Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

চিকিৎসকের যৌন লালসায় সহকারীর আত্মহত্যা!


নওগাঁ প্রতিনিধি:

নওগাঁয় কর্মস্থলেই এক ডাক্তারের যৌন লালসার শিকার হয়েছেন এক নারী। যৌন নিপীড়নের যন্ত্রণা সইতে না পেরে বিষ পানে আত্মহননের পথ বেছে নেন খাতিজা আকতার (৩০)। খাতিজা মারা যাবার পর তার ফোন রেকর্ড থেকে যৌন নিপীড়নের বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ায় মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ ডাক্তার হেলাল আহম্মেদ লিটনকে গ্রেফতার করেছে।

অভিযুক্ত হেলাল আহম্মেদ লিটন ও ভুক্তভোগী খাতিজা বেগম। ফাইল ছবি।

আলোচিত এ ঘটনা ঘটেছে নওগাঁ শহরের পাটালির মোড় এলাকায়। যৌন নিপীড়নের শিকার খাতিজা শহরতলীর আরজী নওগাঁ মধ্যপাড়ার রাজমিস্ত্রি জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী। ধর্ষক ডাক্তার হেলাল আহম্মেদের বাড়ী নড়াইল জেলার নড়াগাতী থানার কলা বাড়িয়া শিবপুর গ্রামে। তার বাবার নাম নজরুল ইসলাম সরদার।

নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল হাই ও খাতিজার স্বজনরা জানান, ৫ বছর আগে শহরের পাটালীর মোড়ে জনৈক শাহিন হোসেনের বাসার দুটি রুম ভাড়া নিয়ে সেখানে পাইলস্ কিউর সেন্টার খোলেন ডাঃ হেলাল আহম্মেদ। এখানে গত ৩ সপ্তাহ আগে আয়া কাম চেম্বার সহকারী হিসেবে চাকরি নেন এক সন্তানের জননী খাতিজা আকতার। গত ১৮ জানুয়ারী বিকেল ৫টার দিকে ডাক্তার হেলাল আহম্মেদ তার চেম্বারের ভিতরে খাতিজাকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করেন।

খাতিজার জা আয়েশা সিদ্দিকা জানান, ধর্ষণের শিকার হয়ে প্রাণচঞ্চল খাতিজা নীরব পাথর হয়ে যান। খাতিজার হঠাৎ করে নীরব হয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানার জন্য তার জা অনেক পীড়াপীড়ি করলে তিনি ধর্ষণের কথা জানান। এ লজ্জায় স্বামী, সন্তান বা অন্য কারও দিকে তাকাতে পারছিলেন না। এক পর্যায়ে তিনি তার স্বামীর ঘরে গত ২০ জানুয়ারী বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিষ পান করলে প্রথমে নওগাঁ সদর হাসপাতালে এবং পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে গত ২২ তারিখ মধ্যরাতে মারা যান খাতিজা।

খাতিজার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম জানান, ময়নাতদন্ত শেষে ২২ জানুয়ারি খাতিজাকে দাফনের পর খাতিজার মোবাইল ফোনে ওই ডাক্তার একাধিকবার ফোন করেন। কিন্ত আমি ফোন ধরিনি। কৌতুহল বশতঃ ফোন চেক করতে গিয়ে ফোনে পাওয়া যায় তাকে ধর্ষণের বর্ণনাসহ রেকর্ড। মোবাইল ফোনে খাতিজা বাড়ীওয়ালা (যে বাড়িতে ডাক্তারের চেম্বার) সাহিন হোসেনকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণের বিষয়টি বর্ণনা করেন।

পরে বিষয়টি নওগাঁ সদর থানায় অবহিত করলে পুলিশ খাতিজার বাবাকে বাদি করে এ বিষয়ে একটি মামলা নিয়ে শুক্রবার ডাক্তার হেলাল আহম্মেদকে গ্রেফতার করেন। ওই ডাক্তার আমার ৫ বছর বয়সী নাতনী জামিয়া খাতুনকে মা হারা করেছে। আমি তার উপযুক্ত শাস্তি চাই। একই কথা জানান খাতিজার মা সাহানাজ খাতুনও।

নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল হাই বলেন, মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ শুক্রবার ডাঃ হেলাল আহমেদকে তার পাটালীর মোড়ের চেম্বার থেকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের জিঙ্গাসাবাদে খাতিজাকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন ডাঃ হেলাল।


Exit mobile version