টিকা স্থগিতে হাম নিয়ে ইউনিসেফের সতর্কবার্তা


বিশেষ প্রতিবেদক :

দেশে টিকাদান কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করা না গেলে শিশুরা ব্যাপকহারে হামে আক্রান্ত হতে পারে-এমন সতর্কবার্তা দিয়েছে ইউনিসেফ। করোনা পরিস্থিতিতে অধিকাংশ এলাকাতেই আপাতত টিকা দেয়া বন্ধ। তাই বেড়েছে উদ্বেগও। তবে এই পূর্বাভাসকে উড়িয়ে দিচ্ছেন সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি-ইপিআইয়ের সঙ্গে জড়িত চিকিৎসকরা

বছর তিনেক ধরে হাম নিয়ন্ত্রণে খানিকটা পিছিয়ে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় হাম পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি সতর্কতার কথা জানিয়েছে ইউনিসেফ। সংস্থাটি বলছে, করোনা মহামারির কারণে ভ্যাকসিন সরবরাহ ও মজুদ  বিপজ্জনকমাত্রায় কমেছে। এমন পরিস্থিতিতে শিশুরা জীবনরক্ষাকারী ভ্যাকসিন না পেলে, স্বাস্থ্যখাতে আরেকটি জরুরি অবস্থার মুখোমুখি হতে হবে।

ইউনিসেফ-বাংলাদেশ’র টিকা বিশেষজ্ঞ ডা. মেরিনা অধিকারী বলেন, যদি শিশুরা টিকার আওতায় না আসে তাহলে অবশ্যই ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। এরমধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে হাম। আমাদের দেশে হামের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। আমরা যদি টিকা দিয়ে বাচ্চাদের সুরক্ষা দিতে না পারি তবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে। করোনা কারণে সব জায়গাতেই টিকা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। সেজন্য শিশুরা হাম বা নিউমোনিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

জানা গেছে, চলতি বছরেই সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ ও যশোরসহ বিভিন্ন জায়গায় হামের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় ১৮ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত দেশজুড়েই টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনার কথা ছিল। এ কর্মসূচির আওতায় দশ বছর বয়স পর্যন্ত ৩ কোটি ৪০ লাখ শিশুকে হামের টিকা দেয়ার কথা। কিন্তু করোনার কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। তবে এ নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়, স্বাস্থ্য বিভাগ।

রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. মহা. এনামুল হক জানান, স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দুরত্ব মেনে টিকা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে করোনা সংক্রমিত এলাকায় টিকা দেয়া আপাতত বন্ধ আছে। তবে করোনামুক্ত এলাকাতে নিয়মিত কার্যক্রম চলছে। তবে এখন টিকা দেয়া না হলেও কোনো সমস্যা নেই। পরবর্তীতে দেয়া হবে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।

সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিও হোঁচট খেয়েছে করোনায়। জন্মের প্রথম দিন যক্ষ্মারোধী বিসিজি টিকা ও দু’বছরের মধ্যে বাকি টিকাগুলো পেয়ে থাকে শিশুরা। এ টিকাও বেশির ভাগ এলাকাতেই দেয়া যাচ্ছে না।

ইপিআই রাজশাহীর সুপারিনটেনডেন্ট নূর মোহাম্মদ শিডিউল অনুযায়ী টিকা অর্থাৎ শিশুর জন্মের পর পরই বিসিজি টিকা দেয়ার কথা। কিন্তু এখন করোনার কারণে হয়তো তা সম্ভব হচ্চে না। এতে কিছুটা ইমিউনিটির ঘাটতি হতে পারে।তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও এগুলো দিলেও সমস্যা হওয়া কথা নয়।

এদিকে নিউমোনিয়া মোকাবেলায় আরো পদক্ষেপ নেয়া না হলে ২০৩০সালের মধ্যে দেশে এক লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি শিশু মারা যেতে পারে-গেল জানিুয়ারিতে এমন সতর্কতার কথাও জানিয়েছিল ইউনিসেফ।


শর্টলিংকঃ