খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম বাড়ল কেজিতে ১০ টাকা


ইউএনভি ডেস্ক: 

ভোজ্যতেলের পর এবার অস্থির পেঁয়াজের বাজার। পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ৭ টাকা থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। শুক্রবার পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম ছিল ৩০ টাকা থেকে ৩২ টাকা। এখন সেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা থেকে থেকে ৪২ টাকা।

ভারত থেকে পেঁয়াজ আনার ক্ষেত্রে আমদানিপত্র আইপি (ইম্পোর্ট পারমিট) বন্ধ থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশি পেঁয়াজ দিয়ে দেশের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, ২৬ এপ্রিল থেকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। নতুন করে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতিপত্র (আইপি) খুলতে দেওয়া হচ্ছে না। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির যে অনুমতি ছিল, তার মেয়াদ গত ২৯ এপ্রিল শেষ হয়ে গেছে। এরপর আর নতুন করে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পাওয়া যায়নি। অনেক আমদানিকারক আমদানির অনুমতি চেয়ে আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত অনুমতি পাননি। ভারতীয় পেঁয়াজ যতক্ষণ আমদানি হচ্ছে না ততক্ষণ দাম কমার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না তারা।

গত দুই সপ্তাহ ধরে পেঁয়াজ আমদানি কমে যাওয়ায় দাম বাড়তির দিকে রয়েছে। সরকার যদি নতুন করে আইপি অনুমোদন না দেয়, তবে পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নগরীর চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে গিয়ে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা থেকে ৪২ টাকায়। এ ছাড়া দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৯-৪১ টাকা কেজি। একই পেঁয়াজ খুচরা বাজারে ৪৮ টাকা থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

মিয়ানমার থেকে সীমিত আকারে পেঁয়াজ আমদানি করছেন কিছু কিছু আমদানিকারক। মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকার বেশি দামে। এক সপ্তাহ আগেও এ পেঁয়াজ ছিল কেজিপ্রতি ৩০ টাকার কম । জানা যায়, বর্তমানে দেশে তাহেরপুরী, বারি-১ (তাহেরপুরী), বারি-২ (রবি মৌসুম), বারি-৩ (খরিপ মৌসুম), স্থানীয় জাত ও ফরিদপুরী পেঁয়াজ উৎপাদন হয়।

ফলে বছরজুড়েই কোনো না কোনো জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন। এর মধ্যে ১৮ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়। আর আমদানি করা হয় বাকি ৪ লাখ টন।

চাক্তাই শাহ আমানত স্টোরের মালিক শোহরাব হোসেন যুগান্তরকে বলেন, পেঁয়াজ আমদানিতে ভারতের বিকল্প দেশ মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। এক মাসের বেশি সময় ধরে আমদানি বন্ধ থাকায় বাজার থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রায় উধাও। ফলে খানিকটা চাপ পড়েছে দেশীয় পেঁয়াজের ওপর। তাই দাম বাড়তি।

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, পেঁয়াজের দাম নির্ভর করে সরবরাহ চেইনের ওপর। করোনার কারণে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ। দেশি পেঁয়াজ দিয়ে সারা দেশের পেঁয়াজের চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দেশের আমদানিকারকরা মিয়ানমারের পেঁয়াজ আনবেন। এরপরও ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি না পেলে দাম কমার সম্ভাবনা নেই। হয়তো আগামী সপ্তাহে সরকার একটি সিদ্ধান্ত নেবে।


শর্টলিংকঃ