করোনামুক্ত রাখতে ভবানীগঞ্জ পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাঠে


 বাগমারা প্রতিনিধি :

রাজশাহীর বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার টিকাদানকারী ইসরাত জাহান (৩৫) বাড়িতে আটমাসের কন্যা সন্তান রেখে প্রতিদিন অফিসে আসেন। দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি করোনা প্রতিরোধে কাজ করেন। কখনো দপ্তরে আবার কখনো মাঠে। এভাবে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন তিনি।

শুধু ইসমত আরা নন, তাঁর মতো পৌরসভার স্থায়ী ও অস্থায়ীসহ আরো ২৫জন কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনাকালে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। সরকারি ছুটি ভোগ না করে দায়িত্বপালন করে যাচ্ছেন। উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জকে করোনাভাইরাস মুক্ত রাখতে ও করোনা সংকটে পৌরবাসীর পাশে থাকতে এই উদ্যোগ। তাঁদের এই কার্যক্রম স্থানীয় বিভিন্ন মহলে প্রশংসা পাচ্ছে।

গত মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা করোনাভাইরাস প্রতিরোধে মাঠে কাজ শুরু করেন। ওই দিন থেকে অলিখিত ভাবে সকলের ছুটি বাতিল করা হয়। এখন পর্যন্ত তা বলবত রয়েছে। তাঁরাও ছুটি ভোগ করছেন না। পৌরসভার সচিব লিটন মিয়া বলেন, মেয়রের নির্দেশে ঝুঁকি নিয়ে পৌরসভার ২৬জন কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনা প্রতিরোধে অতিরিক্ত কোনো পারিশ্রমিক ছাড়াই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

উপজেলা সদরে বিভিন্ন পেশার ও স্থানের লোকজনের যাতায়াত থাকায় করোনা ঝুঁকিতে রয়েছে। এজন্য তাঁরা নিরালসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। শুরুর দিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে পৌর এলাকায় জীবানুনাশক ছিটানো, মাইকযোগে সচেতনতামূলক প্রচার, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পানির ড্রাম স্থাপন করে সেখানে সাবান রেখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা ছাড়াও সচেতনতামূলক কার্যক্রম করে আসছেন।

প্রতিটি এলাকার কাউন্সিলরদের সঙ্গে নিয়ে নিজ নিজ এলাকায় বিদেশফেরত এবং পরে অন্য জেলা ফেরতদের শনাক্ত করে তাঁদের হোম কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে পৌরসভার কর্মকর্তাদের নিয়ে। সচিব বলেন, এখন পর্যন্ত পৌরসভার কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী সরকারি ছুটিও ভোগ করেননি। তাঁরা করোনা প্রতিরোধে নিয়মিত বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করছেন।

সরকারি ছুটির দিনে উপজেলার দুটি হাটবার থাকায় নিরাপদ দূরত্বে দোকান পাট বসানো এবং জনসমাগম এড়াতে পৌরসভার লোকজন কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁরা এসব বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনকেও সহযোগিতা করছেন। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে চারজন কর্মকর্তা বলেন, তাঁরা ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তাঁদের জন্য কোনো সুরক্ষা পোশাক নেই। নিজেদের টাকায় কেনা মাস্ক ব্যবহার করছেন।

গত মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত কোনো ছুটি ভোগ করেননি। ভবানীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবদুল মালেক মণ্ডল বলেন, তাঁরা সবাই ঝুঁকি নিয়ে প্রায় দুই মাস ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোনো ছুটি ভোগ করছেন না। তাঁরা নিয়মিত অফিস খোলে নিজেদের দায়িত্ব পালন করছেন। এজন্য তাঁর এলাকায় কোনো ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি বা কারোর কোনো সমস্যা হয়নি।


শর্টলিংকঃ