তানোরে এলজিএসপির টাকা হরিলুট


তানোর প্রতিনিধি:

রাজশাহীর তানোরে একাধিক ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে এবং কাজ না করেই এলজিএসপির টাকা উত্তোলন করে হরিলুট করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে করে উন্নয়ন থেকে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী বঞ্চিত হলেও পকেট ভরেছে চেয়ারম্যানদের। ফলে এলজিএসপির প্রকল্পগুলোতে সরেজমিন তদন্তের দাবী উঠেছে। আর তদন্ত করলেই বেরিয়ে পড়বে ভয়াবহ অনিয়ম দুর্নীতি বলে একাধিক ইউপি সদস্যরা নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে গত অর্থ বছরে এলজিএসপির বরাদ্দ আসে ইউনিয়ন পরিষদ গুলোতে। কিন্তু চেয়ারম্যানরা ভুয়া ভুয়া আগের প্রকল্প দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করে পকেট ভারী করেছেন। এবারো তাঁর ব্যতিক্রম হয়নি। লাখ লাখ টাকার বরাদ্দ এসেছে ইউনিয়ন পরিষদ গুলোতে। বরাদ্দের টাকা তুলতে চেয়ারম্যানরা তাদের অনুগত ইউপি সদস্যদের নামে প্রকল্প দিয়ে মিলেমিশে লুটপাট করেন।

গত অর্থ বছরে উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়ন পরিষদে ২০ লাখ ৪৬ হাজার ২৫ টাকা, পাঁচন্দর ইউনিয়ন পরিষদে ২১ লাখ ৩৫ হাজার ২৭০ টাকা, বাঁধাইড় ইউনিয়ন পরিষদে ১৬ লাখ ৭৫ হাজার ৩৪৫ টাকা, চান্দুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদে ১১ লাখ ৯১ হাজার ৪২৭ টাকা, সরনজাই ইউনিয়ন পরিষদে ১০ লাখ ৮০ হাজার ৪৮৭ টাকা ও তালন্দ ইউনিয়ন পরিষদে ১২ লাখ ১৮ হাজার ২৮৮ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয় ।

ইউপি সদস্যরা জানান, এলজিএসপির বরাদ্দের টাকায় কোন কাজ করা হয়না। চেয়ারম্যানরা আগের কাজের প্রকল্প দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করেন। আবার কোন সদস্য এসব নিয়ে কথা বললে কোন প্রকল্প দেয়া হবেনা বলে হুমকিও দেয়া হয়। এলজিএসপির প্রকল্পগুলো নিয়ে সরেজমিন তদন্ত করলেই ধরা পড়বে দুর্নীতি। উপজেলার সাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্ষমতাসীন দলের হবার কারণে এসব দুর্নীতি করে যাচ্ছেন।

অন্যদলের দু একজন ইউপি সদস্য থাকলেও তাদেরকে বরাদ্দ তো দূরে থাক কোথায় কোন প্রকল্প নেয়া হয়েছে সেটাও বুঝতে দেয়া হয়না। তারাও ভয়ে কোন প্রতিবাদ করতে পারেনা। তবে কলমা ইউনিয়ন পরিষদে উপ নির্বাচন হবার কারনে এলজিএসপির ২৪ লাখ ৪২ হাজার ৫১৮ টাকা বরাদ্দ হলেও উত্তোলন করতে পারেনি বলে জানান সচিব। চেয়ারম্যান সচিবের কাছে এলজিএসপি প্রকল্পের তথ্য চাইলে তাঁরা কোন ভাবেই দিতে চাইনা।
তবে এক সচিব জানান, প্রকল্পের কাজের ছবি দেখালেই উত্তোলন করা যায় বরাদ্দের টাকা। আগের প্রকল্প দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করে তসরুপ করা হয়েছে এমন প্রশ্ন করা হলে কোন উত্তর দেন নি তিনি।

পাঁচন্দর ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল মতিন দম্ভক্তি প্রকাশ করে বলেন, বরাদ্দের পুরো টাকার কাজ করা হয়েছে । তদন্ত করতে এলেই প্রকল্পের কাজগুলো ঝকঝক করছে বলে দাবি করেন তিনি।

অথচ তাঁর ইউপির একাধিক সদস্য জানান, এলজিএসপির টাকার কোন কাজ করেনি চেয়ারম্যান । তিনি সহ কয়েকজন ইউপি সদস্য লুটে নিয়েছে।

সরনজাই ইউপির এক সদস্য জানান, প্রকল্পের ব্যাপারে কিছুই বলার নেই । এসব অনিয়ম দেখবে কে । তদন্ত করলেই কাজ কতটুকু হয়েছে তা ধরা পড়বে।

আবার চান্দুড়িয়া ইউপির এক সদস্য জানান,আমরা বরাদ্দের টাকাই উত্তোলন করিনি। কাজ করার পরে উত্তোলন করা হবে। অথচ ওই ইউপির অন্য সদস্যরা জানান আগের প্রকল্প দেখিয়ে টাকা তুলে খাওয়া শেষ।#

 


শর্টলিংকঃ