- ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ - https://universal24news.com -

কলেজ শিক্ষককে মারধর, শিক্ষার্থী-পুলিশ সংঘর্ষ


ইউনিভার্সাল ডেস্ক:

পুলিশের মারধরে ময়মনসিংহে আহত শিক্ষক

ময়মনসিংহে ট্রাফিক পুলিশের হাতে এক অধ্যাপক মারধরের শিকার হওয়ার জের ধরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও থানা ঘেরাও করে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় পাঁচ পুলিশসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে পাঁচ পুলিশসহ ১৫ শিক্ষার্থীকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার দুপুরে শহরের জিলা স্কুল মোড়ে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের সহকারী অধ্যাপক শেখ শরিফুল আলমের গাড়ির সঙ্গে একটি অটোরিকশার সংঘর্ষ হয়। এ সময় রাস্তায় প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হলে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ আসলাম হোসেন ও চালকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা হয়।

একপর্যায়ে প্রাইভেটকারে থাকা ওই শিক্ষক গাড়ি থেকে নেমে এসে ট্রাফিক পুলিশের কাছে ঘটনাটি জানতে চাইলে কথাকাটাকাটি ও একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

পরে ওই ট্রাফিক বিষয়টি টহল পুলিশকে জানালে তাৎক্ষণিক পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই শিক্ষককে বেধড়ক মারধর করেন। পরে তাকে টেনেহিঁচড়ে ফাঁড়িতে নিয়ে আসেন। এ খবর কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে বেশ কয়েকটি অটোরিকশা ভাঙচুর করে।

পরে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা কোতোয়ালি মডেল থানা ও ২নং পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় ৫ পুলিশসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হন।  কলেজের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, পুলিশ হাসপাতালে গিয়েও শিক্ষার্থীদের মারধর করেছে।

এদিকে পরিস্থিতি শান্ত করতে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএ নেওয়াজীসহ পুলিশ কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক ওই কলেজ ও হাসপাতালে ছুটে যান। পরে প্রশাসনের সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাসে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শান্ত হয়।

এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. নায়েরুজ্জামানকে প্রধান করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল আমিন ও ওই কলেজের শিক্ষক একেএম দেলোয়ার হোসেনকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

জেলা পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন জানান, ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রীতিকর। তবে শিক্ষককে আটক করার গুজবে শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েকটি অটোরিকশা ভাঙচুর করে এবং পরে থানায় হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় ৫ পুলিশসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

তিনি বলেন, আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ট্রাফিক পুলিশ ও পুলিশ সদস্যদের অন্যায় থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, বিষয়টি অনভিপ্রেত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাৎক্ষণিক কলেজ ক্যাম্পাস ও হাসপাতালে ছুটে যান তিনি। শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনার জন্য কলেজের শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান তিনি।#

সূত্র: জাগো নিউজ