চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতেই কেটে নেয়া হলো যুবকের হাত


নিজস্ব প্রতিবেদক :

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে রুবেল আলী (২৮) নামে এক যুবকের দুই হাত কব্জি থেকে কেটে দেওয়া হয়েছে। উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফয়েজ উদ্দিনের নির্দেশে তার ক্যাডাররা  হাত  কেটেছেন বলে অভিযোগ করেছেন রুবেল আলী।

রামেক হাসপাতালে রুবেল

এমন নির্মম পাশবিকতার শিকার রুবেলের বাড়ি নয়ালাভাঙ্গা ইউপির রানীনগর গ্রামে। তার বাবার নাম খোদাবক্স। রুবেল একজন আম ব্যবসায়ী। বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উজিরপুর গ্রামে চেয়ারম্যান ফয়েজ উদ্দিনের ব্যক্তিগত কার্যালয়ের পেছনের ফাকা মাঠে রুবেল আলীর দুই হাতের কব্জি কেটে ফেলা হয়।

বৃহস্পতিবার ভোররাত ৪টার দিকে রুবেলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি এখন হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। সেখানে কথা হয় রুবেলের সাথে। তিনি জানিয়েছেন, চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে উজিরপুর গ্রামের হোসেন আলী ও জিয়া নামের দুই ব্যক্তি ছুরি দিয়ে তার হাত কেটে দিয়েছেন। তবে চেয়ারম্যানের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত বিরোধ নেই।

রুবেল জানান, তার চাচাতো ভাই আবদুস সালাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক। শিবগঞ্জ সীমান্তের চরপাকা গরুর খাটাল নিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ও ইউপি চেয়ারম্যান ফয়েজ উদ্দিনের সঙ্গে তার বিরোধ রয়েছে। আর চাচাতো ভাই হিসেবে সালামের সঙ্গে রুবেলের ভাল সম্পর্ক। আর এ কারণেই চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার ক্যাডাররা হাত কেটেছে।

তিনি আরও জানান, বুধবার রাত ১০টার দিকে রুবেল এবং তার দুই বন্ধু রবিউল ও হাবু চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত কার্যালয়ের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। চেয়ারম্যান তখন তার লোকজন দিয়ে তাদের আটকান। এরপর চেয়ারম্যানের পাশেই তাদের একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়।

রুবেল ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ জানালে চেয়ারম্যান তাকে চুপচাপ বসে থাকতে বলেন। এরপর রাত ২টার দিকে শুধু রুবেলকে হাত বেধে স্কুলের পেছনে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন চেয়ারম্যান তার হাতে কেটে ফেলার নির্দেশ দেন। এরপর হোসেন আলী ও জিয়া তার দুই হাত কেটে ফেলেন। ঘটনার পর চেয়ারম্যান ও তার ক্যাডাররা রুবেলকে ফেলে রেখে চলে যান। পরে চিৎকার শুনে রুবেলের বন্ধুরা তাকে উদ্ধার করেন। এরপর তারা রুবেলকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

স্থানীয়রা জানান, ২০১৭ সালে তার ইউপির ৯ জন সদস্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন যে, চেয়ারম্যান তাদের গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছেন।

এলাকার এক আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের একটি মামলায় এ বছরের মার্চে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছিল। রুবেলের হাত কেটে ফেলার বিষয়ে কথা বলতে একাধিকবার ফোন করা হলেও চেয়ারম্যান ফয়েজ উদ্দিন ধরেননি।

শিবগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম জানান, ঘটনার খবর শুনে সকালে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে এ নিয়ে কাউকে আটক করা যায়নি। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা তারা তদন্ত করে দেখছেন। মামলা হলে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


শর্টলিংকঃ