এনআইডি দেখিয়ে নিতে হবে ১০ টাকার চাল


ইউএনভি ডেস্ক:

নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি বিবেচনায় রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগীয় ও জেলা শহরে ওএমএসের মাধ্যমে ১০ টাকা কেজি দরে চাল দেবে সরকার। এই চাল পেতে ভোক্তাকে দেখাতে হবে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)। ডিলারের কাছে লেখাতে হবে ভোক্তার বিস্তারিত তথ্য। প্রয়োজনে নিবন্ধন করতে হবে মোবাইল নম্বরও।

করোনায় ওএমএস নীতিমালা জারি: এনআইডি দেখিয়ে নিতে হবে ১০ টাকার চাল

খাদ্যবান্ধব বা ভিজিডি (ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট) কর্মসূচির সুবিধাভোগীরা এ সুবিধা পাবেন না। একজন ভোক্তা সপ্তাহে একবারই পাঁচ কেজি চাল পাবেন। একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তি এই সুবিধা পাবেন না। এমন বিধান রেখে ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিশেষ ওএমএস কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত নীতিমালা’ জারি করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খাদ্য সচিব ড. মোসাম্মৎ নাজমানারা খানম বৃহস্পতিবার এ বলেন, ‘এখন যে পরিস্থিতি চলছে তা এক প্রকার লকডাউন বলা যায়। বাস, লঞ্চ, রেল বন্ধ হয়ে গেছে। লোকজনকে বাসায় থাকতে হচ্ছে। ফলে হতদরিদ্র লোকজন বেকার হয়ে পড়েছে। এতে তাদের জীবন ধারণে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী রাজধানীসহ দেশের বড় বড় শহরগুলোতে এ কর্মসূচি চালু করতে যাচ্ছি। এ সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করা হয়েছে।’

নীতিমালায় বলা হয়েছে, ‘বর্তমানে ১৯৯টি দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশেও এ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে এবং সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। গত ২৫ মার্চ জাতির উদ্দেশে ভাষণে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় ওএমএসের মাধ্যমে ভোক্তা পর্যায়ে কেজিপ্রতি ১০ টাকা দরে চাল বিতরণের ঘোষণা দিয়েছেন। এমতাবস্থায় চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০) বাকি ৩ মাস (এপ্রিল-জুন, ২০২০) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খোলাবাজারে খাদ্যশস্য বিক্রয় (ওএমএস বা ওপেন মার্কেট সেল) খাতে চালের গুদাম মূল্য কেজিপ্রতি ২৮ টাকার পরিবর্তে ৮ টাকা এবং ভোক্তা পর্যায়ে কেজিপ্রতি ৩০ টাকার পরিবর্তে ১০ টাকা মূল্য পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এবং ওএমএস খাতে চালের দাম পুনঃনির্ধারণের পরিপ্রেক্ষিতে এই কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নিম্নলিখিত নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।’

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- করোনার কারণে কর্মহীন দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, পরিবহন শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, চায়ের দোকানদার, ভিক্ষুক, ভবঘুরে, তৃতীয়লিঙ্গ (হিজড়া) সম্প্রদায়সহ অন্য সব কর্মহীন মানুষ এই বিশেষ ওএমএস কর্মসূচির সুবিধা পাবেন। কর্মসূচি বাস্তবায়নে ভোক্তার বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত মাস্টার রোল সংরক্ষণ করতে হবে।

একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তিকে ভোক্তা হিসেবে নির্বাচন করা যাবে না। ওই পরিবারের কেউ খাদ্যবান্ধব বা ভিজিডি কর্মসূচির সুবিধাভোগী হলে তিনিও এর আওতাভুক্ত হবেন না। জেলা ও বিভাগীয় প্রতি কেন্দ্রে ২ টন এবং ঢাকা মহানগরীর প্রতিটিতে ৩ টন করে চাল দৈনিক বিক্রি করা যাবে।

একজন ভোক্তা এনআইডি দেখিয়ে সপ্তাহে একবারই পাঁচ কেজি সুবিধা নিতে পারবেন। প্রতি রোববার, মঙ্গলবার এবং বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত বিক্রয় কার্যক্রম চলবে।স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর বা প্রতিনিধির উপস্থিতিতে বিক্রয় কাজ পরিচালনা করতে হবে। এছাড়া করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন করেই এ কর্মসূচি পরিচালনা করতে হবে।

করোনা ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে ১০ দিনের ছুটি চলছে সারা দেশে। মঙ্গলবার ছুটি ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরুনো নিষেধ। সব ধরনের কর্মকাণ্ড প্রায় বন্ধ। ফলে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে বিশেষ করে খেটে খাওয়া দরিদ্র জনগোষ্ঠী।


শর্টলিংকঃ