তির জন্য এ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনকে ধন্যবাদ জানান।

৭ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত তিন দফায় তার নমুনা পরীক্ষা করা হয়, যার সবগুলোতে ফল পজিটিভ এসেছিল। পরের পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ ফল আসে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, নিজের করোনামুক্তির কথা জানালেও কখন তার চতুর্থ পরীক্ষা হয়েছে বোলসোনারো এ ব্যাপারে কিছু জানাননি।

গত ৭ জুলাই করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর বোলসোনারো প্রেসিডেন্ট ভবনে ‘আংশিক’ আইসোলেশনে যান। তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দাফতরিক কার্যক্রমে অংশ নেন। মাঝে মাঝে বাসভবনের বাইরেও এসেছেন। কয়েক দিন আগে কিছুটা দূরে অবস্থান করে একটি সমাবেশে অংশ নেয়া তার সমর্থকদের প্রতি শুভকামনা জানান। সে সময় তিনি কিছু সময়ের জন্য মাস্কও খুলে ফেলেন। এ নিয়ে তার তীব্র সমালোচনা হয়।

অবশ্য সমালোচনাকে থোরাই তোয়াক্কা করেন বোলসোনারো। শুরু থেকেই তিনি করোনার গায়ে ‘সাধারণ ফ্লু’ তকমা লাগিয়ে দেন। প্রেসিডেন্ট হয়েও মাস্ক পরতেন না। সমাবেশ করে বেড়াতেন। প্রেসিডেন্ট মাস্ক না পরলে জরিমানা করা হবে এমন আদেশও দিতে বাধ্য হন দেশটির আদালত।

এমনকি লকডাউন নিয়ে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বন্দ্বে ব্রাজিলের দুই-দুজন স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এখনও স্থায়ী স্বাস্থ্যমন্ত্রী পাননি ব্রাজিলিয়ানরা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো ব্রাজিল প্রেসিডেন্টও বারবার এ মহামারীকে তুচ্ছজ্ঞান করে আসছিলেন। নিজ দেশে মৃত্যু ও সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকলেও তার এ চরিত্র বদলায়নি। নিজের অ্যাথলেটিক শরীরের জন্য তিনি আস্থাশীল ছিলেন। তার ভাষ্য, তিনি সংক্রমিত হলেও তেমন ক্ষতি হবে না।

অবশেষে করোনামুক্ত হয়ে মোটর শোডাউনে বের হন তিনি। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, অচিরেই সারা দেশ পরিদর্শনে বের হবেন বলেও ঘোষণা দেন বোলসোনারো।

করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ব্রাজিল। ওয়ার্ল্ডওমিটারসের সবশেষ তথ্যে বলা হয়েছে, রোববার সকাল পৌনে ১০টা পর্যন্ত দেশটিতে ২৩ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৮৬ হাজার ৪৯৬ জন। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৬ লাখ ১৭ হাজার ৪৮০ জন। এখনও শয্যাশায়ী ৬ লাখ ৯২ হাজার ৪৫৮ জন। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ছাড়াও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন দেশটির দুই মন্ত্রী।
সূত্র: বিবিসি।


শর্টলিংকঃ