- ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ - https://universal24news.com -

গোল্ডেন হ্যান্ডশেকে বন্ধ ঘোষণা হতে পারে চিনিকলগুলো


জিয়াউল গনি সেলিমএমএ আমিন রিংকু :

টানা লোকসানের মুখে দেশের সুগারমিলগুলো অবশেষে বন্ধ করে দেয়া হতে পারে।এরইমধ্যে সকল মিলে চিঠি পাঠিয়ে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, লাভ-লোকসান ও শ্রমিক-কর্মচারীদের দেনা-পাওনার হিসাব চেয়েছে বাংলাদেশ খাদ্য ও চিনি শিল্প কর্পোরেশন। এতে চাকরি হারানোর দুশ্চিন্তায় পড়েছে শ্রমিক ও কর্মচারীরা।

রাজশাহী চিনিকল কারখানার প্রধান ফটক

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানাচ্ছে, দেশের সরকারি চিনিকলগুলো বছরের পর বছর শুধু লোকসান দিচ্ছে। চিনি বিক্রি করে লাভের আশাও আপাতত নেই।  বর্তমানে ১৫টি সরকারি চিনিকলে লোকসানের পরিমাণ পাঁচ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। তাই, লোকসানের দায় এড়াতে চিনিকলগুলো বন্ধের কথা ভাবা হচ্ছে। গেল ১০ সেপ্টেম্বর এক অফিস আদেশে, দেশের সব সুগার মিলের ১১টি বিষয়ের হিসেব চেয়েছে খাদ্য ও চিনি শিল্প করপোরেশন। ১৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চাহিত তথ্য কর্পোরেশনে পাঠাতে বলা হয়েছে। এজন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের  চীফ অব পার্সোনেল মো. রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১৬  মিল/প্রতিষ্ঠানের তালিকা অবস্থান স্থাপনকাল চিনি উৎপাদন ক্ষমতা, বর্তমান সার্বিক অবস্থা চ্যালেঞ্জ এবং প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিতকরণ, চিনিকল সমূহের বিগত ১০ বছরের আখ মাড়াই চিনি উৎপাদন এবং চিনি আহরণের হার, মিল প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠাকাল থেকে অদ্যাবধি মিলভিত্তিক লাভ-লোকসানের পরিসংখ্যান, সদরদপ্তর এবং সকল প্রতিষ্ঠান ব্যাংকঋণের বর্তমান অবস্থা এবং এর সম্পদের পরিমাণ এবং তার বর্তমান বাজার মূল্য, নির্ধারণ বিভিন্ন চিনিকলের নিজস্ব জমির পরিমাণ এবং খামারের জমিতে আখের উৎপাদন খরচ নিরূপণ, বিগত ১০ বছর এবং বর্তমানে বাৎসরিক মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ এর বিবরণ, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের সংখ্যায় গোল্ডেন হ্যান্ডশেক এর আওতায় চাকরিকালীন আর্থিক সংশ্লেষ এর পরিমাণ।

চিনিকলের কারখানা

রাজশাহী চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি  মজিবুর রহমান ইউনিভার্সাল২৪নিউজকে বলেন,  অন্তত তিন মাস ধরে বেতন নেই চিনিকলগুলোতে। ২০১৫ সালের মজুরি কাঠামো অনুযায়ী তাদের এরিয়া বিল বকেয়া পড়েছে কয়েক কোটি টাকা। এখন মিল বন্ধের আশংকা ভাবিয়ে তুলেছে  শ্রমিক-কর্মচারীদের।

রাজশাহী চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের  সাধারণ সম্পাদক মনতাজ আলী জানান,  চিনিকলগুলো বন্ধের   ইঙ্গিত পেয়েই  সারাদেশের শ্রমিক-কর্মচারি নেতারা ঢাকায় বৈঠক করেছেন চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যানের সাথে। ওই বৈঠকেও মিল বন্ধেরই ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। ফলে শ্রমিক ও কর্মচারীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের  চীফ অব পার্সোনেল মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘চিনিকলগুলো এখনো বন্ধের সিদ্ধান্ত হয় নি। তবে সেদিকে যাচ্ছে মনে হচ্ছে। বিজেএমসির পাটকলগুলোর মতো গোল্ডেন হ্যান্ডশেকে গেলে কী পরিমাণ বাজেট প্রয়োজন হতে পারে তা জানতেই  তথ্যগুলো চাওয়া হয়েছে। সরকার যে কোনো সময় এসব তথ্য আমাদের কাছে চাইতে পারে বলে ধারণা করছি’।

উল্লেখ্য, ট্যারিফ কমিশনের এক সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতি কেজি চিনি উৎপাদনে খরচ হয় ৮৮ টাকা। আর, তা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।