চীনের হংকং নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, টিয়ার গ্যাস


ইউএনভি ডেস্ক:

হংকংয়ে চীনের নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন চালুর প্রতিবাদে বিক্ষোভে নেমেছে হাজার হাজার মানুষ। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস, জলকামান ব্যবহার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আইনটিতে স্বাক্ষর করলে হংকংয়ে এটি কার্যকর হয়ে যায়।

বুধবার আইনটি কার্যকরের প্রথমদিনই এ বিক্ষোভ দেখিয়েছে হংকংবাসী। আইনটির আওতায় পুলিশ ১৮০ জনকে গ্রেফতারও করেছে। হংকংয়ের স্বাধীনতার দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে বুধবার তাইওয়ান নতুন দফতর খুলেছে।

ব্রিটিশ শাসন থেকে হংকংকে চীনের কাছে হস্তান্তরের ২৩তম বার্ষিকীতে বুধবার বিক্ষোভকারীরা হংকংয়ের স্বাধীনতা এবং শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার স্লোগান দিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভে নামে। পুলিশ তাদের ওপর মরিচের গুঁড়ার স্প্রে এবং ছররা গুলি ছুড়েছে।

মঙ্গলবার চীনের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের স্ট্যান্ডিং কমিটির ১৬২ জন সদস্যের সম্মতিতে নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন পাস হয়েছে।

এ আইনের আওতায় হংকংয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদ, কর্তৃপক্ষকে অবমাননা, সন্ত্রাসবাদ ও জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন করতে বিদেশি বাহিনীর সঙ্গে আঁতাত নিষিদ্ধ করাসহ এ ধরনের অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান করা হয়েছে।

আইনটির বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে চীনের প্রকাশিত নথিতে দেখা গেছে, জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গুরুতর অপরাধের জন্য বিচারে অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে এ আইনে। হংকং সরকার মঙ্গলবার রাত থেকেই আইনটি কার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছিল।

আইনটিকে হংকংয়ের বিশেষ স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতার জন্য হুমকি হিসেবে বর্ণনা করে আসছেন গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকর্মীরা।

আইনের প্রতিবাদে রাস্তায় নামা ৩৫ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমার জেলে যাওয়ার ভয় আছে। কিন্তু ন্যায়বিচারের জন্য আজ আমাকে রাস্তায় নামতে হয়েছে।’

বুধবার বিক্ষোভের সময় পুলিশ প্রথম এক বার্তায় নতুন আইনের আওতায় অপরাধ সংঘটনের ব্যাপারে বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করেছে।

জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরানোরও চেষ্টা চালায়। পরে পুলিশ জানায়, তারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিক্ষোভ এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য ১৮০ জনের বেশি মানুষকে গ্রেফতার করেছে। সেই সঙ্গে নতুন নিরাপত্তা আইনের আওতায়ও কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। টুইটারে আহত এক পুলিশ কর্মকর্তার ছবিও পোস্ট করেছে পুলিশ।

বলা হচ্ছে, ওই কর্মকর্তা বিক্ষোভকারীদের ছুরির আঘাতে আহত হয়েছেন। হংকংয়ে নিরাপত্তা আইন পাসের পর অ্যাকশন প্লানের অংশ হিসেবে তাইওয়ানে নতুন দফতর খুলেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন।

রাজধানী তাইপেতে অবস্থিত তাইওয়ান-হংকং অফিস ফর এক্সচেঞ্জ অ্যান্ড সার্ভিসেস রাজনৈতিক কারণে তাইওয়ানে আশ্রয়প্রার্থী হংকংবাসীর আশ্রয়ের আবেদনও দেখভাল করবে। গত বছর সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার হংকংয়ের মানুষ তাইওয়ানে গিয়েছিল।


শর্টলিংকঃ