Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

ড্রিলিংয়ে বাধা, সুড়ঙ্গে আটকে পড়াদের উদ্ধারে আরও বিলম্ব


ইউএনভি ডেস্ক:

ভারতের উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধারে আবারও বাধার মুখে পড়েছেন উদ্ধারকারী দল। বৃহস্পতিবার রাতে আটকে পড়া শ্রমিকদের থেকে কয়েক মিটার দূরত্বেই বন্ধ হয়ে যায় উদ্ধারকাজ। যে ড্রিলিং মেশিন দিয়ে সুড়ঙ্গের মাটি কাটা হচ্ছিল তাতে সমস্যা দেখা দেওয়ায় ড্রিলিং কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করতে হয়। এছাড়া যে কাঠামোর উপর দাঁড় করিয়ে যন্ত্রটিকে চালানো হচ্ছিল তাতেও ফাটল দেখা দেয়। ধসে পড়া সুড়ঙ্গ থেকে ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধারে আরও কিছুটা বিলম্ব হবে।

এনডিটিভির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) সৈয়দ আতা হাসনাইনের মতে, আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারের জন্য অনুভূমিকভাবে ড্রিলিং কার্যক্রমে অতিরিক্ত বাধা আসতে পারে। কাজটি চ্যালেঞ্জিং, তাই উদ্ধার অভিযানের জন্য একটি সময়সীমার ভবিষ্যদ্বাণী করাও অযৌক্তিক।

তিনি জানান, আটকে পড়া প্রত্যেক শ্রমিকের জন্য একটি করে মোট ৪১টি অ্যাম্বুলেন্স টানেলের পাশে রাখা হয়েছে। গুরুতর আহত শ্রমিকদের বিমানে নেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) মহাপরিচালক অতুল কারওয়াল জানিয়েছেন, ধসে পড়া টানেলের নিচে আটকেপড়া ৪১ জন শ্রমিককে একটি বড় পাইপের মাধ্যমে এক এক করে চাকাযুক্ত স্ট্রেচারে বের করে আনা হবে। এখন এই স্ট্রেচার তাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য ড্রিল করা হচ্ছে। এনডিআরএফ কর্মীরা পাইপের মাধ্যমে স্লাইড তৈরি করবে। একবার আটকে পড়াদের কাছে পৌঁছলে তারা স্ট্রেচার ব্যবহার করে একের পর এক শ্রমিককে পাঠাবে।

তিনি জানান, প্রত্যেক শ্রমিককে সাবধানে স্ট্রেচারে তোলা হবে যাতে তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঢালাই করা পাইপের ধাতুর নিচে আটকে না যায়।সুড়ঙ্গের ভেতরে বুধবার রাতেই ঢুকে পড়েছিলেন ২১ জন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর উদ্ধারকারী। সংবাদমাধ্যমে বলাও হয়েছিল, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার মধ্যে শ্রমিকদের সুড়ঙ্গ থেকে বার করে আনা হবে। কিন্তু তা করা সম্ভব হয়নি। এখনও কয়েক মিটার খোঁড়া বাকি আছে। বুধবার রাতে ধ্বংসস্তূপ খুঁড়তে খুঁড়তে সামনে চলে আসে লোহার রড। খননযন্ত্র দিয়ে তা সরানো যায়নি। ফলে উদ্ধারকাজ বাধা পায়।

রড কেটে রাস্তা ফাঁকা করতে আরও কয়েক ঘণ্টা সময় লাগবে বলে জানানো হয়। রডটি কাটতেই বেগ পেতে হয়েছে উদ্ধারকারীদের। এছাড়া একবার কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছিল। টানা খুঁড়তে খুঁড়তে যন্ত্র অতিরিক্ত গরম হয়ে উঠেছিল। ফলে তা ঠাণ্ডা করার জন্য আরও কিছুটা সময় লাগে।

সংবাদ সংস্থা এএনআই জানায়, অবশেষে লোহার রডটি কেটে সরানো গেছে। আটকে পড়া শ্রমিকদের সঙ্গে উদ্ধারকারীদের দূরত্ব আর মাত্র ৬ মিটার। এরপর দ্রুত কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু তারপরেই আবার প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দেয়।

গত ১২ নভেম্বর উত্তরকাশী জেলার ব্রহ্মতাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কের ওপর সিল্কিয়ারা এবং ডন্ডালহগাঁয়ের মধ্যে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গের একাংশ ধসে পড়ে। সুড়ঙ্গটি সাড়ে আট মিটার উঁচু এবং প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ। ভাঙা সুড়ঙ্গের ভেতরেই প্রায় ৬০০ মিটার ধ্বংসস্তূপের পেছনে আটকে পড়েছিলেন শ্রমিকেরা। ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে খুঁড়ে সেই দূরত্ব কমানোর চেষ্টা চলছে। সেই ঘটনার ১৩ দিন পেরিয়ে গেছে।সুড়ঙ্গের কাছেই তৈরি করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর অস্থায়ী দপ্তর। উদ্ধারকাজে নজর রাখতে সেখানেই সারা রাত থাকবেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী।

 


Exit mobile version