Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

কুখ্যাত রাজাকার মূসার রায় ঘোষণার অপেক্ষা


পুঠিয়া প্রতিনিধি:
রাজশাহীর পুঠিয়ায় একাত্তরে মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত কুখ্যাত রাজাকার আব্দুস সামাদ ওরফে মূসার রায় ঘোষণা যে কোনও দিন। মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগসহ মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলার এই রায় অপেক্ষমাণ (সিএভি) রেখেছেন ট্রাইব্যুনাল। রাষ্ট্র ও আসামী পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সোমবার (আজ) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।


এর আগে গত ৪ জুলাই এই মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। আজ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করার পর রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন ট্রাইব্যুনাল। আসামীর বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ প্রসিকিউশনের ১৫জন সাক্ষী তাদের জবানবন্দি পেশ করেন। অন্যদিকে আসামী পক্ষের কোনও সাফাই সাক্ষী ছিল না। আদালতে আজ রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম। আসামী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।

মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায় কুখ্যাত রাজাকার মুসা মুক্তিযুদ্ধের সময় উপজেলার পশ্চিমভাগ ও গোটিয়া গ্রামে আদিবাসী ও বাঙালীদের ওপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায়। সে সময় তার নেতৃত্বে সেখানে চলে হত্যা, হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা। এ বিষয়ে গত প্রায় চার বছর পূর্বে পশ্চিমভাগ গ্রামের শহীদ আব্দুস সামাদের স্ত্রী রাফিয়া বেগম মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে দু’দফা মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের তদন্তকারী দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সর্বশেষ গত ২০১৭ ইং সালের ৯ জানুয়ারি তদন্তকারী দলের লোকজন উপজেলার বাঁশবাড়ীয়া, পশ্চিম ভাগ, আটভাগ, ধোকড়াকুল ও গোটিয়া গ্রামের ভুক্তভোগী ও সাধারণ মানুষের বক্তব্য গ্রহণ করেন। ওই সময় তদন্তকারী দলের পরিদর্শক ফারুক হোসেন ভুক্তভোগীদের জানিয়েছেন গত বছর ২৭ জুলাই রাজশাহীর সার্কিট হাউজে মূসার বক্তব্য গ্রহণ করা হয়। এরপর বিস্তারিত খোঁজ খবর জানতে দলটি ঘটনা স্থলে আসেন। সে সময় ৭১ সালে মূসার হাতে নির্মম ভাবে নিহত স্থানীয় ও আদিবাসীদের স্বজনরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

রাফিয়া বেগমের অভিযোগ থেকে জানা গেছে ৭১ সালের ১৯ এপ্রিল এলাকায় মুক্তিবাহিনী আছে বলে মূসা রাজাকার পাক বাহিনীদের ডেকে আনে। এরপর দুর্গাপুর এলাকার নমিক ফকিরের ছেলে মফিজ উদ্দীন, গোটিয়া গ্রামের মানিক সর্দারের দু’ছেলে আদম আলী ও জাফর আলী এবং শুকদেবপুর গ্রামের মিরা হাজির ছেলে সিরাজ উদ্দীনকে চোখ বেঁধে লাইনে দাড় করিয়ে গুলির নির্দেশ দেয়।

ওইদিন মূসা নিহতদের হাত ও পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর তার নির্দেশে গুলি করে হত্যা করা হয় আক্কেল আলীর ছেলে আব্দুস সাত্তারকে। পরে পশ্চিমভাগ গ্রামের ধন্যাট্য আদিবাসী লাড়ে হেমব্রমের বাড়ীতে গিয়ে তাকে হত্যা করে এবং অগ্নিসংযোগ করে লুটপাট চালায়। এছাড়া রাজাকার মূসা নিজেই এলাকার মংলা সরেনের ছেলে জটু সরেন, মুন্ডি মার্ডির ছেলে টুনু মার্ডি, ধোকড়াকুল এলাকার নেসু শাহ্ ছেলে রহমত শাহ্, বাঁশবাড়ী গ্রামের ইব্রাহিম সরকারের ছেলে ইসমাইল সরকার ও তার ছেলে আনেস সরকার, আব্দুল গফুরের ছেলে বদিউজ্জামান, বসিরের ছেলে কালা চাঁনকে হত্যা করে।


Exit mobile version