ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি রোধে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের বিশেষ নির্দেশনা


ছেলেধরা গুজবের কারণে সারা দেশে গণপিটুনিতে হত্যা করা হচ্ছে নিরপরাধ সাধারণ মানুষদের। যা দেশের স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। গুজবে কান দিয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির অপচেষ্টা রুখে দিতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে। কয়েকটি স্তরে এই নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।

২১ জুলাই (সোমবার) এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গণপিটুনি দিয়ে হত্যা এবং গুজব ছড়িয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করা ফৌজদারি অপরাধ। গুজব ছড়িয়ে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা বন্ধে সংশ্লিষ্ট ইউনিট/জেলা পুলিশ সুপারগণ কর্তৃক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো-

ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি রোধে নির্দেশিত ব্যবস্থাসমূহ:

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক
১. দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা
২. সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক গভর্নিং বডির সদস্য এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময় সভা করে অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ
৩. ছুটির পর ছাত্র/ছাত্রীদের তাদের অভিভাবকদের মাধ্যমে স্কুল ত্যাগের বিষয়টি শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারী কর্তৃক নিশ্চিত করা
৪. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার লক্ষ্যে স্কুল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ক্যাম্পাস ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সিসি টিভি স্থাপন এবং সচল রাখার উদ্যোগ গ্রহণ

জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রচারণা
১. প্রতিটি এলাকায় ছেলেধরা সংক্রান্ত গুজবে কান না দিতে এবং পুলিশকে তাৎক্ষণিক জানানোর জন্য মাইকিং করা, লিফলেট বিতরণ ও পোস্টারিং করা
২. এলাকার জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, সুধী সমাজ, কমিউনিটি পুলিশিং এর প্রতিনিধি এবং জনসাধারণদের নিয়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে ছেলেধরা সংক্রান্ত গুজবের বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা
৩. আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করার বিষয়ে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করা
৪. প্রতিটি মসজিদে ইমামদের মাধ্যমে ছেলেধরা সংক্রান্ত গুজবে বিভ্রান্তি সৃষ্টি রোধকল্পে বক্তব্য প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা
৫. মেট্রোপলিটন ও জেলা শহরে অবস্থিত বস্তি এলাকায় বিশেষ নজরদারি রাখা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মনিটরিং

১. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন- ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, ব্লগ এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছেলেধরা সংক্রান্ত বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট, মন্তব্য বা গুজব ছড়ানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে
ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও পত্রিকায় গণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
গুজবে কান না দিয়ে এবং ছেলেধরা বিষয়ে আতঙ্কিত না হয়ে জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া স্থানীয় স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলোতে সার্বক্ষণিক প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশ কমিশনার, ডিএমপি, এআইজি (মিডিয়া) বাংলাদেশ পুলিশ, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এবং পুলিশ সুপার (সকল) জরুরি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
ইউনিট প্রধানগণ কর্তৃক নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের সংশ্লিষ্ট সকল পুলিশ কর্মকর্তা/সদস্যকে বর্ণিত বিষয়সমূহ অবহিত করে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে হত্যা রোধে গৃহীত আইনানুগ ব্যবস্থা সংক্রান্ত প্রতিবেদন আগামী ৩ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রেরণের জন্য পুলিশ সুপারদের নির্দেশও দেয়া হয়েছে।


শর্টলিংকঃ