Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

তাপমাত্রা নির্ধারণ: আবহাওয়া দপ্তর ও গুগলের তথ্যে বিভ্রান্তি


নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঘূর্ণিঝড় ফণী’র প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাতে উত্তরাঞ্চলে গেল সপ্তাহে স্বাভাবিক তাপমাত্রা বিরাজ করছিল। ফলে জনজীবনে কিছুটা প্রশান্তি নেমে আসে। তবে গত তিনদিন এ অঞ্চলে ফের দাবদাহ শুরু হয়েছে। তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। কখনও কখনও তা বেড়ে যাচ্ছে।

তীব্র দাবদাহে প্রশান্তির আশায় গাছের ছায়ায় ঘুমাচ্ছেন এক ব্যক্তি। ছবি: আবু সায়েম শান্ত

নগরীর রাস্তায় বের হলে অনুভব করা যাচ্ছে, প্রকৃতির রুদ্রমূর্তি রূপ!পবিত্র রমজান মাসের শুরুতে এমন দাবদাহে রোজাদারদের কষ্ট বেড়ে গেছে। রাজশাহী অঞ্চলের নাটোর, পাবনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলাতেও একই অবস্থা বিরাজমান।

রাজশাহী আবহাওয়া অধিদফতরের উচ্চ পর্যবেক্ষক শহিদুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার (০৯ মে) বিকেল ৩টায় রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টিপাত না হলে আর সপ্তাহখানেক ধরে এমন তাপমাত্রা বিরাজ করতে পারে।

রোজা রেখেও অনেক শ্রমিক এই গরমে কাজ করছেন। ছবি: আবু সায়েম শান্ত

এদিকে, আবহাওয়া অফিস সূত্র তাপমাত্রা ৩৯.৫ ডিগ্রি রেকর্ড করার তথ্য জানালেও সাধারণ মানুষ বলছে- আরও বেশি হওয়ার কথা। তারা বলছে- দাহদাহের যে মাত্রা অনুভূত হচ্ছে, তা আবহাওয়া অফিসের রেকর্ডকৃত তাপমাত্রার চেয়ে বেশি ধারণা করা হচ্ছে।

গুগলের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহীতে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হলেও অনুভূত হচ্ছে ৪৬ ডিগ্রির।

রমজানের তাপদাহেও থেমে নেই তাদের রোজকার কাজ। ছবি: আবু সায়েম শান্ত

দাবদাহের কারণে রাজশাহীর হাসপাতালে বাড়ছে ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যা। বৃহস্পতিবার দুপুরে রামেক সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৫৩ জন ডায়রিয়ার রোগী ভর্তি হয়েছে। এছাড়া গত দুই দিনে প্রায় ৯০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন।

এদিকে, রমজানে এমন দাবদাহে খেটে খাওয়া মানুষের জন্য সীমাহীন কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (০৯ মে) দুপুরে নগরীর কাজীহাটা এলাকায় দেখা যায ভবন নির্মাণের কাজ করছেন শ্রমিকরা। এগিয়ে গিয়ে কথা বলে জানা যায়, তাদের মধ্যে ৪ জন রোজা রেখে কাজ করছেন।

এদেরই একজন পবা উপজেলার রাকিবুল ইসলাম। গায়ে টি-শার্ট এবং পরনের ট্রাউজার ভিজে পানি ঝরছে তার। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছেন। তবুও কাজ করতে হবে তাকে।

জানতে চাইলে শ্রমিক রাকিবুল বলেন, রমজান মাসে রোজা রেখে রাজমিস্ত্রির (নির্মাণ শ্রমিক) কাজ করা খুব কষ্টের। তার উপর যে গরম। রোজা রাখছি বলে তো আর কাজ না করে বসে থাকলে তো চলবে না। রোজায় খরচ বেশি। সামনে ঈদ আসছে। কাজ না করলে সংসার চলবে কীভাবে!

তীব্র গরমে ফুটপাতে গাছের নিচে ব্যানার বিছিয়ে শুয়ে পড়েছেন এক ব্যক্তি। ছবি: আবু সায়েম শান্ত

রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মাহাবুবুর রহমান খান বলেন, পানিবাহিত  রোগে আক্রান্ত রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তাপপ্রবাহ বেশি হওয়ার কারণে এটা হচ্ছে। রমজানে সুস্থ থাকতে হলে রোজাদারদের ভাজা-পোড়া জিনিস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ইফতারে বাড়িতে বানানো লেবুর শরবত ও ফল খেতে হবে। সেহরিতে শাক-সবজি বেশি খেতে হবে।


Exit mobile version