খোঁজ মিলছে না ‘কোটিপতি’ নারীর


ইউএনভি ডেস্ক :

সুনামগঞ্জ পৌর শহরে রিপা বেগম (৩৮) নামের এক নারী ১৪ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। পরিবার বলছে, রিপা সুদের ব্যবসা করতেন। শহরের বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর কোটি টাকার লেনদেন রয়েছে।

ওই লেনদেনের জের ধরেই তাঁকে কেউ অপহরণ করে থাকতে পারে। এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রিপা বেগমের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের সদরগড় গ্রামে। তবে তিনি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের নতুনপাড়া এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

অবিবাহিত রিপা নিজের মা, প্রতিবন্ধী ছোট তিন বোন ও এক ভাইকে নিয়ে শহরের বাসায় থাকতেন। প্রতিবন্ধী ওই শিশুরা শহরের একটি স্কুলে পড়ে। তাদের দেখাশোনা করতেন রিপাই। তিনি নিখোঁজ হওয়ায় ওই শিশুদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।

১৩ ফেব্রুয়ারি রিপা নিখোঁজ হওয়ার পর পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথমে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করা হয়। তাঁকে না পাওয়ায় ১৬ ফেব্রুয়ারি তাঁর এক ভাই মোস্তাক হোসেন সুনামগঞ্জ সদর থানায় জিডি করেন।

ভাই মোস্তাক হোসেন বলেন, রিপা চার বছর ধরে জেলা শহরে আছেন। নিখোঁজ হওয়ার পর তাঁর একটি নোটবুক পেয়েছেন তাঁরা। তাতে শহরের বিভিন্ন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে তাঁদের কাছে রিপা ৬৭ লাখ টাকা পান বলে লেখা রয়েছে। এসব টাকা তিনি সুদে ওই ব্যক্তিদের দিয়েছিলেন।

মোস্তাক হোসেন আরও বলেন, ‘শহরে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে আমার বোনের কোটি টাকার লেনদেন আছে। এসব টাকা লেনদেনের জের ধরেই আমার বোন অপহরণের শিকার হতে পারেন। ১৪ দিন হয়ে গেল, তাঁর কোনো খোঁজ নেই। পুলিশ বলছে, তারাও কোনো খোঁজ পাচ্ছে না। আমরা এখন অসহায় হয়ে পড়েছি।’

পরিবার সূত্রে জানা যায়, রিপা বেগমেরা পাঁচ বোন ও দুই ভাই। রিপা সবার বড়। ভাই মোস্তাক তৃতীয়। অন্যদের মধ্যে ছোট তিন বোন ও এক ভাই শারীরিক প্রতিবন্ধী। অন্য বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। তাঁদের বাবা মারা যান ২০১০ সালে।

তখন মোস্তাক বিদেশে ছিলেন। পরে দেশে এসে সংসার নিয়ে আলাদা বসবাস করেন। বাবার কিছু টাকা ছিল রিপার কাছে। রিপা সেই টাকা দিয়ে গ্রামে সুদের ব্যবসা শুরু করেন।

একপর্যায়ে মা ও প্রতিবন্ধী ভাইবোনদের নিয়ে চলে আসেন শহরে। শহরেও তিনি সুদের ব্যবসা শুরু করেন। মা ও প্রতিবন্ধী ভাইবোনদের দেখাশোনার স্বার্থে রিপা আর বিয়ে করেননি।

সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা সম্ভাব্য সব জায়গাতেই রিপা বেগমের খোঁজ করছি। একই সঙ্গে তাঁর মুঠোফোনের সূত্র ধরেও খোঁজা হচ্ছে। বিষয়টি জটিল মনে হচ্ছে। তারপরও আমরা আমাদের মতো করে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’


শর্টলিংকঃ