Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন করল পুলিশ


ইউএনভি ডেস্ক:

প্রায় দেড় মাস আগের চাঞ্চল্যকর একটি হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন করেছে গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি)। কাশিমপুর থানার সারদাগঞ্জ হাজী মার্কেট এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া সুমন হত্যা মামলার ক্লু উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। স্ত্রীর পরকীয়ার জেরেই সুমন খুন হন বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

রবিবার পুলিশ সদরদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি বছরের ২১ এপ্রিল সকালে কাশিমপুরের সারদাগঞ্জ হাজি মার্কেট পুকুরপাড় এলাকার জামাল উদ্দিনের সেপটিক ট্যাংক থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের হাত, পা, মাথাবিহীন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। কাশিমপুর থানা পুলিশ ওই লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। পরে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কাশিমপুর থানায় একটি মামলা করা হয়। কাশিমপুর থানার মামলা নম্বর-১১, তারিখ-২২/০৪/২০২১ ইং ধারা-৩০২/২০১/৩৪।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মামলা হওয়ার পর জিএমপির পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি) (অপরাধ উত্তর) জাকির হাসানের তত্ত্বাবধানে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অপরাধ (উত্তর) বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) রেজওয়ান আহমেদের নেতৃত্বে কাশিমপুর থানা পুলিশ কাশিমপুর থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা চালায়। পরে গতকাল শনিবার ভোরে তনয় সরকার এবং আরিফা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যাকাণ্ডে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।নিহত সুমন মোল্লা বাগেরহাটের চিতলমারী থানার গোলা বরননী বাজার গ্রামের জাফর মোল্লার ছেলে। তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর থানার সারদাগঞ্জ হাজী মার্কেট (মাওলানা শফিউল্লাহর বাড়ির ভাড়াটিয়া) হিসেবে বসবাস করতেন।

গ্রেপ্তারকৃতদের স্বীকারোক্তি এবং দেখানো মতে সারদাগঞ্জ হাজী মার্কেট পুকুরপাড় ময়লার স্তূপ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতি ও করাত এবং চক্রবর্তী তেঁতুইবাড়ি মোজার মিলের সামনের ময়লার ভাগাড় থেকে নিহত সুমনের খণ্ডিত হাত, পা ও মাথাসহ পাঁচ টুকরা দেহাংশ গলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এছাড়া নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন আসামি তনয়ের দেখানো মতে তার বসত ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, সুমনের স্ত্রী আরিফার সঙ্গে আসামি তনয়ের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই নিয়ে নিহত সুমন আসামি তনয়কে কয়েকবার মারপিট করেন। এই কারণে তারা সুমনকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

ঘটনার দিন ১৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টার দিকে আরিফা সুমনকে দুধের সাথে ঘুমের ওষুধ খাওয়ান। পরে আরিফা আসামি তনয়কে ফোন করে ডেকে আনেন। পরে তারা দুজনে মিলে বালিশ চাপা দিয়ে সুমনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপর আরিফার বসতঘরের মধ্যে রেখে দেয়। পরদিন করাত দিয়ে মাথা, দুই হাত, দুই পা বিচ্ছিন্ন করে এবং চাপাতি দিয়ে পেট কেটে দেয়।

নিহত সুমনের হাত, পা ও মাথাবিহীন শরীর আরিফার ব্যবহৃত কাথা দিয়ে বেঁধে পার্শ্ববর্তী জামাল উদ্দিনের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়। দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন পাঁচটি অংশ পলিথিনে মুড়িয়ে চক্রবর্তী তেঁতুইবাড়ি মোজার মিলের সামনে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেয়।

গ্রেপ্তারকৃত তনয় সরকার ফরিদপুরের মধুখালী থানার নরকোনা গ্রামের আদিত্য সরকারের ছেলে এবং আরিফা বেগম দিনাজপুরের চিবিরবন্দর থানার নারায়ণপুর গ্রামের মৃত আশরাফ আলীর মেয়ে। তারা গাজীপুরের কাশিমপুর থানার সারদাগঞ্জ হাজি মার্কেট এলাকায় আলাদা বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।


Exit mobile version