তানোরে কালোজিরা চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের


তানোর প্রতিনিধি:

ঔষধি গুণসম্পন্ন হওয়ায় বাজারে কালোজিরার বেশ চাহিদা রয়েছে। ফলে এর দাম নিয়ে কৃষককে খুব একটা চিন্তা করতে হয় না। তাছাড়া এটি আবাদে অন্য অনেক ফসলের তুলনায় খরচ ও ঝামেলা কম। যে কারণে দেশের বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে পরিচিত রাজশাহীর তানোরে গত কয়েক বছরে কৃষকদের মধ্যে কৃষিপণ্যটি চাষে আগ্রহ বেড়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আগে বরেন্দ্র এ অঞ্চলে কালোজিরার তেমন চাষ হতো না। তিন-চার বছর ধরে জেলার কৃষকরা ফসলটি আবাদে ঝুঁকছেন। কারণ বছরজুড়েই বাজারে এর ভালো চাহিদা থাকায় কৃষককে লোকসানের সম্মুখীন হতে হয় না। কৃষি বিভাগ থেকেও তাদেরকে নিয়মিত প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ফলে আরো বেশিসংখ্যক কৃষক যেমন কালোজিরা আবাদে যুক্ত হচ্ছেন, তেমনি বাড়ছে আবাদের পরিমাণও।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, আদিকাল থেকে লৌহ, ফসফরাস ও ক্যারোটিন সমৃদ্ধ কালোজিরা বিভিন্ন রোগের মহাঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অগ্রহায়ণ মাসের শেষের দিকে কালোজিরার বীজ বপন করতে হয় এবং তিন মাসের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা যায়। সমতল, বেলে, দোঁআশ মাটিতে কালোজিরা ভাল হয়। চাষ, বীজ, সার ও পানি বাবদ বিঘা প্রতি ৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়, ফলন হয় ৩ থেকে সাড়ে ৩ মণ। বর্তমানে ১ মণ কালোজিরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৯ হাজার টাকায়।

চলতি রবি মৌসুমে উপজেলায় তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের চিমনা গ্রামে পরীক্ষামূলক চাষ করেছেন সফল সবজি চাষী মাস্টার নরুল ইসলাম। সবজি চাষী তিনি বলেন, আমি এর আগে ১৬ শতাংশ জমিতে মসলা জিরা চাষ করেছি। জিরার বীজ এনেছিলাম তানোর বাজার থেকে। কিন্তু কিছু টেকনিক্যাল সমস্যার জন্য ফলন আশানুরূপ হয়নি। তাছাড়া জিরা চাষে নিবিড় পরিচর্চার প্রয়োজন হয়। অপরদিকে কালোজিরা চাষে একটু যত্ন নিয়েই ভাল ফলন পাওয়া সম্ভব।

তিনি বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে চলতি মৌসুমে প্রায় ২০ শতাংশ জমিতে এই কালোজিরার চাষ করেছেন। কম খরচে বেশি লাভের আশায় তিনিই এই ফসলের চাষ শুরু করেন। তিনি আশা করেন একমাসের মধ্যেই কাটা-মাড়াই শেষ করে বাজারে বিক্রি করতে পারবেন দামী এই ফসল।

তিনি আরো বলেন, কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় এই কালোজিরা চাষে সফল হয়েছেন তিনি। নিয়মিত ফসল চাষের একঘেয়েমি থেকে পরিবর্তন আনার জন্যই মূলত তিনি এই ঔষধি মসলা জাতীয় ফসল চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামিমুল ইসলাম জানান, কালোজিরা চাষে তানোরে কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বীজ, সার ও আর্থিক প্রণোদনা দিয়ে সহায়তা করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, কালোজিরার তেল যেমন দামী তেমনি এর ফুলের মধুও খুব সুস্বাদু। কালোজিরা বাণিজ্যিভাবে চাষে আমরা কৃষককে উদ্বুদ্ধ করছি।

 


শর্টলিংকঃ