চিনি বেশি খেলে কমতে পারে শুক্রাণুর মান


ইউএনভি ডেস্ক:

আমাদের স্বাস্থ্যের বেশিরভাগ সমস্যার জন্য দায়ী করা হয় চিনিকে। প্রাত্যাহিক জীবনে চিনি যত কম খাওয়া হবে সুস্থতার মাত্রা তত বেশি আশা করা যেতে পারে। চিনি শরীরের অনেক ক্ষতির জন্য দায়ী। তবে এটা জেনে আরও সচেতন হবেন যে চিনি বেশি পরিমাণে খেলে শুক্রাণুর মান কমে যেতে পারে।

সুইডেনের লিংকোপিং ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণার প্রধান আনিতা ওস্ট জানিয়েছেন, ‘খাদ্যাভ্যাস শুক্রাণুর মৃত্যুর হারকে প্রভাবিত করে। খাদ্যাভ্যাসের প্রভাবে শুক্রাণুর ঠিক কোন অংশে পরিবর্তন আসছে সেটাও আমরা শনাক্ত করতে পারি। গবেষণায় আমরা দ্রুতগামী পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি যা খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে দৃশ্যমান হয়।’

গবেষকরা বলেন, ‘শুক্রাণুর মান নষ্ট হতে পারে পরিবেশগত ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রার বিভিন্ন প্রভাবকের কারণে। এদের মধ্যে স্থুলতা ও টাইপ টু ডায়াবেটিস অন্যতম।’

গবেষকরা মূলত আগ্রহী এপিজেনেটিক ফেনোমেনা নিয়ে, যেখানে শারীরিক গঠন ও জিনগত বৈশিষ্ট্যে পরিবর্তন আসে। এমনকি এই পরিস্থিতিতে জিনের উপাদান ও ডিএনএ সিকুয়েন্স এর পরিবর্তন না আসলেও তাদের বহিঃপ্রকাশ পরিবর্তীত হয়। কিছু ক্ষেত্রে এই এপিজেনেটিক পরিবর্তন বাবা-মায়ের কাছ থেকে শুক্রাণু কিংবা ডিম্বানুর মাধ্যমে সন্তানের মাঝে চলে যেতে পারে। এর জন্য দায়ী মূলত আরএনএ এর ক্ষুদ্রাংশ, টিএসআরএনএ যা বিভিন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণির মধ্যে বিদ্যমান।

অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ করলে মানুষের শুক্রাণুর আরএনএ ফ্রাগমেন্টসয়ে কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে কি-না সেটা দেখাই ছিল এই গবেষণার উদ্দেশ্য। এজন্য গবেষকরা পর্যবেক্ষণ করেন ১৫ জন স্বাস্থ্যবান, অধূমপায়ী পুরুষকে, যাদের প্রত্যেককে দুই সপ্তাহের খাবার একবারে দিয়ে দেন গবেষকরা।

গবেষকদের নির্ধারণ করে দেওয়া খাদ্যাভ্যাসটি ছিল নরডিক নিউট্রিশন রেকোমেন্ডেশন ফর হেলদি ইটিং মোতাবেক, তফাৎ ছিল শুধু একটি জায়গায়। দ্বিতীয় সপ্তাহে গবেষকরা তাতে চিনির মাত্রা বাড়িয়ে দেন। এই বাড়তি চিনি ছিল প্রতিদিন সাড়ে তিন লিটার কোমল পানীয় কিংবা ৪৫০ গ্রাম কনফেকশনারি খাবারের সমতুল্য। অংশগ্রহণকারীদের শুক্রাণুর মান ও অন্যান্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় গবেষণার শুরুর আগে, শুরুর প্রথম সপ্তাহ শেষে এবং দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষে।

গবেষণার শুরুতে অংশগ্রহণকারীদের এক তৃতীয়াংশের স্পার্ম মোটিলিটি কম ছিল। স্পার্ম মোটিলিটি হল নারীর প্রজননতন্ত্রে শুক্রাণুর স্বাভাবিক চলাফেরা করার ক্ষমতা। গবেষণার প্রথম সপ্তাহ শেষে গবেষকরা দেখেন সকল অংশগ্রহণকারীর স্পার্ম মোটিলিটি স্বাভাবিক মাত্রায় চলে এসেছে।


শর্টলিংকঃ