তানোরে ভূমি অফিসে সেবাপ্রার্থীদের দূর্ভোগ চরমে


তানোর প্রতিনিধি:

প্রায় তিন মাস ধরে এসিল্যান্ড পদ শূন্য থাকায় রাজশাহীর তানোরে ভূমি অফিসে সেবাপ্রার্থীদের দূর্ভোগ এখন চরমে। গোদাগাড়ী উপজেলার সহকারী কমিশনার(এসিল্যান্ড) ইমরানুল হক ভারপ্রাপ্ত হিসাবে সপ্তাহে একদিন(প্রতি মঙ্গলবার) এ পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। ফলে বিপাকে পড়েছেন সেবাপ্রার্থীরা।

এদিকে আজ মঙ্গলবার দুপুরে তানোর ভূমি অফিসে সেবাপ্রার্থীদের উপেক্ষা করে  অফিস ত্যাগ করেছেন এসিল্যান্ড মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় উপস্থিত সেবাপ্রার্থীরা তাকে শত অনুরোধ করলেও কোন কথা না বলেই চলে যান তিনি। এনিয়ে জমি সংক্রান্ত ভূক্তভোগী ব্যাক্তিরা কোন সেবা না পেয়ে বাড়ি ফিরে চলে যান।

সরজমিনে গিয়ে সেবাগ্রহীতা ও অফিসের এক কর্মচারীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ১৩ মে থেকে সহকারী কমিশনার (এসি ল্যান্ড) পদটি শূন্য রয়েছে। জন গুরুত্বপূর্ণ এ পদটি গত কয়েক মাস ধরে শূন্য থাকায় ভূমি অফিসের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকার জনগণকে।

এ উপজেলায় প্রায় ২ লক্ষ মানুষের বসবাস। অবিলম্বে পদটি পূরণের দাবি জানিয়ে আসছেন এ উপজেলার ভূমি মালিকেরা। তথ্যানুসন্ধান উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৯ সালের ১৩মে তৎকালীন এসিল্যান্ড আবদুল্লাহ আল মামুন বদলি হয়ে চলে যান। এরপর থেকে গোদাগাড়ী উপজেলার সহকারী কমিশনার(এসিল্যান্ড) ইমরানুল হক ভারপ্রাপ্ত হিসাবে সপ্তাহে একদিন(প্রতি মঙ্গলবার) এ পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। ফলে উপজেলার জমির নামজারী (খাজনা-খারিজ) এবং জমিজমা সংক্রান্ত কাজে আসা মানুষের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক কার্যক্রম।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এসিল্যান্ড পদ শূন্য থাকায়  বিভিন্ন প্রকার ফাইল আটকে রয়েছে। এ নিয়ে সেবা গ্রহণকারী মুণ্ডুমালা কামিল মাদ্রাসার প্রভাষক ইব্রাহিম বদলপুর গ্রামের আব্দুস সামাদসহ প্রায় শতাধিক ব্যাক্তি জানান,আমরা গত কয়েক মাস ধরে নামজারী(খারিজ) ও জমিজমা সংক্রান্ত কাজে দিনের পর দিন ঘুরছি। এসিল্যান্ড না থাকায় আমার কাজও সম্পন্ন হচ্ছে না।

সপ্তাহের মাথায় এসিল্যান্ডকে একদিন পেয়েছি। এবং এসিল্যান্ডের অফিসের সামনে গরু বিক্রেতার মতো ঘণ্টা পর ঘণ্টা দাড়িয়ে আছি, জমি খারিজ করার আশায়। কিন্তু তিনি জমিদারে মতো অফিসের দরজা বন্ধ করে চেয়ারে বসে। সাত থেকে আটজন ব্যক্তির কথা শুনে গাড়ীতে উঠে চলে গেলেন। শত অনুরোধ করেও কোন কথা না শুনে তিনি আমাদেরকে ধমক দিয়ে খারাপ ব্যবহার অফিস ত্যাগ করলেন ।

এলাকাবাসীর দাবি উপজেলার জনগণের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে অতি দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ উপজেলায় এসিল্যান্ড সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়োগ দিবেন। না প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভূমি কর্মকর্তা বলেন, আজ স্যার অফিসে এসে মাত্র ১১টি খারিজ পাস করেছে। আর ফাইনাল কেস পেন্ডিং রয়েছে ৭শ মতো।

এ বিষয়ে তানোর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার(ভূমি) ইমরানুল হক জানান, অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। সপ্তাহে একদিন আসছি এটাই তানোর বাসীদের বড় পাওয়া। একদিনে যতটা পারা যায় ততটা করার চেষ্টা করছি।

জানতে চাইলে তানোর উপজেলার নির্বাহী অফিসার নাসরীন বানু জানান, সেবাপ্রার্থীদের সাথে খারাপ ব্যবহারের বিষয়ে এসিল্যান্ড সম্পর্কে কোন অভিযোগ ামার কাছে আসে নি। এ ধরনের অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।


শর্টলিংকঃ