ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে: ব্যয় বাড়ছে ৩ খাতে


ইউএনভি ডেস্ক:

পরামর্শকসহ বিভিন্ন অংশের ব্যয় বাড়ছে ঢাকা ‘সাপোর্ট টু এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি’ প্রকল্পে। তবে এ জন্য বাড়তি অর্থের প্রয়োজন হবে না। অর্থাৎ প্রকল্পের আওতায় যে বরাদ্দ রয়েছে সেখান থেকেই এ ব্যয় মেটানো হবে। অন্য খাতে ব্যয় কমে যাওয়ায় সেই টাকা বাড়তি প্রয়োজনীয় অংশে ব্যয় করা হবে। এজন্য আন্তঃঅঙ্গ ব্যয় সমন্বয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর অনুমোদন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ১৭ জুন অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য শামীমা নার্গিস। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রকল্পটির অগ্রগতি সম্পর্কে সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, শুরু থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রকল্পের আওতায় ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ৫১৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা (সম্পূর্ণ সরকারি তহবিলের), যা অনুমোদিত প্রথম সংশোধিত ব্যয়ের ৫২ শতাংশ। এছাড়া প্রকল্পটির বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে ৬০ শতাংশ।

প্রক্রিয়াকরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদ্য সাবেক হওয়া প্রধান মো. এনায়েত হোসেন যুগান্তরকে বলেন, এই প্রস্তাবটি একনেক পর্যন্ত যেতে হবে না।

কেন না, যে কোনো প্রকল্পের আন্তঃঅঙ্গ ব্যয় সমন্বয়ের ক্ষমতা একবার রয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হাতে আর একবার পরিকল্পনা কমিশনের হাতে। প্রস্তাব পাওয়ার পর পর্যালোচনা বা পিইসি সভা পরবর্তীতে অনুমোদন দিয়ে থাকেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধান।

প্রকল্পটির আন্তঃঅঙ্গ ব্যয় সমন্বয়ের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, পরামর্শক সেবা (ইন্ডিপেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার) খাতের ব্যয় ১৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা বেড়েছে।

এছাড়া অন্যান্য পরামর্শক খাতের ব্যয় ২৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা, ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ খাতে ৭৬১ কোটি টাকা, ইউটিলিটি স্থানান্তর খাতে ১২০ কোটি টাকা বেড়েছে এবং পুনর্বাসন খাতে ৯২১ কোটি টাকা কমে যাওয়ায় আন্তঃঅঙ্গ ব্যয় সমন্বয় করতে হচ্ছে। সূত্র জানায়, পিইসি সভায় যেসব বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- প্রথম সংশোধিত প্রস্তাব অনুযায়ী ৪০০ জনমাস পরামর্শক সেবা (ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার) খাতে ৩০ কোটি টাকার ব্যবস্থা করা রয়েছে।

জনমাস অপরিবর্তিত থাকলেও এ খাতে সাড়ে ১৫ কোটি টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এপ্রিল পর্যন্ত ২০০ জনমাসের জন্য এ খাতে ১৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।

অবশিষ্ট ২০০ জনমাসের জন্য আনুপাতিক হারে সমপরিমাণ অর্থাৎ ১৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকার প্রয়োজন হওয়ার কথা। সে হিসাবে মোট ৩৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু এ খাতে প্রস্তাব করা হয়েছে মোট সাড়ে ৪৫ কোটি টাকা।

এছাড়া প্রকল্পটির সংশোধিত প্রস্তাবে ২ হাজার ৪০ জনমাস ও অন্যান্য পরামর্শক সেবা খাতে ৮৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। জনমাস অপরিবর্তিত থাকলেও এ খাতে অতিরিক্ত সাড়ে ২৪ কোটি টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

এপ্রিল পর্যন্ত ১ হাজার জনমাসের জন্য ব্যয় হয়েছে ৪১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। বাকি ১ হাজার ৪০ জনমাসের জন্য আনুপাতিক হারে সমপরিমাণ অর্থাৎ ৪৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা প্রয়োজন হওয়ার কথা। ফলে এ খাতে মোট ৮৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকার প্রয়োজন হবে। কিন্তু প্রস্তাব করা হয়েছে ১১১ কোটি ১৬ লাখ টাকা।

সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) ২৮ একর ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ বাবদ ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার সংস্থান রয়েছে। বর্তমানে এ খাতে অতিরিক্ত ৭৬১ কোটি টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ভূমির পরিমাণ অপরিবর্তিত থাকলেও ব্যয় বৃদ্ধির কারণ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে সভায়।

সূত্র জানায়, ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ৪৭ কিলোমিটার (র‌্যাম্পসহ) দীর্ঘ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সেতু বিভাগ। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা।সুত্র: যুগান্তর


শর্টলিংকঃ