চূড়ান্ত ট্রায়ালে চীনা ভ্যাকসিন করোনাভ্যাক


ইউএনভি ডেস্ক:

চূড়ান্ত পর্বের ট্রায়ালে রয়েছে চীনা ভ্যাকসিন ‘করোনাভ্যাক’। চীনের ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান সিনোভ্যাক বায়োটেক এটি তৈরি করছে। ইতোমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ভ্যাকসিনটি ইতিবাচক ফল দিয়েছে। এখন বৃহদাকারে উৎপাদনে যেতে কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্রের অপেক্ষায় তারা।


চীনের বৈশ্বিক টেলিভিশন নেটওয়ার্ক সিজিটিএন জানায়, সিনোভ্যাক দাবি করেছে, তাদের ভ্যাকসিনটি নিরাপদ এবং পরীক্ষায় ৯০ শতাংশ ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে। ভ্যাকসিনটি করোনাভাইরাসকে রুখে দিতে সক্ষম। এছাড়া মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্রুত বাড়িয়ে দিতে ভূমিকা রাখবে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে এটি দুই সপ্তাহের মধ্যে শরীরে কার্যকর অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে। এছাড়া ভ্যাকসিনটি বানরের ওপর প্রয়োগে আশাব্যঞ্জক ফল পাওয়া গেছে। এ কারণে পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনটির ব্যাপক উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

দুই ধাপের ওই ট্রায়ালের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ৭৪৩ জন স্বাস্থ্যবান স্বেচ্ছাসেবী। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ছিলেন ১৪৩ জন, আর দ্বিতীয় ধাপে ৬০০ জন। তাদের সবার বয়স ১৮ থেকে ৫৯ বছরের মধ্যে। এতে ৯০ ভাগ মানুষের শরীরে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।

গত শনিবার সংস্থাটি পরীক্ষার প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশের সময় জানিয়েছে, প্রথম ধাপ ও দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়ালে কোনো মারাত্মক বিরূপ প্রভাবের খবর পাওয়া যায়নি। করোনাভাইরাসের একটি মৃত সংস্করণ ব্যবহার করে সিনোভ্যাকের ভ্যাকসিনটি তৈরি করা হচ্ছে। চীন থেকে এখন পর্যন্ত যে পাঁচটি পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন মানবদেহে পরীক্ষার জন্য চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেছে, সিনোভ্যাকের ভ্যাকসিনটি এর মধ্যে অন্যতম।

সিনোভ্যাকের গবেষক লুও বৈশানের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ভ্যাকসিনটি সাফল্যের বিষয়ে তিনি কতটা আশাবাদী? জবাবে তিনি বলেন, এটা অবশ্যই সফল হবে। ৯৯ শতাংশ নিশ্চিত। সিনোভ্যাক জানায়, ট্রায়ালে কার্যকারিতা প্রমাণিত হওয়ায় ব্যাপকভিত্তিক উৎপাদনে যেতে এখন শুধু কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্রের অপেক্ষায় রয়েছে তারা। অনুমতি পেলে করোনা মোকাবেলায় বছরে ১০ কোটি ডোজ করোনাভ্যাক উৎপাদনের জন্য তাদের প্রস্তুতি রয়েছে।

সিনোভাকের ভ্যাকসিনটির তৃতীয় ও চূড়ান্ত ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চীনের পরীক্ষাগারের পাশাপাশি ব্রাজিলেও করা হবে। এ ব্যাপারে ব্রাজিলের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসা গবেষণা কেন্দ্র ‘দ্য বাটান্টান ইন্সটিটিউট’ সিনোভ্যাক বায়োটেকের সঙ্গে চুক্তি করেছে। বৃহস্পতিবার এই চুক্তি সম্পর্কে ঘোষণা দিয়েছে দ্য বাটান্টান ইন্সটিটিউট।

বাটান্টানের প্রেসিডেন্ট দিমাস কোভাস এবং সাও পাওলোর গভর্নর জোয়াও দোরিয়া বলেছেন, চীনের পরীক্ষাগারে তৈরি করোনার সম্ভাব্য ওই ভ্যাকসিনটি ইতোমধ্যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে এবং আগামী বছরের জুনের মধ্যে লাখ লাখ ব্রাজিলিয়ানকে টিকা দেয়ার জন্য তা প্রস্তুত হতে পারে। জানা যায়, ২০০৯ সালে সোয়াইন ফ্লুর টিকা বাজারজাত করে আলোচনায় আসে সিনোভ্যাক বায়োটেক। তখন প্রথম কোনো ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি হিসেবে এ টিকা বাজারে আনতে সক্ষম হয় প্রতিষ্ঠানটি।


শর্টলিংকঃ