করোনায় স্বাস্থ্য ঝুকি নিয়ে মাঠে আছেন উপজেলা চেয়ারম্যান


গোদাগাড়ী প্রতিনিধি:

কলেজ শিক্ষক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। তিনি গোদাগাড়ী উপজেলা পারিষদের পরিশ্রমী চেয়ারম্যান। তার কৃতিকর্মের জন্য পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন মানুষের ভালবাসা ও দোয়া।যে কোনো জনসেবামূলক কাজ তিনি তড়িৎকর্মা হয়েই করে দেন।

রাজশাহী-১(গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর  আস্থা ভাজন মিষ্টি ভাষী, নিরঅহংকারী এ মানুষটির সাদামাটা স্বভাবসুলভ আচরণে মুগ্ধ শুধু খোদ তার দলের লোকই নয়,তার কাজের ও দুরদর্শিতার প্রসংশা করে বিরোধী দলের লোকেরাও। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় অফিস ছেড়ে প্রতিদিন মাঠে কাজ করছেন তিনি।দেশে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হওয়ার পর পরই তিনি মাঠে নামেন। তাকে প্রতিদিনই উপজেলার কোন না কোন প্রান্তে কাজ করতে দেখা যায়।

কোনদিন তিনি ঘুরে ঘুরে কথা বলে লোকজনদের বোঝান। কোনদিন লিফলেট বিতরণ করে সবার মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করেন। কোনদিন তিনি লোকজনের মাঝে ত্রাণ, মাস্ক ও হ্যান্ড সানিটাইজার বিতরণ করেন।

করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) বৈশ্বিক মহামারির ছোবলে লণ্ডভণ্ড গোটা বিশ্ব।স্থবির থমকে যাওয়া বিশ্বে এখন শুধু গগন বিদারী আহজারিতে ছেয়ে গেছে। আশার আলো করোনা বিদায় নামক সূর্য কখন দেখা যাবে কেও জানেনা তবে ব্যতিক্রম পরিস্থিতি গোদাগাড়ীর বেলায়।দেখা যাচ্ছে একজন জনপ্রতিনিধি বা জনসেবক রাত-বিরাতে নাওয়া,খাওয়া।পরিবার-পরিজনক ও ঘর-সংসার ভুলে করোনায় নিজের জীবনের ঝুঁকি আছে এমন বিষয়টি বুঝতে পেরেও জনগণের পরমবন্ধু হয়ে জনসেবায় এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম।

গত এক মাস রাজশাহী গোদাগাড়ী উপজেলার ৯ টি ইউনিয়ন ও ২ টি পৌরসভার যে কোন প্রান্তে রাত- বিরাতে মাঠে-ময়দানে আছেন আজও। কখনো ত্রাণ কাঁধে ছুটছেন অসহায় ও কর্মহীন মানুষের দ্বারে-দ্বারে।আবার কখনো করোনারোধে প্রতিকার এর প্রচারণায় ছুটে চলছেন নিরোবধি প্রত্যন্ত ও দুর্গম গ্রামের পাড়া গাঁয়ে। এমনকি রোজা রেখেও প্রচন্ড গরমে ছুটে চলেছে পদ্মার চরে।

তিনি ব্যাক্তিগত অর্থায়নে উপজেলা হাজার হাজার পরিবারের মাঝে চাল,ডাল,আটা,লবণ,আলু,তেলসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অব্যহত রয়েছে। সর্বশেষ দেখা যায় উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের কলিপুর,মাধাইপুর,মিরপুর ২০০ জন হত দরিদ্র আদিবাসী (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি) নারী পুরুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে। জানা গেছে, সবই করছেন তিনি তার ব্যক্তিগত তহবিলের টাকায়।

এছাড়া উপজেলার প্রতিটি এতিমখানা ও ইসলামী কাওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ পূর্ণবাসন মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ইফতারীর খেজুর বিতরণ করেন। চেয়ারম্যানের সহধর্মীনি মাসতুরা বেগম বলেন, আমর স্বামী স্রেফ জনগণের একজন “সেবক” এর বেশি তিনি নিজেকে কিছুই মনে করে না,করিনি, আর কখনো করেনা বলে আমি মনে করি। তিনি ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রায় ৬-৭ ঘন্টা বাড়ীতে স্ত্রী সন্তানদের সাথে সময় দেন কিন্তু এ সময়ের মধ্যে ফোনে কথা বলা ইত্যাদি কাজে ব্যাস্ত থাকে। এত কিছুর মাঝেও তিনি আমাকে মাঝে মাঝে বলেন এই কাজটা করতে পারলে উপজেলা বাসীর উপকার হত।

এতে আমি বিরক্ত হয়না আমি মন থেকে মেনে নিয়েছি সে যেন জনগণের সেবক হয়ে থাকতে পারে। পরিশেষে তিনি বলেন, জীবন করতে চাই গঠন যেনো মরণে হাসিবে তিনি কাঁদিবে ভুবন। আমি সুখে দুঃখে সব সময় তার পাশে থেকে এ জীবন বিলিন করতে চাই। এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের সাথে তিনি জানান, পদ্মার তীরবর্তী ও বরেন্দ্র জনপদের খেটে খাওয়ার মানুষের ভালোবাসায় আমি ধন্য।

তাদের ভালোবাসার রঙে আমার জীবন রাঙিয়েছি। এ মানুষগুলোর ভালোবাসা,শ্রদ্ধা ও স্নেহ থেকে আমি শক্তি পাই,কাজ করার অনুপ্রেরণা পাই।তাদের এমন কার্পণ্যহীন ভালোবাসা থেকে আল্লাহ আমার বেঁচে থাকার অক্সিজেন যোগান দেন। আমি আল্লাহর কাছে একটা বিষয় প্রার্থনা করি,গোদাগাড়ী উপজেলার মানুষই আমার ঘর- সংসার।আমি চাই আমৃত্যু তাদের সাথে নিয়ে দুমুঠো ডাল -ভাত খাই।

তিনি আরো বলেন, আল্লাহ আমাকে যা দিয়েছেন আমি কৃতজ্ঞ। আমি জনপ্রতিনিধি হয়েছি শুধু মানুষকে ভালোবেসে সেবা দিতে,জনসেবা দিয়ে যাবো আমৃত্যু-ইনশাল্লাহ।

আরও পড়তে পারেন রিমান্ডে পুলিশের নির্যাতনে আসামির মৃত্যু


শর্টলিংকঃ