Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

তামিমের সেঞ্চুরির পরও দিনটা টাইগারদের নয়


ক্রীড়া ডেস্ক :

তামিম করেছেন ১২৬ রান, বাকি সবাই মিলে ১০৮। তামিমের সেঞ্চুরির পরও স্কোরটা তাই হৃষ্টপুষ্ট হয়নি, হ্যামিল্টন টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ অলআউট ২৩৪ রানে। প্রথম দিনে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৮৬ রান তুলেছে নিউজিল্যান্ড।

সেঞ্চুরি পর তামিম। ছবি: বিসিবি

শর্ট বলে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের দুর্বলতা নিউজিল্যান্ডের বোলারদের ভালোই জানা। প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দিতে নতুন কিছু করতে হয়নি তাঁদের। ধারাবাহিকভাবে শুধু দুর্বল জায়গায় আঘাত হেনেছেন। আর তাতেই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের যা হওয়ার হয়ে গেছে!

নিউজিল্যান্ডের ফাস্ট বোলারদের যা একটু জবাব তামিম ইকবালই দিয়েছেন। বাংলাদেশ ওপেনারের সেঞ্চুরির পরও হ্যামিল্টনের রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে মাহমুদউল্লাহদের মাঠ ছাড়তে হয়েছে মুখটা মেঘকালো করে।

মাহমুদউল্লাহদের মুখে হাসি থাকবে কী করে? বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে অলআউট ২৩৪ রানে। নিউজিল্যান্ড সেখানে দিন শেষ করেছে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৮৬ রান তুলে । জিত রাভাল অপরাজিত ৫১ আর টম লাথাম উইকেটে আছেন ৩৫ রান করে।

সাবলীল তামিম ইকবাল।ছবি: বিসিবি

অথচ কিউইদের ওপেনিং জুটি ভাঙতে পারত স্কোরবোর্ডে কোনো রান না যোগ হতেই, ইবাদত হোসেনের বলে স্লিপে টম লাথামের ক্যাচটা যদি সৌম্য সরকার না ফেলতেন।

কঠিন কন্ডিশন বলতে যা বোঝায়, হ্যামিল্টন টেস্টের প্রথম দিনে তা আর দেখা গেল কোথায়? উইকেটে একটু ঘাসের দেখা মিলল, কিন্তু সেটি কিছুতেই ব্যাটসম্যানদের ‘মাইন ফিল্ড’ নয়। শোঁ শোঁ বাতাসও নেই, যেটি কাজে লাগিয়ে কিউই পেসাররা সুইংয়ে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের দিশেহারা করে ফেলবেন।

বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরাই বরং তুলনামূলক সহজ কন্ডিশনকে কঠিন করে ফেলেছেন। শর্ট বলে উপহার দিয়ে এসেছেন নিজেদের উইকেট। মুমিমুল হক (১২), মোহাম্মদ মিঠুন (৮), সৌম্য সরকার (১), মাহমুদউল্লাহ (২২), মেহেদী হাসান মিরাজ (১০), আবু জায়েদ (২), লিটন দাস (২৯)—সবার পরিণতি এক। সবাই শর্ট বলে কাবু।

তামিমকে ফেরানোর পর কিউইদের উল্লাস

এই সূত্র মেনে প্রতিপক্ষকে ধসিয়ে দেওয়া যাবে, এটা যদি নিউজিল্যান্ড বুঝতে পারে, এত দিনেও বাংলাদেশ কেন সেটির জবাব দেওয়ার উপায় খুঁজে পেল না—সে এক প্রশ্ন! আর শর্ট বলে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার ধসিয়ে দেওয়ার কাজটা যিনি সবচেয়ে ভালো করেছেন—নিল ওয়াগনার, পেয়েছেন ৪৭ রানে ৫ উইকেট।

বিবর্ণ বাংলাদেশ ইনিংসের উজ্জ্বল দিক বলতে তামিমের সেঞ্চুরি। ২১ চার আর ১ ছয়ে ৯৮.৪৩ স্ট্রাইকরেটে ১২৮ বলে ১২৬ রান দেখে মনে হবে, হ্যামিল্টনের স্নিগ্ধ আবহাওয়ায় বুঝি ঝড় তুলেছেন বাংলাদেশ ওপেনার! পরিসংখ্যান যে অনেক সময় সঠিক চিত্র তুলে ধরে না, এটি আরেকটা উদাহরণ।

শুরু থেকে তামিম আগ্রাসীই ছিলেন। তবে আগ্রাসী শব্দটার মধ্যে যে বুনো খ্যাপামি আছে, তা একেবারেই ছিল না। ৩৭ বলে ফিফটি করেছেন, ১০০ বলে সেঞ্চুরি। বলে বলে রান তুলেছেন ঠিকই, তবে তামিমের ব্যাটিংয়ে ছিল মুগ্ধ করা পেলব কমনীয়তা।

বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের একটি মূহুর্ত

শুধু বাংলাদেশের ইনিংসে কেন, হ্যামিল্টন টেস্টের প্রথম দিনে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাই তো বাঁহাতি ওপেনারের সেঞ্চুরি। নিউজিল্যান্ড ইনিংসের ফাঁকেও তাই দেখানো হচ্ছিল তামিমের ইনিংসের হাইলাইটস।

ইনিংসটা দেখানোর ফাঁকে বার কয়েক ক্যামেরায় দেখাল তামিমের মুখ। এমন একটা ইনিংস খেলার পর মুখ যতটা হাসিখুশি থাকার কথা, সেটি আর দেখা গেল কোথায়! তিনি একা করেছেন ১২৬, বাকিরা সবাই মিলে ১০৮।

দলের ৫৩ শতাংশ রানের জোগানদাতা তামিম। সঙ্গে যদি আরেকজন ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি না হোক, অন্তত ৭০-৮০ রানের ইনিংসও খেলতেন, বাংলাদেশের স্কোর এমন হতদরিদ্র দেখাত না!


Exit mobile version