টিলা আর সবুজেঘেরা অপরূপ সৌন্দর্যের বাবুডাইং


তারেক রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ :

দূর থেকে তাকালে মনে হবে বরেন্দ্রের ঢেউখেলানো বনভূমি। গাছের পরে গাছ। মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে শান্ত জলের আঁকাবাঁকা খাড়ি। কাছে এলে মন হারিয়ে যায় টিলার চূড়ায়। পাখিদের কিচির-মিচির শব্দে মুখরিত। ঘন সবুজ ঘাসে ঢাকা অদ্ভুত সুন্দর উঁচু-নিচু এই ভূমির তুলনা নেই।এই অপূর্ব বনভূমির, নাম ‘বাবু ডাইং।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে বরেন্দ্রের এ বনভূমি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পূর্ব দিকে এই বনভূমি। মোট আয়তন ৯৬৬ দশমিক ৪৫ একর। তবে বনভূমির ভেতরের সমতল অংশে স্থানীয় ব্যক্তিমালিকানাধীন কিছু চাষাবাদের জমি রয়েছে।তারা চাষাবাদ করে থাকেন।

সম্প্রতি বাবু ডাইং বনভূমিতে গিয়ে দেখা যায়, পাকা রাস্তা একেবারে বন পর্যন্ত চলে গেছে। শেষ মাথায় একটা গোলচত্বর করা হয়েছে। চারদিকে শুধু গাছ আর গাছ। কোথাও জনমানবের সাড়া নেই। গাছে গাছে পাখিদের কিচির মিচির শব্দ কানে ভেসে আসছে। গোলচত্বরটি মূল ভূ-খন্ড থেকে অনেক উঁচুতে। সেখান থেকে পুর্ব দিকের টিলার মতো উঁচু-নিচু ভূমিটিই বাবু ডাইং নামে পরিচিত। ওই চত্বর থেকে তাকালে মনে হয়, ঢেউখেলানো অদ্ভুত এক বন। মাঝখানে একটা বড় খাড়ি। বাবু ডাইংয়ে যাওয়ার জন্য খাড়ির ওপরে একটি কালভার্ট তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। কালভার্ট পার হয়ে দুপাশের ঘাসের মাঝ দিয়ে পায়ে হাঁটা পথ।

বাবুডাইং এলাকায় বসবাসরত কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দা জানান,বাবুডাইং সুন্দর একটি পিকনিক কর্ণনার হয়ে উঠেছিল। প্রতিদিন দুরদুরান্ত থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ও কয়েক জেলার বিনোদন পিয়াসীরা পরিবার পরিজন নিয়ে এখানে ঘুরতে আসতো। তাদের পদচারণা ও মাইকে গান-বাজনার শ্বব্দে পুরো এলাকা মুখরিত থাকতো।কিন্ত গত কয়েক বছর যাবত এখানে কেউ আর আসে না। কারণ দর্শনাথীদের পরিবার পরিজন নিয়ে এসে বখাটেদের হাতে বিভিন্ন ভাবে নাজেহাল হতে হতো। তারপর হতেই আর দেখা মেলে না ঘুরতে আসা মানুষজনের। তাই নীরবেই রয়েছে এই অপরুপ সৌন্দর্যের বাবুডাইং।

চাঁপাঁইনবাবগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার আমনুরা ঝিলিম ইউনিয়েন চেয়ারম্যান তসিকুল ইসলাম জানান, ঝিলিম ইউপির শেষ সিমানায় চটিগ্রাম, বিলবলটা ও বাবুডাইং মৌজায় ৩০০ একর আয়তনের গড়ে উঠে বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থানটি। এটি সরকারী সম্পত্তি। গত কয়েক বছর ধরে বিনোদন পিয়াসীদের পদচারণা বেড়েই চলেছিল।

তিনি আরও জানান, বরেন্দ্র ভূমির একটি জায়গাকে সংরক্ষিত ঘোষণা করতে হলে বাবু ডাইংকেই করতে হবে। এমন অসাধারণ ভূ-সৌন্দর্য বরেন্দ্র অঞ্চলে আর দ্বিতীয়টি নেই। এটি সরকারের হাতেই রয়েছে। শুধু সংরক্ষিত ঘোষণা করতে হবে।


শর্টলিংকঃ