ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয়ে তদন্ত কমিটি : ইন্সপেক্টর বরখাস্ত


বিশেষ প্রতিবেদক :

নির্ধারিত সময়ের সাড়ে ৩৩ঘণ্টা বিলম্বে ট্রেন ছাড়ার নতুন নজির সৃষ্টি হয়েছে। এই সিডিউল বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানে গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। এই কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। আর সেবা নিশ্চিত করতে রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট সকল শাখায় জারি করা হয়েছে সতর্কবার্তা। এরই মধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে একজন স্যানিটারি ইন্সপেক্টরকে।

পশ্চিমাঞ্চলে রেলের নতুন মহাব্যবস্থাপক হিসেবে যোগদানের পর বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ‘সারপ্রাইজ ইন্সপেকশনে’ রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে যান হারুন অর রশীদ। তিনি পরিচয় গোপন করে স্টেশনের পরিবেশ ঘুরে দেখেন। ওয়েটিং রুমের বেসিন, টয়লেট ও পরিবেশ নোংরা থাকায় তাৎক্ষণিক স্যানেটারি ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলামকে বরখাস্তের নির্দেশ দেন।

এদিকে, ঈদের আগে ঘরমুখী মানুষ ট্রেনে উঠে পড়েছিলেন সিডিউল বিপর্যয়ে।পড়তে হয়েছিল চরম দুর্ভোগে। তবে আশা ছিল- ঈদশেষে কর্মস্থলে ফেরার সময় এমন অবস্থা আর থাকবে না। কিন্তু সর্বকালের রেকর্ড ভেঙেছে পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনগুলোর সময়সুচিতে। ঈদের পরও লালমনিরহাটের আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকার উদ্দেশে ছেড়েছে নির্ধারিত সময়ের ৩৩ঘণ্টা পর। আর রংপুর এক্সপ্রেস ২২ ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়ে। রেলের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমাঞ্চলের স্টেশন থেকে কত তারিখে কোন ট্রেন কত ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়েছে।বর্তমানেও পশ্চিমাঞ্চলের সকল জেলার আন্তঃনগর ট্রেনগুলো এখনো চলছে ২ থেকে ৫ঘণ্টা বিলম্বে।

 পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের  স্টেশন ম্যানেজার মো. আব্দুল করিম বলছেন, ঈশ্বরদী থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন। ঢাকার সাথে উত্তরাঞ্চলে যোগাযোগে ২৪ঘণ্টায় ২৪টি ট্রেন চালানোর সক্ষমতা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। কিন্তু বর্তমানে চলাচল করছে ৪৪টি ট্রেন। আর বিরতিহীন ট্রেন চলে তিনটি। এমন জটের মধ্যে বিরতিহীন ট্রেনগুলোকে পারাপারে অগ্রাধিকার দিতে হচ্ছে। ফলে অন্য সকল ট্রেনই পড়ছে বিলম্বের কবলে।

তবে এই নজিরবিহীন সিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনায় পশ্চিমাঞ্চল সদর দপ্তরে প্রতিদিনই দফায় দফায় বৈঠকে বসছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটিও। রেলসেবায় কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর গাফিলতি পেলে কোনো ছাড় দেয়া হবে না-এমন হুঁশিয়ারি জারি করে সকল শাখায় পাঠানো হয়েছে চিঠি।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের নবনিযুক্ত  মহাব্যবস্থাপক  মো. হারুন অর রশীদ ইউনিভার্সাল২৪নিউজকে বলেন,  সরকারের নির্দেশনা রয়েছে যাতে যাত্রীরা কোনোভাবেই হয়রানি বা দুর্ভোগে না পড়েন। এজন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।  কয়েক দফা বৈঠক করেছি। সিডিউল বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানে পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুনকে প্রধান করে  ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি খতিয়ে দেখছে কী কারণে এমন বিপর্যয় ঘটেছে। তারা আজকালের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে।

তবে ঈদের আগে যমুনায় বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বে ও ঈদের পর কোর্টচাঁদপুরে ট্রেন লাইনচ্যূতের ঘটনার প্রভাব পড়েছে গোটা পশ্চিমাঞ্চলে। একারণে সময়সুচি মেনে ট্রেন চালানো যাচ্ছে না। তবে প্রতিটি ট্রেন সাপ্তাহিক ডেঅফ পেলে সিডিউলে শৃঙ্খলা ফিরবে বলেও জানান তিনি।


শর্টলিংকঃ