টিকটক হৃদয়ের ৪ সহযোগী ঢাকায় আটক


ইউএনভি ডেস্ক: 

ঢাকার মগবাজারের এক তরুণীকে ভারতে পাচারের পর নির্যাতনের ঘটনায় অন্তত ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এদের মধ্যে দু’জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।


এদের একজন হলেন আশরাফুল মণ্ডল ওরফে রাফি। ভারতের কয়েকটি শহরে তিনি নিজেকে ভারতীয় ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দেন। ২৯ বছরের এই যুবক ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতে নারী পাচারে জড়িত। তার পিতার নাম আইন উদ্দিন মণ্ডল। তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা থানার পশ্চিমপাড়া।

আটককৃত অপর যুবকের নাম আব্দুর রহমান শেখ। তবে ভারতে তিনি আরমান নামে বেশি পরিচিত। টিকটক হৃদয় এবং রাফি চক্রের অন্যতম সদস্য রহমান শেখের বয়স মাত্র ২৫ বছর। তার পিতার নাম জামাল শেখ। গ্রামের বাড়ি যশোরের বেনাপোল থানার পোড়াবাড়ি। বাকি ৩ জনের বিস্তারিত নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। আজ এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তরফে সংবাদ সম্মেলনে আটককৃতদের বিস্তারিত প্রকাশ করা হতে পারে। ঢাকার বাইরে থেকে আটকের পর তাদের ঢাকার একটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান কার্যালয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে।

প্রসঙ্গত ভারতের বেঙ্গালুরুতে একটি পাচারকারী চক্রের হাতে বাংলাদেশি এক তরুণীর যৌন নিপীড়নের ভিডিও ফাঁসের পর তোলপাড় শুরু হয়। একপর্যায়ে নিপীড়ক ৩ যুবক এবং ১ কিশোরীকে গ্রেফতার করে ভারতীয় পুলিশ। এদের সবাই বাংলাদেশি। ঘটনার পর রিফাদুল ইসলাম হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় নামের এক যুবকের নাম বেরিয়ে আসে। যিনি টিকটক অ্যাপসে ভিডিও বানানোর আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে ভারতসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে নারী পাচার করে আসছিলেন। টিকটক হৃদয় ঢাকার মগবাজারের বাসিন্দা হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেন নির্যাতনের শিকার তরুণীর বাবা।

সূত্র বলছে, টিকটক হৃদয়ের নারী পাচার চক্রের মূল হোতা আশরাফুল মণ্ডল ওরফে রাফি। তিনি একাই এখন পর্যন্ত কয়েকশ’ তরুণীকে ভারতের পতিতালয়ে পাচার করেন। বছরের বেশিরভাগ সময় তিনি ভারতেই অবস্থান করেন। রাফির হাতে ভারতের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত জাল কাগজপত্র রয়েছে।

সূত্র বলছে, ভারতীয় পুলিশের হাতে আসা একটি ভিডিওতে রাফিকে কোকেন সেবন করতে দেখা যায়। এর সূত্র ধরে তাকে চিহ্নিত করা হয়। তিনি ভারতে পাচারের শিকার তরুণীদের কোকেনসহ বিভিন্ন মাদক সেবনে বাধ্য করেন। কারণ উচ্চমাত্রায় মাদক সেবনের পর পাচারের শিকার নারীদের অনেকেই বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েন। হিতাহিত জ্ঞানশূন্য অবস্থায় দিনের পর দিন তারা মুখ বুজে পাশবিক নির্যাতন সহ্য করে যান। একপর্যায়ে তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

পুলিশ বলছে, টিকটক হৃদয়ের হাতে ভারতীয়দের ব্যবহৃত জাল আধার কার্ড এবং রেশন কার্ড পাওয়া গেছে। এছাড়া ভুক্তভোগী তরুণীকেও একটি আধার কার্ড করে দেয় ভারতীয় অংশের দালালরা।

 


শর্টলিংকঃ