Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

করোনাগুজব : মাতাল গাজাঁখোর ফেসবুকে মৃত হিসেবে ভাইরাল!


ইউএনভি ডেস্ক:

আজব এই দুনিয়ায় ফেসবুকের কল্যানে কত কিছুই না ঘটছে। বিশেষ করে বিভিন্ন দূর্যোগময় মুহূর্তে তা আরো বেশি ঘটে। আর মুঠোফোনের কল্যাণে এসব ঘটনার বিস্তৃতি ও হয়ে যাচ্ছে তাড়াতাড়ি। ফেসবুক গুজবের একটি বড় জায়গায় পরিণত হয়েছে ৷ আর সত্য ঘটনার চেয়ে গুজবই যেন ফেসবুকে ভাইরাল হয় বেশি ৷ এই গুজবকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে অনেক অঘটনও ঘটছে৷


করোনাভাইরাস নিয়ে ভার্চুয়াল জগতে নানা ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। করোনা সংক্রমণের চেয়েও কঠিন রূপ ধারণ করেছে এসব গুজব। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানাভাবে ছড়ানো হচ্ছে নানা মিথ্যা তথ্য। আর এসবে কান দিয়ে বিভ্রান্ত হচ্ছেন মানুষ।

তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছে টাঙ্গাইলে। এতে দেখা যায় ওয়াহেদুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি একটি পোস্ট দেন। এতে দেখা যায় তিনি লিখেছেন : ঘটনাস্থল টাঙ্গাইল স্টেডিয়াম ব্রিজের পূর্ব পাশ। এই মানুষটিও অনেকক্ষণ যাবত এইভাবে পড়ে আছে , ভয়ের কারণে কেউ কাছে যেতে সাহস পাচ্ছেনা।

ছবিসহ এমন একটি পোস্ট দেওয়ার পরপরই তা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনাটি নজরে আসার পর তদন্তে নামে র‍্যাব কতৃপক্ষ। তারা এই ছবির সন্ধানে নামে। অনুসন্ধান করতে গিয়ে তারা এই ব্যক্তির পরিচয় খুজেঁ পান।

জানা যায় , ওই ব্যক্তির নাম শমসের আলি। তিনি পেশায় একজন ভ্যানচালক। টাঙ্গাইলের গালা এলাকার বেপারিপাড়ায় তার বাড়ি। র‍্যাবের একটি প্রতিনিধিদল তার বাড়িতে যান। এসময় তারা কথিত মারা যাওয়া শমসের আলীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন এবং তার বক্তব্য শুনেন।

এসময় শমসের আলীর স্ত্রী জানান , তিনি ফেরি করতে মাল কিনতে বাড়ির বাইরে যান। পরে নেশাজাতীয় দ্রব্য খেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকেন। খবর পেয়ে তাদের ছেলে গিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর থেকে তিনি বাড়িতেই আছেন এবং সুস্থ আছেন।

ফেসবুকে মৃত সন্দেহে তার স্বামীর ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শুনে তিনি এই গুজব রটনাকারীর শাস্তি দাবি করেছেন। তিনি বলেন , আমার স্বামীকে যারা মৃত বানিয়ে ফেসবুকে ছড়িয়েছে , তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

এবিষয়ে র‍্যাবের একজন কর্মকর্তা জানান, এমন গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নয় সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এবং সামাজিকভাবে তাদেরকে বয়কট করতে হবে। করোনা নিয়ে আতঙ্ক এবং গুজব নয় সতর্কতামূলক পোস্ট আমাদের সত্যিকারের উপকারে আসতে পারে।

গুজব প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে একজন সামাজিক মাধ্যম এক্টিভিস্ট বলেন, গুজব ছড়ানো পোস্ট দেখলে ডিজিটাল মার্কেটিং মেথড ব্যবহার করে একই পোস্টের কাউন্টার পোস্ট আমরা ভাইরাল করতে পারি। এতে ঘণ্টায় এক লাখ মানুষের কাছে পৌঁছান অসম্ভব কিছু না। এর মাধ্যমে একটা তাৎক্ষণিক রেজাল্ট পাওয়া যায়।

দ্বিতীয়ত, এ ধরনের গুজবের পোস্ট দেখলেই সেটা নিয়ে স্ট্যাটাস না লিখে সঙ্গে সঙ্গে রিপোর্ট করে দেয়া। অনেক মানুষ একসঙ্গে রিপোর্ট করলে স্বাভাবিকভাবে ফেসবুক একটা ব্যবস্থা নেবে।

আর তৃতীয় উপায় হল- প্রি-ভাইরাল অ্যাওয়ারনেস। অর্থাৎ কোনটি গুজব আর কোন ধরনের পোস্ট শেয়ার করা যাবে না, এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা খুব জরুরি।

এ বিষয়ে র‍্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্ণেল তোফায়েল মোস্তফা সারওয়ার বলেন, গুজব রটনাকারীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্যে নিবিড় নজরদারী চালাচ্ছে সরকার। এরই মধ্যেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সমূহ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বসাধারণকে সচেতন করার পাশাপাশি এ বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন , গুজব ছড়িয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করা ফৌজদারি অপরাধ। এ বিষয়ে সারা দেশের বিভিন্ন ইউনিটকে গুজব প্রতিরোধে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশ দিয়েছে র্যা ব। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও র্যা ব কর্তৃক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন উৎসের মাধ্যমে শনাক্তকৃত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গুজব রটনাকারীদেরকে বিশেষ অপারেশনের মাধ্যমে গ্রেফতার করেছে। এই প্রক্রিয়া ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।


Exit mobile version