করোনা গুজব ও এর বিরূপ প্রভাব


বিশ্বব্যাপী করোনার অশান্ত ঢেউ বাংলাদেশেও অাছড়ে পড়েছে এতে কোনোরকম সন্দেহ নেয়।সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক নিজেকে,পরিবারকে, সমাজকে তথা দেশকে সুরক্ষিত করতে সকলেই নিজ নিজ স্হান হতে যথাসাধ্য কাজ করে যাচ্ছে। সতকর্তা ও বিধিনিষেধ পালন হলসহ মানসিক শক্তি করোনার একমাত্র মেডিসিন।

করোনাকালে মানুষের বিভিন্ন ছোট – বড় অসুখ হচ্ছে যেমন এই ঋতুতে” ফ্লু ” বা ইনফ্লুয়েঞ্জা অতি সাধারণ অসুখ। প্রসঙ্গের অবতারণার কারণ হল,ছবিতে যাঁকে অামি ফুল দিচ্ছি তিনি অামার অফিসের /ব্যক্তিগত কর্মচারি।তাঁকে সবাই জানেন।নাম তাঁর জনাব মোঃ সাদেকুল আলম।গত ০৩ জুন ২০২০ হতে তাঁর জ্বর, কাশি শুরু হয়।স্হানীয় ডাক্তারের পরামর্শে মেডিসিন খেয়ে জ্বর – কাশি ভাল হয়।

০৬ জুন সে কলেজে অাসলে তাঁকে অামি বললাম,তোমার কি অসুখ সেরে গেছে? বললেন,হ্যাঁ।বাসায় ভাল লাগেনা স্যার, তাই চলে আসলাম।এরপর সে অাবারও কিছুটা শ্বাসকষ্ট নিয়ে ০৮জুন হাসপাতালে ভর্তি হয়।সারা কলেজসহ বিশেষ করে আমার সম্মানিত সচেতন সহকর্মীদের মাঝে খবরটি দ্রুত পৌঁছে যায় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের দ্বারা।

স্বাভাবিকভাবেই অধ্যক্ষ হিসেবে কলেজে চলমান অনলাইন ক্লাস ও অন্যান্য কার্যক্রম যে স্বল্প পরিসরে চলছিল তা চলমান রাখতে  আতনয় বরং দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ি।জনাব সাদেকুলের অতি সংস্পর্শে আমি ছাড়া আর কেউ আসেননি।তিনি করোনায় আক্রান্ত হলেই তাঁর স্ত্রী আমি প্রথম টার্গেট। আমি সুনিশ্চিত ছিলাম এবং আল্লাহ তায়ালার নিকট প্রতি নামাজ শেষে ফরিয়াদ জানিয়েছিলাম,অন্তত জনাব সাদিকুলের যেন করোনা নেগেটিভ ফলাফল হয়।

কারণ দুটো প্রথমতঃ একটি গরীব পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি তিনি। দ্বিতীয়ত কলেজের চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম বিশেষ করে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম মূখ থুবড়ে পড়বে। করোনা অাক্রান্ত কে কখন হবে সেটি কেউ জানেন না। তবুও কলেজে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেই কিছু অনলাইন ক্লাস পরিচালনা করা হয়।

অসুস্হ ব্যাক্তির পরীক্ষা ছাড়াই যখন তাঁকে করোনা রোগী বানিয়ে ফেলে কলেজের অংশীজনকে অাতঙ্কিত করা কতটুকু যুক্তিযুক্ত সেটি অন্তত সচেতন গোষ্ঠীর বোঝা উচিৎ। কারণ সতর্কতার সঙ্গে মানসিক শক্তিও করোনার ক্ষেত্রে ইমিউনিটি বৃদ্ধির আরেকটি কার্যকরী মেডিসিন। সবার মানসিক শক্তি সমান না একথা সত্য তবুও আমাদের করোনার মধ্যে নিজকে খাপখাওয়াতে শক্তি সঞ্চয় করতে হবে।

জনাব সাদেকুল ভিন্ন অসুখে আক্রান্ত। তিনি এখন অনেকটাই সুস্হ। অাজকে কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁকে অবমুক্ত করা হবে। অনুরোধ, আমরা করোনা থেকে মুক্ত থাকার জন্য সর্বোচ্চ সতর্ক থাকব কিন্ত গুজব ছড়িয়ে কলেজের কার্যক্রমকে বিঘ্নিত করার অপপ্রয়াস থেকে বিরত থাকি।

মহা. হবিবুর রহমান : অধ্যক্ষ, রাজশাহী কলেজ


শর্টলিংকঃ