Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

কূটনৈতিক দ্বন্দ্বে যুক্তরাষ্ট্র-তুরস্ক


ইউএনভি ডেস্ক:

নজিরবিহীন কূটনৈতিক টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়েছে ন্যাটো সামরিক জোটের দুই সদস্য দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের মধ্যে। সাক্ষাৎ চেয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর একটি আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান। সোমবার (১৬ নভেম্বর) তুরস্কের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম হাবের তুর্কের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে দ্য নিউ আরব।

এদিকে তুরস্কের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে একযোগে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন পম্পেও। ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে ১০ দিনের সফরের চতুর্থ দিন সোমবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘গত কয়েক মাস ধরে মধ্যপ্রাচ্যে তুরস্ক যেসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে সে ব্যাপারে আমাদের একযোগে কাজ করা প্রয়োজন।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরাজয়ের কয়েকদিন পর সোমবার ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্য সফরে বের হন পম্পেও। সফরের প্রথম দিন প্যারিসে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাত্রেঁদ্ধা ও তার সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি।

ফরাসি নেতাদের সঙ্গে পম্পেওর বৈঠকে মূলত অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো প্রাধান্য পায়। এরপর তুরস্ককে নিয়ে ফ্রান্সের পত্রিকা লা ফিগারোকে এক সাক্ষাৎকার দেন পম্পেও। ফ্রান্স সফর শেষ করে মঙ্গলবার তুরস্কের ইস্তাম্বুল পৌঁছেছেন পম্পেও।

আরব নিউজ জানিয়েছে, এই সফরের আগেই এরদোগানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলেন। সফরসূচি অনুসারে, মঙ্গলবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে একদিন অবস্থান করবেন তিনি। ইস্তাম্বুলে গ্রিক অর্থোডক্স যাজক বার্থোলোমিউ ওয়ানের সঙ্গে দেখা করার কথা।

এর বাইরে তুরস্কের ঊর্ধ্বতন কোনো সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ নেই তার। ‘হাবের তুর্ক’ নামে তুরস্কের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সফরের আগে পম্পেও’র তরফ থেকে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে সাক্ষাৎ আবেদন পাঠানো হয়।

এরদোগানের বাসভবন আঙ্কারায় হলেও ওই আবেদনে বলা হয়, ‘প্রেসিডেন্ট যদি ইস্তাম্বুলে থাকেন’ তাহলে সাক্ষাৎ করতে চান পম্পেও। আবেদনটি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রত্যাখ্যান করে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের অফিস। প্রত্যাখ্যানের কারণ

হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মার্কিন কূটনীতিকদের ‘আচরণ’কে (আবেদনের ধরন) দায়ী করা হয়েছে। এর আগে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তুরস্কের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মার্কিন গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানায়, পম্পেওকে আঙ্কারায় দেখা করার আমন্ত্রণ জানান তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু। কিন্তু তাতে অসম্মতি জানিয়ে উল্টো কাভুসোগলুকে ইস্তাম্বুলে আসতে বলেন পম্পেও।

পরে সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হয়ে কাজ করা যে মার্কিন কূটনীতিক ও কর্মকর্তাদের আচরণের বিষয়ে তার প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘শিডিউল তথা কর্মসূচিজনিত জটিলতার’ কারণে মার্কিন কর্মকর্তারা আঙ্কারায় যেতে পারেননি। ‘অসম্মান করার’ উদ্দেশ্য নিয়ে তারা ঊর্ধ্বতন তুর্কি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেননি, বিষয়টি মোটেই এমন নয়।

গত সপ্তাহে তুরস্কে ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেওর দেয়া বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে আঙ্কারা। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে তৈরি হওয়া কিছুটা উত্তেজনার মধ্যে পম্পেও তুরস্কে গেলেন।

তুরস্কের হায়া সোফিয়াকে মসজিদ হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রায় চার মাস পর অর্থোডক্স যাজক বার্থোলোমিউর সঙ্গে পম্পেওর এ সাক্ষাৎকে ভালোভাবে নিচ্ছে না আঙ্কারা।


Exit mobile version