Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

কুষ্টিয়ায় ব্যতিক্রমী সাপখেলা!


কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় অনুষ্ঠিত হল সাপখেলার ব্যতিক্রমী প্রতিযোগিতা।বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী উপজেলার ফুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের শিমুলিয়া গ্রামে প্রায় ২০টি সাপুড়ে দল নিয়ে ব্যতিক্রমি এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।সাপখেলা দেখতে উপস্থিত হয় কয়েক হাজার মানুষ। এই প্রতিযোগিতায় দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন সাপের খেলা দেখানো হয়।

সাপখেলা প্রতিযোগিতার তত্ত্বাবধায়ক সাপুড়ে সবুজ আলী জানান, কুষ্টিয়া জেলায় এবারই প্রথম কোনো সাপখেলা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পেরে আমরা ভীষণ খুশি।

এ প্রতিযোগিতায় কুষ্টিয়া ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ, রাজবাড়ী, চুয়াডাঙ্গা থেকে প্রায় ২০টি সাপুড়ে দল এসেছে। প্রতি দলেই চার থেকে পাঁচজন সদস্য রয়েছেন।তিনি বলেন, এখানে সাপের মধ্যে রয়েছে- আজগর, কুলিম, মাছি আওলাদ, লাউডগা, দাঁড়াস, বিঝুড়ি, কাটাধনদন, কিংকোবরা ইত্যাদি।

সাপখেলার নিয়ম সম্পর্কে সাপুড়ে সবুজ জানান, সাপুড়ে দল একটি টেবিলের ওপর তার সাপখেলা দেখাবেন। প্রতিটি দল ২০ মিনিট করে সময় পাবে। খেলা দেখানোর সময় ওই সাপ যতবার ছোবল দেবে এক পয়েন্ট করে বিয়োগ হবে। আর যদি ২০ মিনিটের মধ্যে তার সাপ একটাও ছোবল না দেয় তবে সে পূর্ণ পয়েন্ট পাবেন।

ভেড়ামারা থেকে আসা সাপুড়ে মুনজিল জানান, আমরা প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন জায়গায় এভাবে সাপখেলা দেখাই। বর্তমানে আমার কাছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১০টি সাপ রয়েছে। এখানে সাপখেলা দেখাতে পেরে আমি আনন্দিত।

মিরপুর উপজেলার কুরিপোল গ্রামের সাপুড়ে দারুল মল্লিক জানান, প্রায় ৫৭ বছর ধরে সাপখেলা দেখাচ্ছি। সাপের খেলা দেখিয়ে এবং সাপ ধরেই জীবন-জীবিকা নির্বাহ করি। বর্তমানে আমার কাছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৮টি সাপ রয়েছে।

তিনি আরও জানান, সাপ খেলার এমন আয়োজন যশোর, ফরিদপুর, চুয়াডাঙ্গা এলাকায় হলেও কুষ্টিয়া জেলায় এই প্রথম। তবে প্রথমবার আয়োজন হলেও মানুষের উপস্থিতি বেশ সন্তোষজনক। এখানে সাপের খেলা দেখতে নারী-পুরুষ মিলে প্রায় ৩ হাজার মানুষের সমাগম হয়েছে। এটি খুবিই আনন্দের। আগামীতে আবারও এমন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।

একই উপজেলার খন্দকবাড়িয়া গ্রামের সাপুড়ে লিটন জানান, আমরা দেশের বিভিন্ন গ্রামীণ মেলায় সাপের খেলা দেখাই। সাপের খেলাটি গ্রামবাংলার একটি ঐতিহ্যবাহী খেলা। আমরা চাই বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে। কারণ আগে বিভিন্ন হাট-বাজার মেলায় সাপের খেলা দেখানো হলেও এখন এটি একেবারেই কম। এই ঐতিহ্য প্রতি সুনজর দেয়া প্রয়োজন।

তিনি বলেন, বিভিন্ন স্থান থেকে সব সাপুড়েকে এনে এমন মিলনমেলা আগে কখনও হয়নি। সবাই একত্র হয়ে তাদের সাপখেলা দেখানোটাও অনেক আনন্দের। আগামীতেও এমন আয়োজন করার ইচ্ছা আছে।


Exit mobile version