করোনায় চালের দাম কেজিতে বেড়েছে সাত টাকা


কাজী কামাল হোসেন, নওগাঁ :
করোনা আতঙ্কে দেশের অন্যতম বৃহৎ চালের মোকাম নওগাঁয় গত পাঁচ-ছয় দিন ধরে প্রতি কেজিতে চালের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৭ টাকা। অন্য সময়ের তুলনায় গত কয়েক দিন ধরে মোকামে চালের বিক্রি বেড়েছে প্রায় পাঁচ গুণ। সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে মোটা চালের দাম।এতে গরীব খেটে খাওয়া মানুষেরা পড়েছেন বেশি বিপদে ।


চাল ব্যবসায়ীদের দাবি, করোনাভাইরাস আতঙ্কে কৃতিম সঙ্কট তৈরি হতে পারে এমন আশঙ্কায় মানুষের মাঝে খাদ্যপণ্য মজুতের প্রবণতা বেড়েছে। এর ফলে বাজারে চালের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কয়েক দিনের ব্যবধানে চালের দাম অস্বাভাবিক রকম বেড়েছে। মোকামে চালের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বেশি বেশি চাল উৎপাদন করছেন মিলমালিকেরা। ফলে বাজারে ধান কেনার প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে। প্রকারভেদে প্রতি মণ ধানের দাম বেড়েছে ১৫০-২০০ টাকা পর্যন্ত।

নওগাঁ ধান-চাল আড়তদার সমিতির সভাপতি নিরোধ বরণ সাহা বলেন, অন্য বছরগুলোতে এই সময়ে নওগাঁর চালের মোকামগুলো থেকে খুব বেশি হলে ১০০ গাড়ি (ট্রাক) চাল ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বড় বাজারগুলোতে যেত। কিন্তু গত পাঁচ-ছয় দিন ধরে প্রতি দিন প্রায় ৫০০ গাড়ি চাল দেশের বড় বড় বাজারগুলোতে যাচ্ছে। অর্থাৎ মোকামে চালের বিক্রি বেড়েছে পাঁচগুণ। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় যোগান ঠিক রাখার জন্য মিল মালিকদের মাঝে ধান কেনার প্রবণতা বেড়ে গেছে। ফলে ধানের দাম বেড়েছে প্রতি মণে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় পাইকারিতে প্রতি কেজি চালের দাম প্রতি বস্তায় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

অবশ্য চাল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বলছেন, দেশে বড় ধরণের কোনো প্রকৃতিক দুর্যোগ না হলে চালের সঙ্কটের কোনো সম্ভাবনা নেই। করোনাভাইরাস আতঙ্কের কারণে বর্তমানে মানুষের মাঝে খাদ্যপণ্য কেনার যে প্রবণতা তৈরি হয়েছে এটা সাময়িক। দেশের মানুষের চাহিদার চেয়ে ১৯ লাখ মেট্রিক টন বেশি ধান গত আমন মৌসুমে উৎপাদন হয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমে কোনো প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে অন্তত চালের কোনো সঙ্কট হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, নওগাঁ শহরের পার-নওগাঁ ও জেলার মহাদেবপুরে চালের মোকামে পাইকারিতে মোটা জাতের স্বর্ণা চালের দাম প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) বেড়েছে ৪০০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও প্রতি বস্তা স্বর্ণা চাল যেখানে ১ হাজার ৫৫০ টাকায় বিক্রি হতো, এখন সেই চাল বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৯০০ টাকা। কেজিতে মোটা চালের দাম বেড়েছে ৭ টাকা। চিকন জাতের জিরা চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৬ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ২ হাজার ১০০ টাকায় প্রতি বস্তা জিরা চাল বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ টাকায়। এছাড়া কাটারিভোগ ও নাজিরশাইল চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা।


শর্টলিংকঃ