Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার বিচারেও বৈষম্য


ইউএনভি ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার বিচারেও বৈষম্য করা হচ্ছে। এই বৈষম্যমূলক বিচার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ফের পথে নেমেছে হাজার হাজার মানুষ। রাজ্যে রাজ্যে চলছে উত্তাল বিক্ষোভ।


রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে কেনটাকির লুইসভিল। সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে। এতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। রয়টার্স।

ছয় মাস আগে নিজ বাড়িতে পুলিশের গুলিতে ব্রেওনা টেইলর নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ নারীর মৃত্যুর ঘটনায় কাউকে অভিযুক্ত না করার প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের লুইসভিল। বুধবার রাতে কারফিউ অমান্য করে শহরটির বিভিন্ন অংশে বিক্ষোভ করেছেন কয়েক হাজার মানুষ।

এর মধ্য থেকেই গুলিবিদ্ধ হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। লুইসভিলের পুলিশপ্রধান রবার্ট শ্রোয়েডার জানিয়েছেন, গুলিবিদ্ধ দুই কর্মকর্তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

চলতি বছরের ১৩ মার্চ ২৬ বছর বয়সী হাসপাতালকর্মী ব্রেওনা টেইলর কেনটাকির লুইসভিলে নিজ বাড়িতে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান।

নিরস্ত্র টেইলরকে অন্তত ছয়টি গুলি করা হয়েছিল। রাতে নিজের ফ্ল্যাটে প্রেমিক কেনেথ ওয়াকারের সঙ্গে সিনেমা দেখার সময় দরজায় টোকার শব্দ পান ব্রেওনা।

সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যরা ওই ফ্ল্যাটে মাদকবিরোধী অভিযান চালায়। এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে লুইসভিলে টানা কয়েক মাস ধরেই তুমুল প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছে। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত পুলিশ সদস্যদের বিচারের দাবি জানিয়ে আসছে বিক্ষোভকারীরা।

হত্যাকাণ্ডের ছয় মাস পর এ ঘটনায় পুলিশ সদস্যদের অভিযুক্ত করা হবে কিনা এ বিষয়ে রায় ঘোষণার আগেই জরুরি অবস্থা জারি করা হয় লুইসভিলে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় বুধবার সেখানে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদেরও মোতায়েন করা হয়। তথ্যপ্রমাণ পর্যালোচনার পর এদিন বিতর্কিত এক রায় দেয় গ্র্যান্ড জুরি।

জড়িত তিন পুলিশ সদস্যের মধ্যে মাত্র একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। বাকি দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই আনা হয়নি।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্টেট অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে তার নাম ব্রেট হ্যানকিসন। সাবেক এই গোয়েন্দা দরজা-জানালায় এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করেছিলেন। অথচ পাশের অ্যাপার্টমেন্টেই সন্তানসম্ভবা নারী ও শিশুরা ছিল।

গ্র্যান্ড জুরির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ব্রেওনার পরিবারের আইনজীবী। নিরস্ত্র নারীকে হত্যার পরও কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ না আনাকে ‘আপত্তিকর ও অপমানজনক’ বলে অ্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি। তবে এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্টাকির অ্যাটর্নি জেনারেলের ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন তিনি। কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক এই রায়ের খবর ছড়িয়ে পড়লে রাজপথে নেমে আসে বিক্ষুব্ধ মানুষ।

লুইসভিল ছাড়াও আটলান্টা, নিউইয়র্ক, ফিলাডেলফিয়া ও ওয়াশিংটনেও রাজপথে নেমে আসে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষাভকারীরা। গ্রান্ড জুরির রায়েল পরপরই লুইসভিলের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হতে শুরু করেন।


Exit mobile version