- ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ - https://universal24news.com -

তানোর ভূমি অফিসে জমি খারিজ বন্ধ: ৩ হাজার ফাইলের স্তুপ


তানোর প্রতিনিধি:

রাজশাহীর তানোর সহকারী কমিশনার (ভূমি) বদলি হওয়ার পর স্থবির হয়ে পড়েছে ভূমি অফিসের স্বাভাবিক কাজকর্ম। ফলে ৩ হাজারেরও বেশী খারিজ ফাইল বন্দি হয়ে পড়ে আছে। ফলে ভূমি সংক্রান্ত কাজকর্মে মারাত্নক হয়রানি ও বিড়ম্বনাসহ ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও ভুক্তভোগিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৩ জুন তানোর সহকারি কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ-আল-মামুন অন্যত্র বদলি হয়ে যাওয়ার পর তানোর ভুমি অফিসে আর কোন সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে যোগদান করানো হয়নি।

তবে, কর্তৃপক্ষ থেকে তানোর ভূমি অফিসে কাজকর্ম স্বাভাবিক রাখতে রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার এসিল্যান্ড ইমরানুল হককে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেন। তিনি দায়িত্ব নিলেও সপ্তাহে মাত্র ১ দিন অফিসে আসতেন। কিন্তু ঈদুল আযহার ছুটির পর থেকে তিনি আর তানোর ভূমি অফিসে আসেননি। ফলে সাধারন মানুষ খারিজসহ অন্যান্য কাজে এসে দিনের পর দিন হয়রানি হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। সেই সাথে প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন সাধারন মানুষ।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের কৃষক মাহাম্মাদ আলী তার জমি খারিজ বা নামজারির জন্য দেড় মাস ধরে অফিসে ঘুরছেন। টেবিলে টেবিলে উৎকোচ দিয়ে কয়েকদিন আগে কেস নাম্বার পেয়েছেন। গত আগস্ট মাসের ২৭ তারিখ তার জমি খারিজ হবার ফাইনাল ডেট ছিল। কিন্তু এসিল্যান্ড না থাকার কারণে খারিজ হয়নি। দেড়মাস ধরে ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন তিনি। কবে নাগাদ তার জমি খারিজ হবে তাও বলতে পারছেন না অফিসের কেউ বলে আক্ষেপ করেন মাহাম্মাদ আলী।

বাধাইড় ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান হেনা জানান, তার জমি খারিজ করার জন্য ভূমি অফিসে দিনের পর দিন এসে ফিরে যাচ্ছেন, সহকারী ভূমি না থাকায় কোন কাজ হচ্ছেনা জানিয়ে আক্ষেপ করেন তিনি। শুধু কামরুজ্জামান বা মাহাম্মদ নয়, তার মতো অনেক কৃষক জমি খারিজের জন্য মাসের পর মাস অফিসে ধর্ণা দিয়ে ঘুরছেন। কিন্তু জমি খারিজ করতে পারছেন না।

বর্তমানে অফিসের জমা সহকারি জিয়াউল হক খারিজ ফাইল জমাও নিচ্ছেন না। তবে, তানোরে এসিল্যান্ড নিয়োগ করা হলে এই সমস্যা কিছুটা লাঘব হতে পারে বলে দাবি করেন এই কর্মচারি।

তানোর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি তাছির উদ্দিন ও সাধারন সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, কৃষি প্রধান এলাকা তানোরের মানুষ বিয়ে-স্বাদীসহ চিকিৎসা এবং বড় ধরনের বিপদে আপদে জমি বিক্রি করে তাদের প্রয়োজন মিটিয়ে থাকেন, কিন্তু জমি বিক্রি করতে না পেরে অনেকেই দ্বাদনে টাকা নিয়ে প্রয়োজন মিটাচ্ছেন। তারা বলেন, এসিল্যান্ড না থাকায় ভূমি সংক্রান্ত কাজকর্ম একদিকে যেমন স্থবির হয়ে পড়েছে অন্যদিকে জনসাধারন জমি খারিজ করতে না পারায় বিক্রি করতে পারছেন না।

তারা মন্তব্য করে বলেন, দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখন ভূমি অফিসের কর্মকর্তার অভাবে সাধারন জমি বেচা-কেনা করতে না পারায় পিছিয়ে যাচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভূমি অফিসের এক কর্মচারি জানান, এসিল্যান্ড সার বদলির পর শুধু খারিজ ফাইলই বন্দি হয়ে পড়ে আছে প্রায় ৩হাজার। এরমধ্যে আনলাইন আবেদন দুই শতাধিক। পূর্বের পেনডিং ফাইল তো রয়েয়েই। দিনের পর দিন সাধারন মানুষ এসে ঘুরে যাচ্ছেন, এঅবস্থায় এসিল্যন্ড নিয়োগ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

এব্যাপারে মোবাইল ফোনে এসিল্যান্ড ইমরানুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি মিটিং-এ আছি বলে মোবাইল সংযোগ বিছিন্ন করেন। পরে একাধিকবার ফোন করেও রিসিভ করেননি তিনি।