করোনায় মৃত্যুর দ্বিগুণ ঝুঁকিতে যারা, উঠে এল গবেষণায়


ইউএনভি ডেস্ক:
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ব। এই ভাইরাসের বিষাক্ত ছোবলে বিশ্বব্যাপী প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। আধুনিক চিকৎসাবিজ্ঞান এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও কার্যকরী প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে না পারায় প্রতি মুহূর্তে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল।

ককরোনায় মৃত্যুর দ্বিগুণ ঝুঁকিতে যারা, উঠে এল গবেষণায়রোনা আগের মতই শক্তিশালী বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

এই ভাইরাসের তাণ্ডবে বিশ্বজুড়ে ইতোমধ্যে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৪ লাখ মানুষের। এমন অবস্থায় জানা গেল কারা করোনায় দ্বিগুণ মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে। এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা করোনায় মৃত্যুর দ্বিগুণ ঝুঁকিতে আছেন।

তাদের মধ্যে যারা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওষুধ সেবন করেন না তাদের ঝুঁকি আরও বেশি। শুক্রবার ইউরোপিয়ান হার্ট জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এমনটাই জানা গেছে। খবর দ্য সান ও বেলফাস্ট টেলিগ্রাফের।

৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ মার্চের মধ্যে চীনের উহানের হুশেনশান হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৩০০ রোগীর উপর গবেষণা চালিয়ে এই ফল পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি আয়ারল্যান্ডের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গবেষকরাও ২ হাজার ৮৬৬ জনের ওপর গবেষণা চালিয়ে একই ফল পেয়েছেন।

গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া চীনের জিজিং হাসপাতালের প্রফেসর ফেই লি এ বিষয়ে বলেছেন, ‘এটা গুরুত্বপূর্ণ যে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের বুঝতে হবে তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে অন্যদের চেয়ে দ্বিগুণ মৃত্যু ঝুঁকিতে থাকবে। মহামারির এই সময়ে তাদের নিজেদের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে।

তারা যদি আক্রান্ত হয় তাহলে আরো বেশি খেয়াল রাখতে হবে।’এদিকে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব আয়ারল্যান্ডের গবেষকরা ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ মার্চের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ২ হাজার ৮৬৬ জন রোগীকে নিয়ে গবেষণা চালান। তাদের মধ্যে ৮৫০ জনের (২৯.৫ শতাংশ) হাইপারটেনশন তথা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ছিল। এদের মধ্যে ৩৪ জন (৪ শতাংশ) হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পরই মারা যায়।

আর বাকি ২ হাজার ১৭ জনের (যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নেই) মধ্যে মারা যায় ২২ জন (১.১ শতাংশ)।এ ছাড়া উচ্চ রক্তচাপের যেসব রোগী ওষুধ সেবন করতেন না তাদের ১৪০ জনের মধ্যে মারা যায় ১১ জন (৭.৯ শতাংশ)। আর যারা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওষুধ সেবন করতেন তাদের ৭১০ জনের মধ্যে মারা যায় ২৩ জন (৩.২ শতাংশ)।

এ বিষয়ে লি বলেছেন, ‘সুতরাং আমরা পরামর্শ দিচ্ছি ডাক্তারের সুপারিশ ছাড়া উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর অ্যান্টিহাইপারটেনসিভ ওষুধ সেবন বন্ধ করবেন না।’এরপর গবেষক দল উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ আরএএএস (র‌্যাস), এসিই ও এআরবি,এস সেবনকারী ২৩০০ রোগীর ওপর গবেষণা চালান। এই গবেষণায় দেখা যায় এসব রোগীদের মৃত্যুহার কম। অর্থাৎ উচ্চ রক্তচাপের এই ধরনের ওষুধগুলো করোনার বিরুদ্ধে কিছুটা কাজ করে।


শর্টলিংকঃ